সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০৫ পূর্বাহ্ন
এম আই ফারুক আহমেদ, কালের খবর :
ঘুষ দুর্নীতির বরপুত্র ময়মনসিংহ বিআরটিএ সহকারী পরিচালক এ এস এম ওয়াজেদ হোসেন এর বিরুদ্ধে সেবাপ্রার্থীদের সঙ্গে বাজে আচরণেরও অভিযোগ করেছে গ্রাহক গন। ময়মনসিংহে বিআরটিএ এক গণশুনানির আয়োজন করে । যেখানে বিআরটিএ’র সেবাপ্রাপ্তির নানা বিষয়ে সংস্থাটির স্থানীয় সহকারী পরিচালকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন একাধিক গ্রাহক। এ ছাড়া বিআরটিএ অফিসে বিভিন্ন হয়রানির বিষয়গুলোও উত্থাপন করেন তারা। তবে অভিযোগগুলো লিপিবদ্ধ করে তা সামাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বিআরটিএ অ্যানফোর্সমেন্ট শাখার পরিচালক ও যুগ্মসচিব মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক। মঙ্গলবার দুপুরে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে স্থানীয় বিআরটিএ অফিসের আয়োজনে টানা ২ ঘণ্টাব্যাপী এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
শুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিআরটিএ অ্যানফোর্সমেন্ট শাখার পরিচালক ও যুগ্মসচিব মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিআরটিএ’র বিভাগীয় উপপরিচালক সৈয়দ মেজবাদ উদ্দিন, সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাদ্দাম হোসেন, ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) এস এম মোহাইমেনুর রশিদ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ খোরশিদ আলম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লুৎফুন নাহার, সহকারী পরিচালক এ এস এম ওয়াজেদ হোসেন, সহকারী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম, উপসহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোফাজ্জল হোসেন, মোটরযান পরিদর্শক মো. রুহুল আমিন প্রমুখ।
শুনানিতে ভুক্তভোগী রাহেলসহ একাধিক গ্রাহক বলেন, ‘লাইসেন্সের ভুল সংশোধনের জন্য আবেদন করে মাসের পর মাস ঘুরেও মিলছে না প্রতিকার।’
একই সঙ্গে নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করে বিগত তিন থেকে চার বছর আগে ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েও হচ্ছে না লাইসেন্স নবায়ন। এর ফলে অনেক গ্রাহক বছরের পর বছর ধরে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলেও জানান কয়েকজন ভুক্তভোগী। সেই সঙ্গে মাসোয়ারা আদায়ের মাধ্যমে এ জেলায় প্রায় বিশ হাজারের অধিক সিএনজি অবৈধভাবে সড়ক-মহাসড়কে চলাচল করছে বলেও অভিযোগ করেন একাধিক শ্রমিক-কর্মচারী। সময় সহকারী পরিচালক এ এস এম ওয়াজেদ হোসেন বলেন, ‘বিগত ছয় মাসে মাত্র ৮টি সিএনজি লাইসেন্স নিয়েছে।’
এ সময় এক শোরুম কর্মকর্তা শুনানিতে বলেন, সংশ্লিষ্টদের গাফিলতির কারণে আমার একটি ফাইল এখন খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’ সেই সঙ্গে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় সড়ক-মহাসড়কে পর্যাপ্ত সাইড সিগন্যাল ও রোড মার্ক না থাকায় দুর্ঘটনা বাড়ছে বলেও অভিযোগ করেন এক শ্রমিক।
এ সময় ময়মনসিংহ বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক এ এস এম ওয়াজেদ হোসেনের বিরুদ্ধে সেবাপ্রার্থীদের সঙ্গে বাজে আচরণেরও অভিযোগ করেন একাধিক ভুক্তভোগীসহ একুশে টেলিভিশনের সাংবাদিক।
তবে গণশুনানিতে উপস্থিত সেবাপ্রার্থীদের অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে দ্রুত সময়ে তা সামাধানের আশ্বাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট অ্যানফোর্সমেন্ট শাখার পরিচালক ও যুগ্মসচিব মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি করে কেউ ছাড় পাবে না। ইতোমধ্যে একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তসহ নানা ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দুদকের মামলা চলমান আছে। আমরা গ্রাহকদের সেবার মান বাড়াতে কাজ করছি। তবে ডিজিটালাইজেশনের কারিগরি কাজে এখনও কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। সেগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের কাজ চলমান আছে। সেই সঙ্গে রেজিস্ট্রেশন ছাড়া আর কোনো নতুন যান বিক্রি করা যাবে না মর্মেও আইন করা হয়েছে। এ ছাড়াও সড়ক প্রস্তত্বকরণের পর তা যেন অবৈধভাবে দখল হয়ে না যায় সেদিক নিয়েও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। মোট কথা গ্রাহকসেবা পরিশুদ্ধ করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’
তিনি আরও বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা এড়িয়ে চলতে প্রচার-প্রচারণার পাশাপাশি নতুন আইনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে এক থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে।
এ জন্য যথাযথ প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্টদের আবেদন করতেও প্রচারণা চলমান আছে বলেও জানান বিআরটিএ’র এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। সম্প্রতি যখন থেকে ময়মনসিংহ বিআরটিএ’তে সহকারী পরিচালক এ এস এম ওয়াজেদ হোসেন যোগদান করে তারপর পর থেকেই ময়মনসিংহ বিআরটিএ দুর্নীতির হাতুর ঘরে পরিণত হয়।