রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪২ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
জুলাই-আগষ্টে শহীদদের ছাড়া আর কারো প্রতি দায়বদ্ধতা নেই। কালের খবর পার্বত্য চট্টগ্রামের সম্ভাবনাময় অর্থকরী ফসল কাসাভা। কালের খবর চবি এক্স স্টুডেন্টস ক্লাব ঢাকা এর সভাপতি ব্যারিস্টার ফারুকী এবং সাধারণ সম্পাদক জিএম ফারুক স্বপন নির্বাচিত। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল সম্পন্ন। কালের খবর সীতাকুণ্ড হবে বাংলাদেশের অন্যতম মডেল উপজেলা : আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরী। কালের খবর মাটিরাঙ্গার গুমতিতে মহান বিজয় দিবসে বিএনপির শোভাযাত্রা ও পুষ্পস্তবক অর্পণ। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় মহান বিজয় দিবসে বিএনপির শোভাযাত্রা ও পুষ্পস্তবক অর্পণ। কালের খবর মুরাদনগরে সামাজিক সংগঠনের শীতের কম্বল বিতরণ। কালের খবর বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে ‘স্বাধীনতা সোপানে’ শ্রদ্ধা নিবেদন। কালের খবর জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার প্রধান কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন। কালের খবর
ইউক্যালিপটাসের আগ্রাসনে হারিয়ে যাচ্ছে অতি উপকারি শিমুল গাছ’। কালের খবর

ইউক্যালিপটাসের আগ্রাসনে হারিয়ে যাচ্ছে অতি উপকারি শিমুল গাছ’। কালের খবর

 

মোঃ মুন্না হুসাইন তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি, কালের খবর : সিরাজগঞ্জের তাড়াশে সৌন্দর্য ছড়ানো শিমুল গাছ হারিয়ে যাচ্ছে। অথচ আগে বেশিরভাগ বাড়িতে এ গাছের দেখা মিলত। বিশেষ করে গ্রামের লোকজনের বাড়িতে।

তাড়াশ উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, বিশেষ করে ইউক্যালিপটাস গাছের আগ্রাসনে শিমুল গাছ হারিয়ে যাচ্ছে। এ গাছ বাঁচিয়ে রাখতে গ্রামের লোকজনকে সচেতন হতে হবে। বাড়ির পরিত্যক্ত জায়গাতে শিমুল গাছ অযত্নে বেড়ে ওঠে। পাশাপাশি সরকারিভাবে সড়কের ২ পাশ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ গাছ বপন করা যেতে পারে।

তাড়াশ উপজেলার মহেশরৌহালী গ্রামের তোফায়েল নামে একজন কৃষক বলেন, আমাদের বাড়িতে একটি বিশাল আকৃতির শিমুল গাছ ছিল। সেই গাছের তুলায় লেপ, তোষক, বালিশ ভরা হত। সারা বছর লেপ বাদে শিমুল তুলার বালিশ ও তোষক ব্যবহার করতাম বাড়ির সবাই। যা ছিল খুবই আরামদায়ক। এখন শিমুল তুলার পণ্য ব্যবহার করা আমাদের সাধ্যের মধ্যে নাই। শিমুল তুলার একটি বালিশের দাম ৭০০ টাকা। লেপ ভরতে গেলে ৩ হাজার টাকার বেশি গুণতে হয়। প্রায় ২০ বছর আগে বাড়ির গাছটি কেটে বড় ভুল করে ফেলেছি।

মহেশরৌহালী গ্রামের আরেক কৃষক শেখ ফরিদ বলেন, আমার বাড়িতেও একটি শিমুল গাছ ছিল। কিন্তু এ গাছের গুরুত্ব বুঝতে না পেরে ২ বছর আগে কেটে ফেলেছি। এ গ্রামে আর শিমুল গাছ নাই।

তাড়াশ বাজারের লেপ, তোষকের দোকানদার মোস্তফা ও বাশার আহাম্মেদ বলেন, প্রসিদ্ধ নওগাঁ হাট ও সলঙ্গা হাট ছাড়া শিমুল তুলা পাওয়া যায় না। তাও চাহিদার তুলনায় পরিমাণে খুব কম। এ ছাড়া এখনো যাদের বাড়িতে গাছ আছে তারা দুই থেকে তিন বছরের তুলা সংগ্রহ করে বাড়িতে রেখে দেন। এরপর দোকানে এনে বেচে দেয়। বাড়ির তুলা ২ থেকে ৩ কেজির বেশি পাওয়া যায় না। ১৫ বছর আগে ১ কেজি শিমুল তুলার দাম ছিল ৩০ টাকা। ৫ বছরের ব্যবধানে ১৫০ টাকা হয়ে যায়। বর্তমান দাম ৫০০ টাকা কেজি।

সরেজমিনে তাড়াশ থেকে কুন্দইল যাওয়ার পথে দিঘী সগুনা গ্রামের মোশারফের বাড়ির সামনে সড়কের জায়গাতে দেখা মেলে ১টি মাঝারি আকৃতির শিমুল গাছের। দূর থেকেই নজর কেড়ে নিচ্ছে এ গাছটির সৌন্দর্য। গাছের এডাল থেকে ওডালে লাফিয়ে পড়ছে বুলবুলি ও শালিক পাখি শিমুল ফল খাওয়ার জন্য। এ সড়ক দিয়ে যাতায়াতের সময় অনেক পথচারী তাকিয়ে থাকেন গাছটির দিকে।

দীঘি সগুনা গ্রামের বাসিন্দা ও সগুনা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য সেন্টু তালুকদার বলেন, আমাদের গ্রামে আগে বেশ কয়েকটি শিমুল গাছ ছিল। এখন একটিও নেই। সড়কের জায়গার গাছ না হলে এ গাছটিও হয়ত কেটে ফেলা হত।

জানা গেছে, শিমুল গাছের প্রায় সব অংশই কাজে লাগে। এর ছাল, পাতা ও ফুল গবাদিপশুর প্রিয় খাদ্য। তাছাড়া শিমুলের মূল বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

রাজশাহী সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রফিকুজ্জামান শাহ্ জানিয়েছেন, শিমুল গাছ কেবল সৌন্দর্যই ছড়ায় না, এ গাছের রয়েছে নানা উপকারিতা ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব। এ গাছের সব অংশের ভেষজগুণ রয়েছে। লেপ, তোষক ও বালিশ তৈরিতে শিমুল তুলার জুড়ি নেই। কিন্তু অন্যান্য গাছের মতো এ গাছ কেউ শখ করে লাগায় না। আবার এখনো যে ২ থেকে ৪টি গাছ রয়ে গেছে কোনো যত্ন নেওয়া হয় না। ফলে সারাদেশে থেকে শিমুল গাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com