সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
জুলাই-আগষ্টে শহীদদের ছাড়া আর কারো প্রতি দায়বদ্ধতা নেই। কালের খবর পার্বত্য চট্টগ্রামের সম্ভাবনাময় অর্থকরী ফসল কাসাভা। কালের খবর চবি এক্স স্টুডেন্টস ক্লাব ঢাকা এর সভাপতি ব্যারিস্টার ফারুকী এবং সাধারণ সম্পাদক জিএম ফারুক স্বপন নির্বাচিত। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল সম্পন্ন। কালের খবর সীতাকুণ্ড হবে বাংলাদেশের অন্যতম মডেল উপজেলা : আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরী। কালের খবর মাটিরাঙ্গার গুমতিতে মহান বিজয় দিবসে বিএনপির শোভাযাত্রা ও পুষ্পস্তবক অর্পণ। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় মহান বিজয় দিবসে বিএনপির শোভাযাত্রা ও পুষ্পস্তবক অর্পণ। কালের খবর মুরাদনগরে সামাজিক সংগঠনের শীতের কম্বল বিতরণ। কালের খবর বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে ‘স্বাধীনতা সোপানে’ শ্রদ্ধা নিবেদন। কালের খবর জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার প্রধান কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন। কালের খবর
ডেমরায় ওসি বদল হলেই পালটে চাঁদাবাজির ধরন প্রশাসনের সামনে চাঁদাবাজি। কালের খবর

ডেমরায় ওসি বদল হলেই পালটে চাঁদাবাজির ধরন প্রশাসনের সামনে চাঁদাবাজি। কালের খবর

 

কালের খবর ডেস্ক :

ডেমরায় ওসি বদল হলেই পালটে চাঁদাবাজির ধরন। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদল হলেই এলাকায় চাঁদাবাজির ধরন পালটে যায়। একই সঙ্গে নতুন নিয়মে চাঁদাবাজি শুরু হয় এবং চাঁদার হার বেড়ে যায়। সাধারণ মানুষের ভোগান্তিও কয়েক গুণ বাড়ে। ১১ বছর ধরে এমন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা চলছে বলে দাবি এলাকাবাসীর। এবারও ওসি বদলের পর সর্বত্র চলছে চাঁদাবাজি। বেড়েছে চাঁদার পরিমাণ ও প্রশাসনের উদাসীনতা। ২১ সেপ্টেম্বর ডেমরা থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসাবে জহিরুল ইসলাম যোগ দিয়েছেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি জরুরি ভিত্তিতে চাঁদাবাজি বন্ধের ঘোষণা দেন। কিন্তু চিহ্নিত চাঁদাবাজরা থেমে নেই। অবৈধ দোকানপাট ও স্থাপনা এবং নিষিদ্ধ যানবাহন থেকে চাঁদার হার তারা বাড়িয়ে দিয়েছে। সূত্র জানায়, ডেমরার বিভিন্ন শিল্পকারখানা ও ছোট-বড়-মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কিছু অনিয়ম ও অনুমতির ঝামেলা থাকার সুযোগ নিচ্ছে চাঁদাবাজরা। ২৬ সেপ্টেম্বর পুলিশের অভিযানে স্টাফ কোয়ার্টার ও হাজিনগর ব্রিজে থাকা অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু একদিন পর ওই এলাকার সড়কের দুই পাশে আবারও অবৈধ দোকানপাট বসেছে। তবে ব্রিজে দোকানপাট বসেনি। এলাকাবাসীর অভিযোগ-ঘন বসতিপূর্ণ ডেমরায় নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা দিনদিন বাড়ছে। বিশেষ করে নজরদারি ও জবাবদিহি না থাকায় প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি চলছে। এর কোনো প্রতিকার মিলছে না।

সরেজমিন দেখা যায়, নতুন ওসির যোগদানের পর ডেমরায় পুলিশ ও চাঁদাবাজদের শক্তিশালী সিন্ডিকেট বহাল তবিয়তে রয়েছে। প্রতিমাসে কয়েক কোটি টাকা আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া ডেমরা-যাত্রাবাড়ী, ডেমরা-রামপুরা সড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও অভ্যন্তরীণ প্রধান সড়কগুলোর দুই পাশে অবৈধ স্থায়ী ও অস্থায়ী দোকানপাট থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় হচ্ছে। পুলিশের সঙ্গে চাঁদাবাজদের সখ্য আরও গভীর হয়েছে। কয়েকদিন ধরে তারা চাঁদার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে। ট্রাফিক ও থানা পুলিশের নীরব ভূমিকাও লক্ষ করা যাচ্ছে। অনুমতি না থাকলেও ডেমরার প্রধান ও অভ্যন্তরীণ সড়কে অটোরিকশা চলছে। চাঁদার বিনিময়ে রাস্তায় অটোরিকশা অবৈধভাবে পার্কিং করছে। পুলিশের সামনে হাজার হাজার ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, অটোরিকশা ও মিশুক চলছে। নিষিদ্ধ যানবাহন থেকে সিটি টোলের নামে ৩০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এসব স্থানীয় সংসদ-সদস্যের লোকজন, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগসহ প্রভাবশালী মহল নিয়ন্ত্রণ করছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৬৬, ৬৭ ও ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের যুক্ত পয়েন্ট বড়ভাঙ্গা এলাকার সড়কের দুপাশে দেড় শতাধিক অবৈধ দোকানপাটসহ বাজার রয়েছে। ডগাইর বাজার এলাকা, বামৈল এলাকা, বাঁশেরপুল এলাকা ও কোনাপাড়া বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টের সড়কের দুপাশে হাজারখানেক অবৈধ দোকানপাট রয়েছে। একই সঙ্গে কোনাপাড়ায় সড়ক দখল করে ভ্রাম্যমাণ ভ্যানগাড়ি দিয়ে দোকানপাট চালানোর সুযোগ করে দিয়েছে অসাধু চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট। নাম প্রকাশ না করার শর্তে চিহ্নিত চাঁদাবাজদের কয়েকজন সহযোগী বলেন, আগে নেতারা থানায় গিয়ে চাঁদার টাকা দিয়ে আসত। এখন নতুন ওসি আসার পর লোক মারফত চাঁদার টাকা থানায় পাঠানো হয়। তারা বলেন, নতুন ওসি এলে প্রথম কিছু সমস্যা হয়। তবে টাকা একটু বেশি দিলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। মিনহাজ, আজহারুল, মমিনসহ একাধিক দোকানি ও অটোরিকশা চালক বলেন, হঠাৎ করে চাঁদার হার বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। নতুন ওসি এসেছেন-তাই টাকা বেশি দিতে হবে। দোকানপ্রতি ৫০ টাকা এবং অটোরিকশাপ্রতি ১৫ টাকা বাড়তি দিতে হচ্ছে। চাঁদার টাকা জনগণের কাছ থেকেই জোগাড় করতে হয়।

ওসি জহিরুল ইসলাম মোবাইল ফোনে বলেন, চাঁদাবাজি বন্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেব। সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বলেছি, চাঁদাবাজি স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হবে। কিন্তু চাঁদাবাজরা বহাল তবিয়তে-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফোর্স পাঠাচ্ছি সড়কের দুপাশ দখলমুক্ত করতে। ওয়ারী বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) জিয়াউল আহসান তালুকদার বলেন, ডেমরা থানা এলাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোকে চিহ্নিত করে দখলমুক্ত করা হবে। এছাড়া দৃশ্যমান বা অদৃশ্যমান কোনো প্রকার চাঁদাবাজি ডেমরায় চলতে দেওয়া হবে না। তদন্তসাপেক্ষে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে ঢাকা-৫ আসনের সংসদ-সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনু বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা চাঁদাবাজি বন্ধ করব। সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর করে আমরা আদর্শ সমাজ গড়ে তুলব। এজন্য পর্যায়ক্রমে সব দায়িত্ব পালন করা হবে।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com