রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:১৪ পূর্বাহ্ন
কালের খবর ডেস্ক :
চায়ের রাজধানীখ্যাত মৌলভীবাজারের চা শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে বইছে আনন্দের হিল্লোল। কারণ আবারো উৎপাদনে রেকর্ড করতে যাচ্ছে এ শিল্প। গেল বছর (২০১৯) রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদনের পথে রয়েছে। ইতিমধ্যে যে পরিমাণ চা উৎপাদিত হয়েছে তাতে নতুন রেকর্ডের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত উৎপাদন হয়েছিল ৯০ মিলিয়ন কেজি চা। ডিসেম্বর মাসে চায়ের উৎপাদন যোগ হলে প্রায় ৯৫ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা রাখছেন এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা। সব হিসাব শেষে এমন রেকর্ডের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে। এমন সম্ভাবনাময়ী উৎপাদনে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে আবারো চা রপ্তানি করা সম্ভব হবে এমনটিই বলছেন এ শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন অনুকূল আবহাওয়া ও নতুন কিছু উন্নয়নমূলক উদ্যোগের ফলে আবারো ঘুরে দাঁড়িয়েছে চা উৎপাদন। তবে চায়ের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া ও পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে নিম্নমানের চা প্রবেশ করায় চা উৎপাদকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বাংলাদেশ চা বোর্ড (শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার) প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিট (পিডিইউ), পরিচালক ড. কে এম রফিকুল হক জানান চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ এখন সবচেয়ে এগিয়ে। গত জুলাইয়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বাংলাদেশে চা উৎপাদন বেড়েছে ২৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এই হার প্রতিবেশী ভারতে ৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং আরেক বড় চা উৎপাদনকারী দেশ শ্রীলঙ্কায় মাত্র দশমিক ৯৫ শতাংশ। এ ছাড়া কেনিয়ার মতো চা উৎপাদনকারী দেশে তো ৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ কমেছে। এতে বাংলাদেশের সামনে আশার সঞ্চার হয়েছে। তিনি বলেন, উৎপাদনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকায় গেল বছরের উৎপাদিত চা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিপুল পরিমাণ রপ্তানি করা যাবে এমনটি এখন প্রত্যাশা রাখছি।
হামিদিয়া চা বাগানের জেনারেল ম্যানেজার মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ২০১৯ সালের মৌসুমের শুরু থেকেই চায়ের উপযোগী বৃষ্টিপাত হয়েছে। সূর্যের আলো পড়েছে প্রয়োজনীয় মাত্রায়। রোগবালাই ছিল কম। সব মিলিয়ে আবহাওয়া ছিল বেশ অনুকূলে। এর ওপর বাংলাদেশ চা বোর্ডের বেশকিছু উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে চায়ের উৎপাদন বেড়েছে।
এ ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।
বাংলাদেশ চা সংসদ সিলেট অঞ্চল শাখার চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ শিবলী বলেন, আবহাওয়া অনুকূল না থাকাসহ নানা জটিলতার কারণে আগের দুই বছর ২০১৭-২০১৮ চায়ের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি এবং ওই বছরগুলোতে প্রত্যাশানুযায়ী উৎপাদন হয়েছিল কম। ওই পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট চা-বাগান কর্তৃপক্ষ ও চা-বোর্ডের নানামুখী পদক্ষেপের ফলে ২০১৯ সালের উৎপাদন বেড়েছে।
বাংলাদেশ টি ট্রেডার্স অ্যান্ড প্ল্যান্টার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জহর তরফদার জানান, এখন শ্রীমঙ্গলেই সরাসরি নিলাম হওয়ায় চায়ের গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে না। আর গুণগত মান ঠিক রেখে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশি চায়ের স্বর্ণযুগ অবশ্যই আসবে।