সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৩ অপরাহ্ন
মাধবপুর প্রতিনিধি, কালের খবর : মাধবপুরে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ জালিয়াতি করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়ার অভিযোগ উঠেছিলো মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে । ৪ মাসের মাথায় জাল সনদের অভিযোগে সভাপতির পদ স্থগিত করেছে মাধবপুর উপজেলা শিক্ষা কমিটি।
জানা গেছে, গত ২৮ ডিসেম্বর-২১ তারিখে মাধবপুর উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ মোঃ শাহজাহান ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ ছিদ্দুকুর রহমান স্বাক্ষরিত ৪১নং মীরনগর সরকারী স্কুল ম্যানেজিং (এসএমসি)’র ৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। উক্ত কমিটির সভাপতি পদ ভাগিয়ে নিয়েছিলেন আন্দিউড়া ইউনিয়ন আ’লীগের সেক্রেটারী মীর নগর গ্রামের মিজানুর রহমান। সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি হতে হলে অবশ্যই নিজ সন্তান ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হতে হবে এবং নূন্যতম ডিগ্রী পাস করতে হবে।
এদিকে, মিজানুর রহমান সভাপতি হওয়ার জন্য সিলেট এম সি কলেজ থেকে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে ২০০১সালে বিএসএস দ্বিতীয় বিভাগে পাশের সনদপত্রের ফটোকপি দাখিল করেন। যাহার রোল নং ৬৩৪৬, রেজি নং ৫১১৯৬ শিক্ষাবর্ষ ১৯৯৮-৯৯।
দেখা যায়, সনদপত্রটি ২৯/১২/২০২১ তারিখে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন ডাক্তার দ্বারা সত্যায়ন করা ছিল।
আরো জানা যায় যে, কমিটির অনুমোদনের পর এক লিখিত দরখাস্তে দাবী করা হয়েছিল , মিজানুর রহমানের দাখিলকৃত সনদপত্রটি জাল এবং প্রতারনার মাধ্যমে মিজানুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হয়েছেন। লিখিত অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার জন্য উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন যাদের ৭ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ ছিদ্দিকুর রহমানকে প্রধান করে আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রাখা হয়েছিল উপজেলা জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ূন কবির ও মৎস্য কর্মকর্তা আবু আসাদ ফরিদুল হক।
নোটিশের মাধ্যমে গত সোমবার(১১ এপ্রিল) মীরনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি অভিযুক্ত মিজানুর রহমানকে সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার মূল সনদ নিয়ে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছিল। মিজানুর রহমান স্বশরীরে হাজির হলেও শিক্ষাগত যোগ্যতার কোন সনদপত্র দেখাতে পারেনি। জানা যায়, তিনি মৌখিত ভাবে তদন্ত কমিটিকে জানান তার সনদপত্র গুলো হারিয়ে গেছে। তবে এ সংক্রান্ত থানায় কোন জিডি কিংবা অন্য কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
পরদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাছে জাল সনদের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করেন।
এদিকে, গতকাল বুধবার (১৩ই এপ্রিল) উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভায় অভিযুক্ত মিজানুর রহমানের বিদ্যালয়ের সভাপতির পদ স্থগিত করা হয়েছে এবং ওই কমিটিতে থাকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিনিধি মোঃ লাফু মিয়াকে সভাপতি হিসেবে দ্বায়িত্ব পালনের সীদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সভার একাধিক সূত্র জানিয়েছে। এ নিয়ে গত ১লা এপ্রিল একটি স্থানীয় দৈনিকে সংবাদ প্রচার হলে পুরো মাধবপুর জুড়ে চলে রম্য আলোচনা। সচেতন মহল দাবী করছে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এই জালিয়াতির বিষয়টি তুলে ধরা হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ রকম প্রতারনা করতে আর কেউ সাহস পাবেনা।