রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৯ অপরাহ্ন
খুলনা ব্যুরো, কলের খবর :
‘কাজীর গুরু কেতাবে আছে, কিন্তু গোয়ালে নেই।’ পাটশিল্পের পর চিংড়ি মাছ শিল্পের রাষ্টায়ত্ত ব্যাংকের প্লেজ ঋণের এই শুভংকরের ফাঁকি ধরা পড়েছে। এই প্রক্রিয়ায় খুলনার স্টার সী ফুড ইন্ডাস্ট্রিস লি: প্রায় ২৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ করায় সোনালী ব্যাংক খুলনা কর্পোরেট শাখা জজ অর্থঋণ আদালতে মামলা দায়ের করেছে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে সিবিএ নেতারা খবরদারি করছে। : সোনালী ব্যাংক খুলনা কর্পোরেট শাখার পক্ষে সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার গাজী আল বেরুনী বাদী হয়ে মোট ২৫ কোটি ৮২ লাখ তিন হাজার দুইশ বিশ টাকা আত্মসাৎ করার জন্য এই মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় বিবাদী করা হয়েছে উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানের এমডি মো: সালাউদ্দিন, পরিচালক মো: ইকবাল হোসেন, মো: জাকির হোসেন ও মো: ইসমাইল হোসেনকে। : মামলার আর্জিতে বলা হয় যে, ৩৭ সাউথ সেন্ট্রাল রোড় অফিস স্থাপন করে স্টার সী ফুড ইন্ডাস্ট্রিস ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল। তারা তাদের গুদামে চিংড়ি মাছ প্লেজ দেখিয়ে সাড়ে ১৮ কোটি টাকার ঋণ গ্রহণ করেন। কিন্তু গুদামের মাছ পরীক্ষা করার জন্য ব্যাংকের ৫ সদস্য একটি ইনভেনট্রি টিম গেলে তাদের সহযোগিতা করা হয়নি। পরবর্তীতে ব্যাংক হতে প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্ত নোটিশ, লিগ্যাল নোটিশ দেবার পরও কোনো অর্থ পরিশোধ করেনি। প্লেজ ঋণ ছাড়া প্রকল্প ঋণ, হাইপো ঋণ মিলে এই প্রতিষ্ঠানের নিকট উল্লেখিত পাওনা দাঁড়িয়েছে। : ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে দায়ের করা মামলা আদালত গ্রহণ করে বিধি বিধানমত বিবাদীদের সমন জারি করেছেন। : উল্লেখ্য, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো গুদামে পাট ও চিংড়ি মাছ রাখার বিপরীতে সহজ শর্তে ঋণ দেয়া হয়। এই শর্তে গুদামের পণ্যটিই জামনাত হিসাবে রাখা হয়। কিন্তু গত বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের অডিটে ধরা পড়ে শুধু সোনালী ব্যাংকের খুলনার পাট গুদামে রেখে দেয়া চার হাজার কোটি টাকার কোনো হদিস নেই। এ ব্যাপারে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আইনি চূড়ান্ত নোটিশ দেবার পরও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। একইভাবে স্টার সী ফুড ইন্ডস্ট্রিস প্লেজ ঋণের চিংড়ি মাছ প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করলে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ইনভেনট্রি টিমের কাজে বাধা দিলেও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে থানায় কোনো এজাহার করা হয়নি। শুধু মাত্র অর্থ ঋণ আদালতে অর্থ আদায়ের জন্য ডিক্রির মামলা করা হয়েছে। : এ ব্যাপারে সোনালী ব্যাংকের খুলনা জোনের সদ্য বিদায়ী জেনারেল ম্যানেজার মোশারেফ হোসেন ঘটনা স্বীকার করে বলেন, ব্যাংক সিবিএ নেতাদের চাপে তারা আইনি ব্যবস্থা নিতে পারছিলেন না। তিনি বলেন, অর্থ ঋণ আদালতে মামলাটি অনেক কৌশল করে করা হয়েছে। তিনি স্বীকার করেন প্লেজ ঋণ নিয়ে ব্যবসায়ীরা ব্যাংককে জিম্মি করে ফেলেছে। তারা বর্তমানে কোনো গ্রাহককেই প্লেজ ঋণ দিচ্ছেন না। : তিনি আরো বলেন, পাট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত নোটিশ দিয়েও তারা কোনো আইনি ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। কারণ মন্ত্রণালয় নির্দেশে পাট ব্যবসায়ীদের ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। : :