রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
জুলাই-আগষ্টে শহীদদের ছাড়া আর কারো প্রতি দায়বদ্ধতা নেই। কালের খবর পার্বত্য চট্টগ্রামের সম্ভাবনাময় অর্থকরী ফসল কাসাভা। কালের খবর চবি এক্স স্টুডেন্টস ক্লাব ঢাকা এর সভাপতি ব্যারিস্টার ফারুকী এবং সাধারণ সম্পাদক জিএম ফারুক স্বপন নির্বাচিত। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল সম্পন্ন। কালের খবর সীতাকুণ্ড হবে বাংলাদেশের অন্যতম মডেল উপজেলা : আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরী। কালের খবর মাটিরাঙ্গার গুমতিতে মহান বিজয় দিবসে বিএনপির শোভাযাত্রা ও পুষ্পস্তবক অর্পণ। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় মহান বিজয় দিবসে বিএনপির শোভাযাত্রা ও পুষ্পস্তবক অর্পণ। কালের খবর মুরাদনগরে সামাজিক সংগঠনের শীতের কম্বল বিতরণ। কালের খবর বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে ‘স্বাধীনতা সোপানে’ শ্রদ্ধা নিবেদন। কালের খবর জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার প্রধান কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন। কালের খবর
কালীগঞ্জের মানুষের সুখ-দুঃখের কথা গণমাধ্যমে তুলে ধরে অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ভাগ্য বদলে দিলেন প্রবীণ সাংবাদিক শেখ আলিম। কালের খবর

কালীগঞ্জের মানুষের সুখ-দুঃখের কথা গণমাধ্যমে তুলে ধরে অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ভাগ্য বদলে দিলেন প্রবীণ সাংবাদিক শেখ আলিম। কালের খবর

নিজস্ব প্রতিবেদক,  কালের খবর  :  কালীগঞ্জের উন্নয়নে অনেক অবদান সাংবাদিক আলিমের। ৪৫ বছর ধরে বাইসাইকেল চালিয়ে উপজেলার মানুষের সুখ-দুঃখের কথা গণমাধ্যমে তুলে ধরেছেন ৬২ বছর বয়সী প্রবীণ সাংবাদিক শেখ আবদুল আলিম। প্রায় ৪ যুগের কাছাকাছি সময় ধরে সাংবাদিকতা করা এই মানুষটি অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ভাগ্য বদলে দিয়েছেন।

শেখ আবদুল আলিমের বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের বোতলা গ্রামে। ওই গ্রাম থেকে উপজেলা শহরের দূরত্ব প্রায় ১৮ কিলোমিটার। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেখ আবদুল আলিম সীমান্তের প্রত্যন্ত এলাকায় কখনও পায়ে হেঁটে কখনও আবার বাইসাইকেল চালিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এরপর সেইসব তথ্য নিয়ে গ্রাম থেকে প্রতিদিন তিনি সাইকেল নিয়ে উপজেলা শহরে এসে সংবাদ তৈরি করে অফিসে পাঠিয়েছেন।
সাংবাদিকতা জীবনে তিনি সাপ্তাহিক রণাঙ্গন, দৈনিক জনতা, দৈনিক দিনকাল ও দৈনিক নয়া দিগন্তে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি দৈনিক মানব জমিনের কালীগঞ্জ প্রতিনিধি। এছাড়াও স্থানীয় লালমনিরহাট বার্তা ও রংপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক দাবানল পত্রিকায় বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন।

