মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:২২ পূর্বাহ্ন
নাইমুল ইসলাম,গোপালগঞ্জ থেকে, কালের খবর :
স্বাধীনতা যুদ্ধের ৪৭ বছর পর গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে কোটালীপাড়া উপজেলার জহরেরকান্দি গ্রামের পূর্ব কোটালীপাড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি মুক্তিযোদ্ধা কাজী রোজী ফিতা কেটে ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর নিজ নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধি ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ।
পূর্ব কোটালীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বনোজ কান্তি মজুমদারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা চৌধুরী এমদাদুল হক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এম হুমায়ুন কবির, মুক্তিযোদ্ধা আশালতা বৈদ্য, জেলা পরিষদ সদস্য মাজাহারুল হক পান্না, ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোক্তা দেবদুলাল বসু পল্টু প্রমুখ।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে হেমায়েত উদ্দিন বীর বিক্রম হেমায়েত বাহিনী গঠন করে জহরের কান্দি গ্রামের পূর্ব কোটালীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প গড়ে তোলেন। গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, বরিশাল জেলার নারী মুক্তিযোদ্ধারা এ ক্যাম্প থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। হেমায়েত উদ্দিনের নেতৃত্বে কোটালীপাড়া উপজেলার রামশীল ইউনিয়নের রাজাপুর, রামশীল, জহরেরকান্দিসহ গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও বরিশাল এলাকায় পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়। এসব যুদ্ধে হেমায়েত বাহিনীর ২৮ মুক্তিযোদ্ধা শাহাদৎ বরণ করেন।
হেমায়েত উদ্দিনসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধা আঘাতপ্রাপ্ত হন। স্বাধীনতার পর পূর্ব কোটালীপাড়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাঁথার স্মৃতি তুলে ধরতে কোনো স্মৃতি ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়নি। গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য দেবদুলাল বসু পল্টুর অর্থায়নে জহরেরকান্দি স্কুলে একটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়।
উদ্যোক্তা দেবদুলাল বসু পল্টু বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশ হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী উন্নত, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। তাই জহরেরকান্দি গ্রামের সেই মুক্তিযুদ্ধের অমর অজেয় স্মৃতি ধরে রাখতেই ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেছি। এটি পূর্ব কোটালীপাড়ার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের গৌরবজ্জ্বল অধ্যায়। ‘
অনুষ্ঠানের উদ্বোধক মুক্তিযোদ্ধা কবি কাজী রোজী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নিজ নির্বাচনী এলাকায় মুক্তিযুদ্ধের ৪৭ বছর পর মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য উদ্বোধন করতে পেরে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি গর্বিত। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্নগুলি সংরক্ষণের জন্য দেবদুলাল বসু পল্টুর মতো সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে পারব। ‘
কালের খবর /২৩/২/১৮