শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করে পশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলছে। কালের খবর সমাজে “শান্তি স্থাপন ও সহিংসতা নিরসনে — সাতক্ষীরায় তাপদাহে রিকশাচালকদের মাঝে পানি ও স্যালাইন বিতারণ। কালের খবর প্রচণ্ড তাপদাহে পুড়ছে বাগান, ঝরছে আম, শঙ্কায় চাষীরা। কালের খবর ট্রাফিক-ওয়ারী বিভাগ যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে। কালের খবর মারামারি দিয়ে শুরু হলো ‘খলনায়ক’দের কমিটির যাত্রা। কালের খবর কুতুবদিয়ার সাবেক ফ্রীডম পার্টির নেতা আওরঙ্গজেবকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন। কালের খবর সাতক্ষীরায় লোনা পানিতে ‘সোনা’ নষ্ট হচ্ছে মাটির ভৌত গঠন। কালের খবর সড়ক প্রশস্তকরণের কাজে অনিয়মের মহোৎসব। কালের খবর ইপিজেড থানা কমিউনিটি পুলিশিং এর উদ্যোগে আইন শৃঙ্খলা ও কিশোর গ্যাং প্রতিরোধ বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত। কালের খবর
বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী ড. জায়েদ বখ্ত। কালের খবর

বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী ড. জায়েদ বখ্ত। কালের খবর

বাণিজ্য ডেস্ক, কালের খবর  :
রাষ্ট্রায়ত্ব অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে টানা তৃতীয়বার নিয়োগ পেয়েছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. জায়েদ বখ্ত। গত ৭ ডিসেম্বর সরকার তাঁকে আবার তিন বছরের জন্য নিয়োগ দেয়। ২০১৪ সালে তিনি ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হিসেবে প্রথম দায়িত্ব শুরু করেন। ২০১৭ সালে দ্বিতীয়বার তাঁর মেয়াদ বাড়ানো হয়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অর্থনীতির নানা শাখায় কাজ করেছেন বর্ণাঢ্য ক্যরিয়ারের অধিকারী এ অর্থনীতিবিদ।

ড. জায়েদ বখ্ত ১৯৭১ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (বিআইডিএস) স্টাফ অর্থনীতিবিদ হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭৮ সাল থেকে একই প্রতিষ্ঠানের রিসার্চ ফেলো হিসেবে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালে সিনিয়র রিসার্চ ফেলো হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় ১৯৯৮ সালে গবেষণা পরিচালক নিযুক্ত হন। ২০১৪ সালে তিনি অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। তার আগে ২০১২ সালে তিনি সোনালী ব্যাংকের পরিচালক হন।

ড. জায়েদ বখ্ত বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভিন্ন বিষয়ে নানামুখী গবেষণায় সমৃদ্ধ করেছেন অভিজ্ঞতার ঝুলি। গবেষণা প্রকল্প প্রণয়ন, পরিচালনা ও দিক নির্দেশনা দেওয়ার ক্ষেত্রে এ উন্নয়ন অর্থনীতিবিদের দীর্ঘ কাজ রয়েছে। বিশেষকরে বাণিজ্য, শিল্প, বেসরকারি খাত, এসএমই উন্নয়ন, সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা এবং বাহ্যিক অবকাঠামো সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাঁর গবেষণা ও অভিজ্ঞতা ব্যাপক। এছাড়া শিল্পনীতি, জাতীয় আয় হিসাব, উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং সরকারি ব্যয় ইত্যাদি ক্ষেত্রে জাতীয় পর্যায়ের পলিসি তৈরীতেও তিনি অভিজ্ঞ।

ড. জায়েদ বখ্ত ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক সম্পন্ন করেন। ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের ইসলামাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল ইউনিভার্সিটি থেকে দ্বিতীয়বার অর্থনীতিতে এমএসসি এবং ১৯৭৮ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

প্রবীণ অর্থনীতিবিদ ড. জায়েদ বখ্ত-এর রয়েছে এক ডজনের ওপর আন্তর্জাতিক পাবলিকেশনস। তার এসব গবেষণাকর্মে স্থান পেয়েছে ম্যানুফেকচারিং খাত, আইসিটি শিল্প, গ্রামীণ অর্থনীতি ও দারিদ্র্য নিরসন, নিটওয়্যার শিল্প, কৃষি, পরিবেশ মানদন্ড ও রপ্তানি, বাংলাদেশের যন্ত্রাংশ শিল্প, অর্থনৈতিক সংস্কার, সরকারি শিল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধি, এসএমই খাত, গ্রামীণ উন্নয়নে প্রযুক্তি, বাংলাদেশের তাঁত শিল্পসহ বহু বিষয়।

দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সংস্থা সার্ক, দেশের উদীয়মান পোশাক খাতের কর্ম পরিবেশের নিরাপত্তা ও রপ্তানি এবং রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ বিষয়সহ বাংলাদেশ সরকারের বেশকিছু গবেষণা প্রকল্পে তিনি কাজ করেছেন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাংক, আইএলও, এডিবি, এসক্যাপ, ইইউ, এফএও, আঙ্কটাড এবং জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশনের সঙ্গেও অনেক গবেষণা প্রকল্প রয়েছে তাঁর।

ড. জায়েদ বখ্ত বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে ইউনেস্কো, আঙ্কটাড, স্ট্র্যাথলাইড ইউনিভার্সিটি, এসক্যাপ ও আএলওতে বেশকিছু আন্তর্জাতিক অ্যাসাইনমেন্ট সম্পন্ন করেছেন। ১৯৯১ সালে শ্রিলংকায় গ্রামীণ অনানুষ্ঠানিক কর্মসংস্থান নিয়ে আলএলও’র সেক্টর রিভিউ মিশনের সদস্য হিসেবে কাজ করেন। ১৯৯২ সালে এসক্যাপ এর কনসালটেন্ট হিসেবে আসিয়ান ও প্যাসিফিক অঞ্চলের সরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি নিয়ে কাজ করেছেন। তিনি লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিকস, ইউনিভার্সিটি অব সাসেক্স, ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপিং ইকোনোমিকস, টোকিও, জাপানসহ বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বেশকিছু গবেষণা পরিচালনা করেছেন।

সম্পাদনার দায়িত্বও পালন করেছেন ড. জায়েদ বখ্ত। তিনি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের ত্রৈমাসিক জার্নাল ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ’ এর বিশেষ সংখ্যা সম্পাদনা করেছেন।

শিক্ষকতা জীবনে পদার্পনের মধ্যদিয়েও ড. জায়েদ বখ্ত সমৃদ্ধ করেছেন তাঁর ক্যারিয়ার। ২০০৯-১০ সালে ইউএনডিপির স্পন্সরে বিআইডিএস ও ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা কোর্সে কোঅর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করেন। ১৯৯৫ সাল থেকে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে অর্থনীতি বিভাগ ও এমবিএ প্রোগ্রামে ভিজিটিং অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ঢাকায় ২০০৬-২০০৮ সালে তিনি অর্থনীতি বিভাগে অ্যাডজাঙ্কট অধ্যাপক ছিলেন, ২০০৫ সালে বিআইডিএস ও ডব্লিউবিআই প্রশিক্ষণ শিবিরে রিসোর্স পারসন ছিলেন। তিনি আর্মড ফোর্সেস স্টাফ কলেজ, পিএটিসি, এনএইএম এবং প্ল্যানিং অ্যাকাডেমিতে গেস্ট স্পিকার ছিলেন।

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা প্রদর্শনের পাশাপাশি ইতিপূর্বে দেশেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন এ অভিজ্ঞ অর্থনীতিবিদ। তিনি ২০১২ সালে সোনালী ব্যাংকের পরিচালক হন, শাহজালাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলোজির সিন্ডিকেট সদস্য ২০১৩ সাল থেকে। ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নে অর্থনীতিবিদ প্যানেলের সদস্য ছিলেন, ২০০২ সালে সরকারি ব্যয় রিভিউ কমিশনের সদস্য ছিলেন, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় আয় হিসাব পর্যালোচনা কমিটির সদস্য, ২০০১ সালে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য ছিলেন এবং ১৯৯৮ সালে শিল্প নীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য ছিলেন এ অর্থনীতিবিদ। বহু বর্নের ছটায় নিজের জীবন আলোকিত করা ব্যক্তিত্ব ড. জায়েদ বখত।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com