মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১৭ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
আমাকে ও আমার মেয়েদের কুপ্রস্তাব দেয় রাজ্জাক। কালের খবর কল্যাণমুখী রাষ্ট্র গড়তে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কাজ করে যাচ্ছে। কালের খবর ঈশ্বরগঞ্জে কালভার নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ। কালের খবর চ্যালেঞ্জের মুখে দেশের অর্থনীতি। কালের খবর জুলাই-আগষ্টে শহীদদের ছাড়া আর কারো প্রতি দায়বদ্ধতা নেই। কালের খবর পার্বত্য চট্টগ্রামের সম্ভাবনাময় অর্থকরী ফসল কাসাভা। কালের খবর চবি এক্স স্টুডেন্টস ক্লাব ঢাকা এর সভাপতি ব্যারিস্টার ফারুকী এবং সাধারণ সম্পাদক জিএম ফারুক স্বপন নির্বাচিত। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল সম্পন্ন। কালের খবর সীতাকুণ্ড হবে বাংলাদেশের অন্যতম মডেল উপজেলা : আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরী। কালের খবর মাটিরাঙ্গার গুমতিতে মহান বিজয় দিবসে বিএনপির শোভাযাত্রা ও পুষ্পস্তবক অর্পণ। কালের খবর
আ.লীগ চায় আসন ধরে রাখতে,বিএনপি-জাপা পুনরুদ্ধারে মরিয়া। কালের খবর

আ.লীগ চায় আসন ধরে রাখতে,বিএনপি-জাপা পুনরুদ্ধারে মরিয়া। কালের খবর

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের খবর :

সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিগত সংসদ নির্বাচনগুলোতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি তিন দলের প্রার্থীই পর্যায়ক্রমে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এ আসনটি ধরে রাখতে এবং বিএনপি ও জাতীয় পার্টি আসনটি পুনরুদ্ধারে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এ আসনে ৬ জন হেভিওয়েট প্রার্থী থাকায় নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা জমে উঠেছে।

বর্তমান এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলহাজ ছানোয়ার হোসেন আবারো মনোনয়ন পেতে মাঠে কাজ করছেন। তিনি বন্যার্তদের পাশে ছিলেন দুর্যোগ সময়ে। সাধারণ মানুষের যে কোনো ডাকে এখনো পাশে দাঁড়াতে দেখা যায় তাকে। ইনডেক্স গ্রæপের সিইও শফিউল্লাহ আল মুনির স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ব্যাপক আলোচনায় এসেছেন। এদিকে বসে নেই বিএনপির দুই মনোয়ন প্রত্যাশী সাবেক সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান ও যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ সিদ্দিকী।

