বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৩ অপরাহ্ন
ফরিদপুর প্রতিনিধি, কালের খবর : ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ ভবনের মধ্যেই যাবতীয় দাফতরিক কার্যক্রম চলছে ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের। যে কোন মুহূর্তে পুরো ভবনটি ধসে ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশংকায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য, কর্মকর্তাসহ এলাকাবাসী। দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।
ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়ন। ১৯৫৩সালে ৫৬ শতাংশ জমির এক সাইডে ৮০ ফিট বাই ৩০ ফিট দুই কক্ষ বিশিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের ভবন নির্মাণ করেন জমিদার ঈশান বাবু।
পরবর্তীতে ১৯৬৮সালে তদানিন্তন চেয়ারম্যান শফিউদ্দিন চৌধুরী ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে ২০ হাজার টাকা ব্যায়ে ৩ কক্ষ বিশিষ্ঠ একটি হল রুম নির্মাণ করেন। ভবন দুটি দীর্ঘদিনের পুরাতন হওয়ায় ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে অনেক আগেই। বর্তমানে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে জরাজীর্ণ ভবনটির মধ্যেই ইউনিয়ন পরিষদের ২৫ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
বর্তমানে ভবনের মাঝখানের ছাদের ইট সুরকি প্লাষ্টার খসে পড়ে গেছে। ভবনের বিভিন্ন অংশ মারাত্মকভাবে ভেঙ্গে গেছে। ভিমের উপরের প্লাষ্টার খসে পড়ছে, দরজা-জানালাগুলোর অবস্থাও বেহাল। বৃষ্টির সময় ছাদ চুয়ে পানি পড়ে। ফলে অফিসের ভিতরে বৃষ্টির সময় পানি ঢুকে স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থা থাকে। ঝড়-বৃষ্টির সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনপ্রতিনিধিরা কাজ করছে।
তাছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি যে কোনো মুহূর্তে তাদের মাথার উপর ভেঙ্গে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশংকায় কোনো রকমে কাজকর্ম সেরেই তাড়াতাড়ি বাইরে বেরিয়ে আসতে হয় তাদের। জরুরি ভিত্তিতে ঈশান গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদটি নির্মাণের জন্য প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও এলাকাবাসী।
খিতিশ সাহা বলেন, আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের ভবনটি দীর্ঘদিনের পুরাতন হওয়া সঠিক ভাবে সেবা দিতে পাচ্ছি না আমরা। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে ডিজিটাল সেন্টার পরিষদে নেই। আর সে কারণে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় সেবা পাচ্ছি না। অন্যান্য ইউনিয়ন পরিষদে নতুন ভবন হলেও আমাদের ইউনিয়নে কোন ভবন হয়নি। সরকারের কাছে দাবি একটাই দ্রুত আমাদের ইউনিয়নে নতুন ভবন নির্মাণ করার। এখানে নতুন ভবন হলে ইউনিয়নের জনগণ সঠিক সেবা পাবে।
ঈশাণ গোপালপুর ইউনিয়নের সচিব মন্টু সরকার বলেন, আমাদের ইউনিয়ন পরিষদটি ১৯৬৮সালে প্রতিষ্ঠিত। সংস্কারের অভাবে ভবনটি নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা সঠিক ভাবে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছি না। আমরা কোন মিটিং করতে পারি না। গ্রাম আদালতের কার্যক্রম করতে পারি না। ডিজিটাল সেন্টার চালাতে পারি না। পরিষদের কোন মিটিং ও করতে পারছি না। দীর্ঘদিনের পুরাতন ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা কার্যক্রম চালাচ্ছি।
ঈশাণ গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শহীদুল ইসলাম মজনু বলেন, ১৯৫৩সালে ইউপি ভবন ও ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় হল রুম। ভবনের ভিতরে জরাজীর্ণ অবস্থা। যে কোন সময় এটি ধসে পড়তে পারে। আমরা নিরাপত্তা হীনতায় আছি। ছাদের রড বের হয়ে গেছে। প্লাষ্টার খসে খসে পড়ছে। ফ্যান চালাতে পারি না। ফ্যান চালালে ছাদ কাপে। ভবনটির সমস্যার কারণে আমরা জনগণকে সঠিক সেবা দিতে পারছিনা। ডিজিটাল (ই-সেন্টারের) সেবা দিতে পারছি না। দ্রুত একটি ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।