মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪২ পূর্বাহ্ন
রাজধানীর বৃহত্তর ডেমরার যাত্রাবাড়ি বর্ণমালা আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ ও সভাপতির দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।
বোর্ডের চেয়ারম্যানের আদেশক্রমে কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর আবু তালেব মো. মোয়াজ্জেম হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
আদেশে বলা হয়েছে, বোর্ডের উপ-বিদ্যালয় পরিদর্শক আরিফুল হক এবং সহকারী কলেজ পরিদর্শক মোহাম্মদ লোকমান মুন্সী প্রতিষ্ঠানটি সরেজমিনে পরিদর্শনে যাবেন।
এর আগে, স্কুলটির অধ্যক্ষ ভূঁইয়া আবদুর রহমান ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবদুস সালামের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করেন সহকারী সিনিয়র শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমিন।
অভিযোগকারী ফরিদা ইয়াসমিন কালের খবরকে জানান, বর্ণমালা স্কুলে অবৈধভাবে পরিচালনা কমিটি গঠন, ঘুষের বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতি, উন্নয়নের নামে লাখ লাখ টাকা লোপাটসহ অধ্যক্ষ ও সভাপতির স্বেচ্ছাচারিতায় সাধারণ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অতিষ্ঠ। বিদ্যালয়ের ফান্ডের কোটি কোটি টাকা লোপাট করে ইতোমধ্যে অধ্যক্ষসহ তার অনুসারীরা অঢেল সম্পদের মালিক এবং সভাপতি শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, গভর্নিং বডি গঠনের ক্ষেত্রে নির্বাচন ব্যবস্থার নিয়ম থাকলেও গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বিনা নির্বাচনে জালিয়াতির মাধ্যমে একই ব্যক্তি (আবদুস সালাম) সভাপতির পদ দখল করে আছেন। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে প্রতি মেয়াদেই জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে কমিটি অনুমোদন নেওয়া হয়।
ফরিদা ইয়াসমিন আরও অভিযোগ করেন, কোচিং বাণিজ্যের জন্য এমপিও ভুক্ত শিক্ষকদের বাদ দিয়ে নন-এমপিও জুনিয়র শিক্ষকদের দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস করানো হয়। শুধু তাই নয়, একাডেমিক কাউন্সিল, পরীক্ষা কমিটির সদস্যরা সবাই নন-এমপিও ভুক্ত জুনিয়র শিক্ষক।
নিজেদের দুর্নীতির ঢাকতে কোনো সিনিয়র শিক্ষককে এসব কমিটিতে রাখা হয় না। অন্যদিকে, অধ্যক্ষ ভূঁইয়া আবদুর রহমান অনার্সে তৃতীয় শ্রেণি পেয়েছেন। তিনি মাস্টার্স পাস করার পর অনার্স মান উন্নয়ন পরীক্ষা দিয়ে দ্বিতীয় বিভাগ পান। যার কারণে তার মাস্টার্সের সার্টিফিকেটের কার্যকারিতা আর থাকে না। তারপরও তাকে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে অধ্যক্ষ করে রাখা হয়েছে সভাপতির দুর্নীতির ভাগবাটোয়ারা করার জন্য।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ভূঁইয়া আবদুর রহমান এবং পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুস সালাম।
অধ্যক্ষ ভূঁইয়া আবদুর রহমান কালের খবরকে বলেন, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তের জন্য ফরিদা ইয়াসমিনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে মামলা করায় তদন্ত কমিটির কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তাকে বরখাস্ত করার পর থেকেই তিনি বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ করে আসছেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে এর আগেও আমাদেরকে তদন্ত কমিটির সম্মুখীন হতে হয়েছে। এ বিষয়টি নতুন নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
স্কুল ও কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুস সালাম কালের খবরকে বলেন, পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে তেমন কোন আগ্রহ না থাকায় সাদামাটা ভাবেই কমিটি নির্বাচিত হয়ে থাকে। স্কুলটির শুরু থেকে উন্নয়নের কাজ করে আসছি এবং প্রতিষ্ঠানটি এ পর্যন্ত নিয়ে আসছি পরিশ্রম করে। দুর্নীতি এবং অনিয়মের বিষয়ে বলেন, অনেক তদন্ত কমিটি তদন্ত করেছে। কেউ কোনো অভিযোগের সত্যতা পায়নি।