বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:০২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
রাজনীতিতে রাষ্ট্রপতি জিয়ার সততা ও দেশপ্রেম এক অনন্য দৃষ্টান্ত। কালের খবর শ্রীবরদী উপজেলা শ্রমিক দল উদ্যোগে সাবেক এমপি ডাঃসেরাজুল হকের ৩০ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত । কালের খবর রায়পুরায় গৃহবধূকে যৌতুকের টাকার দাবিতে মারধর ও শ্বাসরুদ্ধে হত্যা। কালের খবর মাটিরাঙায় বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে জখম। কালের খবর ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১০০ শয্যায় উন্নতি হলেও সেবা মিলছে ৫০ শয্যার। কালের খবর জামি’আ রশিদিয়া মাদ্রাসার উদ্যোগে সুবর্ণ গ্রামে শিক্ষা সফরে শিক্ষার্থীরা। কালের খবর বছরে অবৈধ সংযোগে ‘১৮০০ কোটি’ টাকার তিতাস গ্যাস চুরি। কালের খবর ২রা নভেম্বর’২৪ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন অর্থনীতি ছাত্র সমিতি (কুয়েসা) এর নির্বাচন। কালের খবর ঢাকা-৫ আসন এলাকায় মাদক, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, জুলুমবাজ, দখলবাজদের স্থান নেই : নবীউল্লাহ নবী। কালের খবর খাগড়াছড়িতে যুবদলের উদ্যোগে ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত। কালের খবর
দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে মৃৎশিল্পের চাহিদা

দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে মৃৎশিল্পের চাহিদা

মো: শহিদুল ইসলাম:বয়স্ক দুই মৃৎশিল্পী সুচিন্দ্র পাল (৭৫) ও স্বদেশ পাল (৬৫) জানান, বর্তমানে এই শিল্প এবং শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা মানুষগুলোর অবস্থা করুণ। বাজারে মাটির পণ্যের বিকল্প হিসেবে প্লাস্টিক সামগ্রীর আধিপত্য চলছে। ওইগুলো দামে সস্তা আর দেখতে চকচকে হওয়ায় ক্রেতারা ছুটছেন সেদিকে।  মাটিসহ মৃৎশিল্পের আনুষঙ্গিক কাঁচামালের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় তাঁদের তৈরি সামগ্রীর উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। দাম বেশি হওয়ায় দিন দিন বাজার হারাচ্ছেন তাঁরা। ফলে অনেকেইে এই পেশা ছেঁড়ে ভিন্ন পেশায় চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে।

মধ্যবয়সী নারী নীলু রানী পাল (৫৫) স্মৃতিচারণ করে জানান, ১৪ বছর বয়সে তিনি পালপাড়ায় বউ হিসেবে আসেন। তখন এই পালপাড়া ছিল কর্মমুখর এক গ্রাম। দিনরাত চলত হরেক কাজের যজ্ঞ। নিত্যপ্রয়োজনীয় সব আসবাব তৈরি হতো। দূর-দূরান্তের পাইকাররা বাড়ি বাড়ি এসে সেইসব মাটির জিনিস কিনে নিত। তখন তাদের সংসারে সচ্ছলতা ছিল। সুখী ছিল পুরো গ্রামের মানুষ। ‘আজ সেইসব শুধুই গল্প’, দীর্ঘশ্বাসে জানালেন তিনি।
পাড়ার সুখেন পাল (৫০), সুনীল পাল (৪৫) ও মমতা রানী পাল (৪০) জানান, কালের আবর্তে প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন কৃত্রিম আঁশের তৈরি সামগ্রীর কারণে দিন দিন তাঁদের তৈরি মৃৎশিল্পের চাহিদা কমে যাচ্ছে। বাজার চাহিদা ভালো না থকায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পকর্মটি প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। ক্রেতা চাহিদা কমে যাওয়ায় তাঁরাও আর আগের মতো এই শিল্পের পণ্য তৈরি করেন না। শুধু চৈত্র-বৈশাখ মাসে দেশের বিভিন্ন এলাকায় মেলা-বান্নিতে বিক্রির জন্য কিছু খেলনা সামগ্রী তৈরি করেন। তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, একদিন হয়তো পুরো পাড়ায়ও আর এই কর্ম কেউ করবেন না।

প্লাস্টিক সামগ্রী নিষিদ্ধ এবং সরকারের আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতায় পরিবেশবান্ধব ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পটিকে আবারও জাগিয়ে তোলা সম্ভব বলে অভিমত ব্যক্ত করে হারাধন পাল (৪০) ও রতন পাল (৩০) জানান, তাঁদের বাপদাদাদের এই পেশাটিকে তাঁরাও আগলে রাখতে চান।
গ্রামের বৃদ্ধ মৃৎশিল্পী পরিমল কুমার পাল (৮০) অভিযোগ করে বলেন, বছরের নির্দিষ্ট দু-একটি দিন সাংবাদিকরা ছুটে আসেন পালপাড়ায়। ছবি তোলেন, ভিডিও করেন, নেন বক্তব্যও। সেইসব সংবাদ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারও হয়। কিন্তু তাঁরা যেমনটি আছেন, তেমনটিই থাকেন। তাঁদের ভাগ্য উন্নয়নে সহায়তার হাত বাড়িয়ে কেউ আর আসেন না।
স্থানীয় যুবক খুর্শিদ আলম ও এস আলম জানান, একসময় তাঁদের এলাকার এই পালপাড়া বেশ জমজমাট ছিল। সারা বছরই ব্যস্ত থাকত এখানকার কারিগররা। কিন্তু এখন আর সেই অবস্থা নেই। প্রয়োজনীয় কোনো দ্রব্য চাইলে সেটা এখন আর পাওয়া যায় না তাঁদের কাছে। তাঁদের দাবি, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এই শিল্পটি আবারও চাঙ্গা হলে পাল সম্প্রদায়ের উন্নতির পাশাপাশি দেশের ঐতিহ্যও রক্ষা হবে।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com