কোনো সংবাদ পাওয়ার পর সংবাদটি অফিসে না পাঠানো পর্যন্ত তিনি কখনও খেতেন না। অবাক করা বিষয় হলো, ১৯৭১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তার প্রকাশিত সংবাদগুলো তিনি এখনও সংগ্রহে রেখেছেন। একই সঙ্গে নিজেকে দক্ষ করে তুলেছেন প্রযুক্তিতেও। অনেকে এখনও প্রযুক্তির সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারলেও ৬২ বছর বয়সী শেখ আবদুল আলিম সংবাদ লেখার ক্ষেত্রে ব্যবহার করেন ল্যাপটপ, ছবি তোলার ক্ষেত্রে ক্যামেরা ও মডেম দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।
শেখ আবদুল আলিম সাংবাদিকতার পাশাপাশি একাধিক সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। সেই সঙ্গে তিনি অসংখ্য কবিতা, ছোট গল্প, প্রবন্ধ, সম্পাদকীয় ও নাটক লিখেছেন। তার লেখা প্রকাশিত হয়েছে অসংখ্য পত্রিকায়।

শেখ আবদুল আলিমের কাছে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হলো, ৪৫ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে তার কোনো সংবাদে আজ পর্যন্ত প্রতিবাদ প্রকাশিত হয়নি। সম্প্রতি কালের খবরের  সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় উঠে এসেছে তার ৪৫ বছরের সাংবাদিকতা জীবনের নানান ঘটনা।
২০০০ সালের ঘটনা। ওই সময় বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার ও ফাঁসি কার্যকর না হওয়ায় তিনি আত্মহত্যা করবেন বলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফ্যাক্স বার্তার মাধ্যমে একটি বার্তা পাঠান। ঘটনাটি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশের পর হৈচৈ পড়ে যায়। এ ঘটনার পর পুলিশ তাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর বর্তমান সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরজ্জামান আহম্মেদসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা কালীগঞ্জ থানা থেকে তাকে মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
শেখ আবদুল আলিম বোতলা গ্রামের মৃত শেখ আব্বাস আলী ছেলে। ১৯৭২ সালে তিনি এসএসসি পাস করেন। স্ত্রী মাহমুদা বেগম ৪ সন্তানের জননী। বড় ছেলে মাহাবুবুল আলম কাঞ্চন ও দ্বিতীয় ছেলে শেখ মজিবুল আলম মানিক। প্রথম মেয়ে কামেরি তানজিন জুঁই বাকপ্রতিবন্ধী ও দ্বিতীয় মেয়ে তাসমেরি তানজিন বেলি। দুই মেয়ের এলাকাতেই বিয়ে হয়েছে। ছেলেরা স্থানীয় চন্দ্রপুর বাজারে ব্যবসা করেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ভারতের দিনহাটায় ফুপুর বাড়িতে দৈনিক দাবানলের বর্তমান সম্পাদক খন্দকার গোলাম মোস্তফা বাটুলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে দিনহাটা থেকে প্রকাশিত তৎকালীন সাপ্তাহিক রণাঙ্গন পত্রিকায় যুদ্ধের একটি লেখা প্রকাশ পায়। এরপর থেকেই তিনি সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
১৯৯৪ সালে কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর এলাকায় ডায়রিয়ার মহামারি আকার ধারণ করে। দিনে দিনে মৃত্যু সংখ্যা বাড়তে থাকে। তখন সাংবাদিক আবদুল আলিম একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ডায়রিয়া প্রতিরোধে গ্রামে গ্রামে কাজ শুরু করেন। তার কাজের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে তাকে পুরস্কৃত করা হয়।

প্রবীণ সাংবাদিক আবদুল আলিম বলেন, আমার সাংবাদিকতার প্রেরণা জুগিয়েছেন দৈনিক দাবানল পত্রিকার সম্পাদক খন্দকার গোলাম মোস্তফা বাটুল ভাই। তার দেখানো পথে সাংবাদিকতা জীবনে সব সময় চেষ্টা করেছি পাঠককে নির্ভুল তথ্য দিতে।
ছেলে শেখ মুজিবুল আলম মানিক জানান, তার বাবা সাংবাদিক, এই পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমার বাবা অনেক কষ্টে আমাদের বড় করেছেন।
কালীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক পারভেজ লিটন বলেন, প্রবীণ সাংবাদিক আবদুল আলিম সাংবাদিকতা করতে গিয়ে অনেক কষ্ট করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com