বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১৬ পূর্বাহ্ন
কালের খবর প্রতিবেদক, ডেমরা : নগরীর ডেমরা-যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা-রামপুরা সড়ক দিয়ে রাতের বেলায় অতিরিক্ত পণ্যবাহী বড় বড় ট্রাক-লরি এবং বিভিন্ন যানবাহনের চলাচল বাড়ছে। এতে প্রতিনিয়ত সড়কে রাতের যানজট বাড়ছে, যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না ট্রাফিক বিভাগ। এতে এসব সড়ক দিয়ে চলাচলকারী অন্তত ৬৪ রুটের যাত্রী ও যানবাহন চালকের কষ্ট বেড়েছে কয়েকগুণ। ট্রাফিক বিভাগ বলছে, এখানকার সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের তুলনায় সড়ক অপ্রশস্ত ও অপ্রতুল। নগরীতে প্রবেশের জন্য অতিরিক্ত যানবাহন চলাচলের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সড়ক প্রশস্তকরণসহ লেন বাড়ানো প্রয়োজন। আর ঢাকা সড়ক বিভাগ বলছে, নগরীতে প্রবেশের জন্য পণ্যবাহী ট্রাক-লরি চলাচল করবে নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জের কাঞ্চন বাইপাস সড়ক দিয়ে। ডেমরা-রামপুরা সড়কটি অতিরিক্ত ভারী যানবাহন চলাচলের উপযোগী নয়। কাঞ্চন সেতুর টোল ও সময় বাঁচাতে পণ্যবাহী যানবাহনের চালকরা ডেমরা হয়ে নগরীতে প্রবেশের কৌশল গ্রহণ করেছে। এক্ষেত্রে ট্রাফিক বিভাগের তৎপর হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছে সড়ক বিভাগ। আর ট্রাফিক বিভাগ বলছে, ডেমরা-রামপুরা ও ডেমরা-যাত্রাবাড়ী সড়কসহ কোনো সড়কেই পণ্যবাহী ভারী যানবাহন চলাচলে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে অফিসিয়ালভাবে সড়ক বিভাগ যদি ট্রাফিক বিভাগকে কোনো নির্দেশনা দেয় তাহলে ট্রাফিক বিভাগ অবশ্যই ওই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করবে। জানা যায়, ডেমরার কোলঘেঁষা শীতলক্ষ্যা নদীতে সুলতানা কামাল সেতুটি নির্মাণের পর নগরীর প্রবেশদ্বারে পরিণত হয়েছে ডেমরা। অন্তত ৬৪ রুটের বিভিন্ন যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে ডেমরা-যাত্রাবাড়ি ও ডেমরা-রামপুরা সড়ক দিয়ে। দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে উত্তরাঞ্চলে যাতায়াতের প্রধান রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ডেমরার এ দুটি প্রধান সড়ক। নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলাচল করছে অতিরিক্ত পণ্যবাহী যানবাহন। ওই দুই সড়কের মেইন পয়েন্টের আশপাশেই বিভিন্ন যানবাহনের স্ট্যান্ড। বেশ কিছু গাড়ি সড়কের দুই পাশেও রাখা হয়। ডেমরায় রাত ৮টায় শুরু হয়ে সারা রাত হাজারও ভারী যানবাহন নগরীতে প্রবেশ করছে। নগরী থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছে। বিশেষ করে ডেমরার চৌরাস্তা চত্বরে তিন দিক থেকে যানবাহন আসা-যাওয়ার কারণে বেশি যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ঢাকা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহেদি ইকবাল বলেন, ডেমরা দিয়ে অতিরিক্ত পণ্যবাহী ট্রাক-লরি, কাভার্ডভ্যানসহ ভারী যানবাহন চলাচলের নিয়ম নেই। নগরীতে প্রবেশের জন্য তারা অবশ্যই বাইপাস সড়ক ব্যবহার করবে। এক্ষেত্রে ট্রাফিক বিভাগকে সচেতন হতে হবে। আর রাস্তা অপ্রতুল বলে যানজট নিরসনে সড়ক বিভাগ পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ নামে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যার কাজ দেড় থেকে দুই বছর পর শুরু হবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ফ্লাইওভার নির্মাণ হলে ইন্টারসেকশনের মাধ্যমে যাত্রীরা সহজে অল্প সময়ের মধ্যে রামপুরা থেকে ডেমরা হয়ে সোনাগাঁয়ের কাঁচপুরে চলে যাবে। তার নিচের ডেমরা-রামপুরা সড়কটিও প্রশস্তকরণসহ উন্নয়ন করা হবে। এতে কোনো ধরনের যানজট থাকবে না। রামপুরা ট্রাফিক বিভাগের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর টিআই বিপ্লব ভৌমিক কালের খবরকে বলেন, ডেমরায় প্রধান ওই সড়ক দুটি পণ্য পরিবহন ও যাত্রী চলাচলে বহুল ব্যবহৃত বলে এখানে যানজট সৃষ্টি হয়। সড়ক বিভাগ আমাদের পণ্যবাহী যানবাহন সম্পর্কে সঠিকভাবে নির্দেশনামা দিলে অবশ্যই তা বাস্তবায়ন করব। রামপুরা ট্রাফিক জোনে দায়িত্বরত অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মোছা. লুবনা মোস্তফা কালের খবরকে বলেন, প্রয়োজনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে ডেমরায় গভীর রাত পর্যন্ত ট্রাফিক ডিউটি বাড়ানো হয়েছে। যানবাহনের তুলনায় রাস্তা অপ্রতুল ও অপ্রশস্ত বলে এমন জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। এক্ষেত্রে রাস্তার লেন বাড়ানোসহ প্রশস্ত বা বিকল্প ব্যবস্থা করা অবশ্যই প্রয়োজন।