সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩৪ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের খবর :
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির ২০ দিন পর ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তিনি এতদিন কোথায় ছিলেন- সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ।
রোববার বিকেলে পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার এ বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এতে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন- ‘মোয়াজ্জেম ২০ দিন পলাতক ছিল। এতদিন সে কোথায় ছিল? কেন তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি?’ জবাবে ডিসি মারুফ হোসেন বলেন, ‘এটা বলা যাবে না। কারণ কেউ গ্রেফতারের পর বলবে না যে সে কোথায় ছিল।’
জিজ্ঞাসাবাদে মোয়াজ্জেম কী বলেছেন? জানতে চাইলে মারুফ হোসেন বলেন, আমাদের এই থানায় তার নামে কোনো মামলা নেই। তাই আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার কোনো কারণ নেই। তারপরও আমরা মাত্র কিছুক্ষণ আগেই ধরেছি।
গ্রেফতারের বিষয়ে ডিসি মারুফ হোসেন সরদার বলেন, শাহবাগ থানাধীন কদম ফোয়ারার সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমাদের কাছে গোপন তথ্য ছিল তিনি এখানে থাকতে পারেন। সেখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সোনাগাজী থানায় তার নামে অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট আছে। গ্রেফতারের পরপরই আমরা সোনাগাজী থানায় যোগাযোগ করেছি। সেই থানার প্রতিনিধি আসলে তাদের কাছে মোয়াজ্জেমকে হস্তান্তর করা হবে। যতক্ষণ হস্তান্তর না করা হবে ততক্ষণ শাহবাগ থানায় রাখা হবে তাকে। আদালতে কখন তুলবে এটা সোনাগাজী থানা পুলিশের সিদ্ধান্ত।
মোয়াজ্জেম সকালে আদালতে জামিনের জন্য গিয়েছিলেন, সেখান থেকে ফেরার সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিষয়টি সত্য কি না? এ বিষয়ে ডিসি মারুফ বলেন, জামিন নিতে গিয়েছিলেন কি না সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। আমাদের কাছে আসা গোপন তথ্য অনুযায়ী আমরা কদম ফোয়ারা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করি।
এর আগে ফেনীতে হত্যাকাণ্ডের শিকার মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ানোয় অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহানকে গত ৬ এপ্রিল পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। তার দিন দশেক আগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানাতে সোনাগাজী থানায় যান নুসরাত। থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন সে সময় নুসরাতকে আপত্তিকর প্রশ্ন করে বিব্রত করেন এবং তা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
ওই ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলে আদালতের নির্দেশে সেটি তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পিবিআই গত ২৭ মে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিলে ওইদিনই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। পরোয়ানা জারির দুইদিন পর মোয়াজ্জেম হোসেন হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন।