বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন
এম আই ফারুক, কালের খবর : রাজধানীতে নিরাপদ সড়কের দাবি জোরদার হওয়ার সাথে সাথে বিভিন্ন প্রকার যানবাহনের কাগজপত্র ঠিক করার হিড়িক পড়েছে। গাড়ির ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন এবং নতুন লাইসেন্স নেওয়ার প্রবণতাও বেড়েছে। এর ফলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএ’র রাজস্ব আদায় বেড়ে গেছে। কর্মকর্তারা বলছেন, কাগজপত্র ঠিক করার যে চাপ তা আরো কয়েক মাস অব্যাহত থাকবে। এতে বিআরটিএ’র রাজস্ব দ্বিগুণ হয়ে যাবে। সংস্থার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা ও মেয়াদ বৃদ্ধির জন্যই বিআরটিএ-তে গ্রাহকদের সংখ্যা আগের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে।
লাইসেন্স নবায়ন, নতুন লাইসেন্স গ্রহণ, ডিজিটাল নম্বর প্লেট গ্রহণ, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, মালিকানা পরিবর্তন ও নতুন লাইসেন্সের আবেদনের সংখ্যা বাড়ছে। আগে প্রতিদিন গড়ে আট’শ গাড়ির ফিটনেস নবায়ন করা হতো। আন্দোলনের পরে তা ১৪’শতে গিয়ে ঠেকেছে। শিক্ষানবিশ লাইসেন্সের জন্য আগে প্রতিদিন গড়ে ৪’শ আবেদন জমা পড়তো। এখন তা হাজার ছাড়িয়েছে। এছাড়া সংস্থার অন্যান্য সেবার পরিমাণও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ওই কর্মকর্তা আরো জানান, গত অর্থবছরে বিআরটিএ বিভিন্ন খাত থেকে ১ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। এবার তা আড়াই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান কালের খবরকে বলেন, গাড়ির কাগজপত্র ঠিক রাখার ব্যাপারে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। কিভাবে জনগণকে আরো উন্নত প্রক্রিয়ায় সেবা দেওয়া যায় সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। জনগণের সহায়তা পেলে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা খুব দূরহ কাজ নয়। তিনি বলেন, এই লক্ষ্যে বিআরটিএ নানা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) অফিসে ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি ও ফিটনেস সনদ আবেদনের চাপ বেড়েছে। তবে লাইসেন্স প্রত্যাশীদের কিছুটা বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। সকালে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে, ভিড় ঠেলে অনেকেই একদিনে কাজ শেষ করতে পারছেন না। কড়া রোদের মধ্যেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন চালকরা। এই সুযোগে কিছু দালাল সকালে এসে লাইনে দাঁড়ান। পরে বিআরটিএতে লাইসেন্সের জন্য আসা গ্রাহকেদের কাছে সেই লাইন হস্তান্তর করার বিনিময়ে টাকা নেন। ভোগান্তি এড়াতে অনেকে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকায় লাইন কিনেন।
শ্যামলী থেকে গাড়ির লাইসেন্স নবায়ন করতে আসা আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘লাইসেন্স নবায়ন করতে সকাল ১০টায় এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। এখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল, এখনও ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে রশিদ নিতে পারিনি।’ একই লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মোটরবাইক চালক হাসিবুর রহমান বলেন, ‘বাইক কিনেছি তিন মাস হলো। এতদিন ভালোই চলছিল। বর্তমানে ট্রাফিক আইন কড়াকড়ি হওয়ায় ঝামেলা এড়াতে লাইসেন্স করতে এসেছি।’
সংস্থাটির পরিদর্শক (ফিটনেস) মো. রুহুল আমিন জানান, গাড়ির চাকার এলাইনমেন্ট, ব্রেক, ইঞ্জিন, কালার, বাম্পার, শেড ইত্যাদি দেখা হচ্ছে। দিনে শ’খানেক গাড়ির ফিটনেস দেখতে পারছেন তারা। যেসব গাড়ির ফিটনেস নাই, সেগুলো ফেরত দেওয়া হচ্ছে।