রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৬ অপরাহ্ন
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে স্বাক্ষর না করতে প্রেসিডেন্টের প্রতি অনুরোধ
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের খবর : সাংবাদিক সমাজ, সম্পাদক পরিষদ, নাগরিক সমাজ ও দেশী-বিদেশী মানবাধিকর সংগঠনের প্রতিবাদ অগ্রাহ্য করে গণমাধ্যম ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাবিরোধী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংসদে পাশের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে এ বিলে স্বাক্ষর না করার জন্য মহামান্য প্রেসিডেন্টের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজেসহ ১২টি সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারা। রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে সংবিধান, গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী বিলটি সংসদে ফেরৎ পাঠিয়ে গণতন্ত্র ও মৌলিক অধিকারবিরোধী ধারা সংশোধনে প্রেসিডেন্ট ভূমিকা রাখবেন বলে আশা প্রকাশ করেন নেতৃবৃন্দ।
আজ বৃহস্পতিবার ২০ সেপ্টেম্বর এক যুক্ত বিবৃতিতে বিএফইউজে ও এর অঙ্গ ইউনিয়নগুলোর নেতৃবৃন্দ এ আহবান জানান।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গঠিত এক দলীয় সংসদে স্টেকহোল্ডারদের আপত্তি ও সংশোধনী প্রস্তাব উপেক্ষা করে পাশকৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। এ আইন সংবিধান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। গণতান্ত্রিক দেশেতো নয়ই কোন সভ্য সমাজে এ ধরনের আইনের কথা কল্পনাও করা যায় না। আইনটি সংসদে উপস্থাপনের সময় তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী যে প্রতারণামুলক বক্তব্য দিয়েছেন তা আমাদের স্তম্ভিত করেছে। তিনি সম্পাদক ও সাংবাদিকদের প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে বলে নির্জলা মিথ্যাচার করেছেন।
নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে বলেন, একদিকে প্রায় শত বছরের পুরনো অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ঔপনিবেশিক এনালগ আইনকে আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির যুগে টেনে আনা হয়েছে। অন্যদিকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার ও তল্লাশীর ক্ষমতা পুলিশকে দিয়ে প্রকারান্তরে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে নিপীড়নের সুযোগ অবারিত করা হযেছে। এমনকি গবেষণা কাজও এই আইনের কারণে হুমকির মুখে পড়বে। সাংবাদিক সমাজসহ দেশের বিবেকবান মুক্তচিন্তার মানুষ এই আইনে প্রতিনিয়ত হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হবেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আইনটি পুনর্বিবেচনার জন্য সংসদে ফেরৎ পাঠাতে প্রেসিডেন্টের প্রতি আহবান জানান।
বিবৃতিদাতা নেতৃবৃন্দ হচ্ছেন-বিএফইউজে একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী ও মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ডিইউজে একাংশের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিএমইউজে)র সভাপতি শামসুর হক হায়দরী ও সাধারণ সম্পাদক মো. শাহনওয়াজ, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সরদার আবদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আবদুল আউয়াল, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন-খুলনার সভাপতি আনিসুজ্জমান ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান হিমালয়,
সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি শহীদ জয় ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান, সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার সভাপতি মির্জা সেলিম রেজা ও সাধারণ সম্পাদক গণেশ দাস, সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজারের সভাপতি মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক হাসানুর রশীদ, কুমিল্লা জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহ আলম শফি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক, সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুরের সভাপতি জি এম হিরু ও সাধারণ সম্পাদক মাহফিজুল হক রিপন, সাংবাদিক ইউনিয়ন ময়মনসিংহের সভাপতি সভাপতি আইয়ুব আলী ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম এবং সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুরের সভাপতি এইচ এম দেলোয়ার ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ।শনিবার ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ: গণতন্ত্র, গণমাধ্যম ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাবিরোধী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর শনিবার সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের আহবান জানিয়েছেন বিএফইউজে ও ডিইউজে নেতৃবৃন্দ। শনিবার সকাল ১১টায় ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। একই সময়ে সারাদেশে সকল অঙ্গ ইউনিয়নে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে।
মতামত দিন