মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:১০ অপরাহ্ন
কালের খবর ডেস্ক :
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম ও সিলেটে ধরপাকড় শুরু করেছে পুলিশ। দুইদিন ধরে চলছে এ ধরপাকড়। সেই সঙ্গে দায়ের করা হচ্ছে নতুন নতুন গায়েবি মামলা। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিএনপির নেতারা এ অভিযোগ করেছেন। চট্টগ্রাম বিএনপির নেতারা জানান, রোববার একটি মামলায় জামিন নিতে গেলে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে কারাগারে পাঠান আদালত। একই মামলায় জামিনের আবেদন জানানো অন্য নেতাকর্মীদেরও কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এদিকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী জামিনের জন্য আদালতে গেলে আদালত চত্ত্বরে জড়ো হয় বিএনপি ও অঙ্গদলের হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক। সেখান থেকেও বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সবমিলিয়ে রোববার চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার হন ৬৩জন নেতাকর্মী। ওদিকে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর আদালতে জামিনকে কেন্দ্র করে পুলিশের কাজে বাঁধা দেয়ার অভিযোগে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্কর, যুগ্ম সম্পাদক ইয়াসিন কবির লিটন, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি গাজী সিরাজ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জমিরউদ্দিন নাহিদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলুসহ বিএনপি ও অঙ্গদলের ১৫০জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। এই মামলায় গতকাল বেলা ১১টার দিকে দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম ও মহানগর সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্করকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি গাজী সিরাজ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার ও পুলিশী হয়রানী নেতাকর্মীরা ঘরছাড়া হয়ে পড়েছে। এসব মামলায় নি¤œ আদালতে জামিনও মিলছে না। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আসন্ন সমাবেশকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে ধরপাকড় শুরু করেছে পুলিশ। এদিকে বিএনপির বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি কলিমউদ্দিন আহমেদ মিলন জানান, শুক্রবার রাতে রাতে সুনামগঞ্জ শহর থেকে ৫জন, ছাতক থেকে ৬জন, বিশ্বম্ভরপুর ও ধর্মপাশা থেকে ২জন ও জামালগঞ্জ ও জগন্নাথপুর থেকে ১জন করে বিএনপি ও অঙ্গদলের নেতাকর্মীকে গায়েবী মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়া প্রতিরাতেই নেতাদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ জানান, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রোববার মহানগর বিএনপি নেতা সাইদুর রহমানকে একটি গায়েবী মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আতঙ্কে নেতাকর্মীরা এখন গ্রেপ্তার আতঙ্কে বাড়িঘরে থাকতে পারছে না। তবে সমাবেশকে কেন্দ্র জনসাধারণের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ততা লক্ষ্য করছি। আশা করি, সমাবেশ সফল হবে। এদিকে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ মিয়া জানান, সম্প্রতি দায়েরকৃত গায়েবী মামলায় জামিনে থাকা সত্ত্বেও গত কয়েকরাত নিয়মিত আমার বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। আমাকে বাড়িতে না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের হয়রানী করছে। কোনভাবে যেন আমি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সিলেটের সমাবেশে অংশ না নিই সেই হুমকি দিয়ে গেছে। এছাড়া রোববার নোয়াখালীতে ১৮জন, রাজশাহী মহনগর স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা পাপ্পু ও ইব্রাহিমসহ ৪ জন, নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আতিকুর রহমান তালুকদার, যুবদলের সাবেক সভাপতি কাজী বাবলুসহ বিএনপি ও অঙ্গদলের ১০ নেতা, পঞ্চগড়ে ১জন, মেহেরপুরে ৪ জন, ৩ জন, রাজবাড়ীতে ২জন, খুলনায় ৪জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।