বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন
তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি, কালের খবর :
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ডেপুটি কালেক্টর দেওয়ান আকরামুল হক তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা থানার কুমিরা ইউনিয়নের সরস্বতী ঘাট এলাকার ‘মেসার্স নূর ব্রিক্স’-এর কার্যক্রম বন্ধে চিঠি দেন ১০ অক্টোবর। ভাটামালিক সরকারি এই নির্দেশনা অমান্য করে চলতি মৌসুমেও ইটভাটার কার্যক্রম চালু রেখেছেন।
শুধু তাই নয়, ভাটার ইট তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে ভাটাসংলগ্ন বেড়িবাঁধের মাটি। এতে কপোতাক্ষ নদের এই বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
নূর ব্রিক্সের লাইসেন্সের মালিক সৈয়দ গোলাম মোস্তফা। তাঁর ছেলে সৈয়দ তানভির মোহাম্মদ ইটভাটাটি দেখাশোনা করেন। গোলাম মোস্তফার কাছ থেকে পাটকেলঘাটার জুজখোলার মৃত সাজ্জাত আলী শেখের ছেলে মো. খায়রুল ইসলাম ভাটাটি এফিডেভিটের মাধ্যমে কিনে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেন। জেলা প্রশাসকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ তদন্ত করে জনবসতি এলাকায় ভাটা স্থাপন, ভাটায় কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়ানো ইত্যাদি কারণে নূর ব্রিক্সের লাইসেন্স বাতিল করে লাইসেন্সের মূল মালিক সৈয়দ গোলাম মোস্তফাকে চিঠি দেয় (স্মারক নম্বর ০৫.৪৪.৮৭০০.০০৫.২০.০৩০.১৮)।
এদিকে বর্তমান ভাটামালিক খায়রুল ইসলাম মূল ভাটার নাম পরিবর্তন করে এমএনবি নামে অবৈধভাবে ভাটাটি চালু রেখেছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, খায়রুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে কপোতাক্ষের বেড়িবাঁধের মাটি কেটে এমএনবি ইট নির্মাণ করে আসছেন। এখানেই শেষ নয়, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ইট পোড়াতে কয়লার পরিবর্তে প্রথম থেকে জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করছেন।
সূত্র জানায়, কপোতাক্ষ নদ ভরাট হয়ে যাওয়ায় ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ২৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে খনন করে সরকার। এ সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কপোতাক্ষ নদের তীরে ৪৮ ফুট প্রস্থ ও ৩৫ ফুট উচ্চতার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে। বর্তমানে কুমিরা ইউনিয়নের সরস্বতী ঘাট এলাকায় মাত্র পাঁচ-ছয় ফুট প্রস্থ বেড়িবাঁধ রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ভাটা কর্তৃপক্ষ রাতে বেড়িবাঁধের মাটি কেটে ইট নির্মাণ করায় বাঁধটির এ অবস্থা হয়েছে।
কপোতাক্ষ উপকূলীয় এলাকাবাসীর দাবি, কপোতাক্ষের বেড়িবাঁধের মাটি অবাধে কেটে নেওয়ার ফলে যেকোনো সময় জোয়ারে বা বর্ষার পানিতে বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে যেতে পারে। এ অবস্থায় বিষয়টি তদন্ত করে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ চায় তারা।
এ বিষয়ে এমএন ব্রিকসের মালিক খায়রুল ইসলামের মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি ধরেননি। এমএন ব্রিকসের ম্যানেজার গিয়াস উদ্দীন বলেন, ভাটার জন্য নতুন করে অনুমতি নেওয়ার চেষ্টা চলছে।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীন জানান, তাঁর কাছে ইটভাটা বন্ধের বিষয়ে কোনো চিঠি আসেনি। এলে ব্যবস্থা নেবেন।