এ আসনে ১৯৭৩ ও ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের প্রয়াত আব্দুল মান্নান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে বিএনপির টিকেটে আব্দুর রহমান নির্বাচিত হন।
১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির মীর মাজেদুর রহমান, ১৯৮৮ ও ১৯৯১ সালে মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান নির্বাচিত হন। পরে মাহমুদুল হাসান জাতীয় পার্টি থেকে বিএনপিতে যোগদান করে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রæয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনে ও ২০০১ সালে বিএনপির টিকেটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ আবুল কাশেম মহাজোটের মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তী সময়ে তিনি মামলায় হেরে গেলে সংসদ সদস্য পদ হারান এবং উচ্চ আদালত এ আসনে মাহমুদুল হাসানকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। এ নিয়ে তিনি সদর আসনে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে এ আসনে মহাজোটের পক্ষ থেকে জাতীয় পার্টির এডভোকেট আব্দুস সালাম চাকলাদারকে মনোনয়ন দেয়া হলেও দলীয় প্রধান এরশাদের অনুরোধে তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। পরে এ আসনে মনোনয়ন দেয়া হয় আওয়ামী লীগের আলহাজ ছানোয়ার হোসেনকে। তিনি নির্বাচনে বিজয়ী হন। ছানোয়ার হোসেন এবারো এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন। এ ছাড়া পৌর মেয়র জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জামিলুর রহমান মিরন, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খোরশেদ আলম, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিহত আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমদের স্ত্রী নাহার আহমেদ মনোনয়ন চাইবেন।
এদিকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে দলের ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান মনোনয়ন চাইবেন। এ আসনে মনোনয়ন চাইবেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুও। এ ছাড়া জেলা শাখার সহসভাপতি ছাইদুল হক ছাদুও মনোনয়ন চাইবেন।
জাতীয় পার্টির মনোনয়ন চেয়ে গণসংযোগ করছেন প্রেসিডিয়াম সদস্য, জেলা সভাপতি আবুল কাশেম, জেলা শাখার সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম চাকলাদার, পার্টির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক। এ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেলেই মহাজোটের মনোনয়ন নিশ্চিত। আর মনোনয়ন পেলেই বিজয় নিশ্চিত হওয়ায় জাতীয় পার্টির তিন প্রার্থীই মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছেন।
আওয়ামী লীগের তৃণমূলের কর্মী হিসেবে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে প্রথমবারের মতো মো. ছানোয়ার হোসেন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নির্বাচনের পর এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন ও তৃণমূল পর্যায়ে সব সময় যোগাযোগ অব্যাহত রাখায় জনগণের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এলাকায় সজ্জন ব্যক্তি হিসেবেও তার পরিচিতি আছে। অধিকাংশ সময় এলাকায় অবস্থান করায় সাধারণ জনগণ সহজেই তাকে কাছে পান।
মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার ব্যক্তি ইমেজ ও সরকার দেশের সর্বত্র ব্যাপক উন্নয়নের কারণে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার ইমেজেই আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করবে। আমি সব সময় সব অবস্থায় জনগণের পাশে থাকি। জনগণের মাঝে আগের চেয়ে আমার দল এবং আমার ব্যক্তিগত ইমেজ অনেক বেড়েছে। ২০১৪ সালে দল আমার ওপর আস্থা রেখে আমাকে মনোয়ন দিয়েছিল। আমি বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছিলাম। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনেও আমার ওপর আস্থা রেখে আমাকে মনোনয়ন দেবেন বলে আশা রাখি।
মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদল হাসান দীর্ঘদিন মন্ত্রী ও এমপি থাকায় টাঙ্গাইল সদরের রাস্তাঘাট, ব্রিজ কালভার্ট, টাঙ্গাইলে গ্যাস লাইন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে তার হাত দিয়েই। তাই এ আসনে তার ব্যক্তিগত ইমেজ ও দৃঢ় অবস্থান রয়েছে।
কেন্দ্রীয় জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু গণসংযোগ শুরু করে যুব ও ছাত্রসমাজের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছেন। সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, টাঙ্গাইল শহরে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ালেখা করেছি। এখান থেকেই আমার ছাত্র রাজনীতির হাতে খড়ি। পরবর্তী সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে সুযোগ পাই। আমার ওপর দলীয় চেয়ারপারসনের আস্থা আছে বলেই ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছিলেন। বর্তমানে যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছেন। এ সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে আমি একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছি।
আবুল কাশেম বলেন, ১৯৯১ সালে জাতীয় পার্টির টিকেটে এমপি নির্বাচিত হয়ে মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান বিএনপিতে যোগদান করার পর তিনি এ আসনে জাতীয় পার্টির হাল ধরেন এবং ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে জাতীয় পার্টির টিকেটে নির্বাচন করেন। পরে ২০০৮ সালে আবারো জাতীয় পার্টির টিকেট পেয়ে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে এক লাখ ৫২ হাজার ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকার মানুষের জীবনমান উন্নয়নে রাস্তাঘাট এবং ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ করেছেন। সততার সঙ্গে টিআর ও কাবিখার সদ্ব্যবহার করেছেন।
টাঙ্গাইলের সিদ্দিকী পরিবারের সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী ও কাদের সিদ্দিকীর ছোট ভাই মুরাদ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল সদর আসনে শক্ত প্রতিদ্ব›দ্বী। তিনি ২০০১ ও ২০০৮ সালে গামছা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করলেও ২০১৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন। এবারো তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ব্যাপক গণসংযোগ শুরু করেছেন। মুরাদ সিদ্দিকী বলেন, তার গণসংযোগে জনগণের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ দেখা গেছে। তিনি নির্বাচিত হলে মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসন গঠন করবেন।
ইনডেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা, প্রধান নির্বাহী শফিউল্লাহ আল মুনির চরাঞ্চলের মানুষের কাছে প্রিয় ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে এসে ব্যাপক আলোচনায় এসেছেন। এ ছাড়া বন্যাদুর্গতদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী ও নগদ অর্থ বিতরণ করে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন। তিনি মসজিদ, মন্দির, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানেও দান-অনুদান দেয়ার মাধ্যমে নিজস্ব একটি বলয় তৈরি করে নিয়েছেন। গত অক্টোবরে দুর্গা পূজায় তিনি ভারতীয় হাইকমিশনের দুজন ক‚টনীতিককে সঙ্গে নিয়ে সদর উপজেলার প্রত্যেকটি পূজামÐপে আর্থিক সহায়তা দেন।
শফিউল্লা আল মুনির বলেন, আমার প্রয়াত বাবার নির্দেশ অনুসারে আমি আমার ব্যবসার লভ্যাংশের একটি অংশ জনকল্যাণে ব্যয় করি। বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আর্থিক সহায়তা করায় এলাকার লোকজন, জনপ্রতিনিধিরা আমাকে সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ করেছেন। তাদের অনুরোধে এবং মানুষের জন্য আরো বেশি কাজ করার ইচ্ছা থেকেই আমি নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com