বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন
শফিকুল ইসলাম, রায়পুরা প্রতিনিধি, কালের খবর :
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার পলাশতলী ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের দুই ছেলে সন্তানের জননী প্রবাসীর বউ তানিয়া আক্তারকে নিয়ে প্রেমিক সজিব মিয়া উধাও। এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে প্রেমিকের পুরানো বসতঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের দুই পক্ষের থানায় পাল্টা-পাল্টি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগ ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, একই ইউনিয়নের একই গ্রামের কামাল মিয়ার মেয়ে তানিয়া আক্তার ও প্রবাসী ইউসুফের সঙ্গে পারিবারিকভাবে ২০১০ সালে ইসলামী শরীয়ত বিবাহ বন্ধন হয়। তাদের সংসার জীবনে জোনায়েদ ও বায়োজিদ নামে দুই ছেলে জন্ম হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে, দুই ছেলে সন্তানের জননী প্রবাসীর বউ তানিয়া আক্তার ও প্রেমিক সজিব মিয়া ঘনিষ্ঠ আত্বীয়- স্বজন। সেই সুবাধে তাদের মধ্যে দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবৎ পরকীয়া ও মোটা অংকের টাকা আত্বসাৎ করে।
আমির, সুমন সহ নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানান, দুই ছেলে সন্তানের জননী ও প্রবাসীর বউ প্রেমিক সজিব মিয়ার সাথে দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবৎ পরকীয়া লিপ্ত। এ বিষয়ে আমরা এলাকাবাসী ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা স্থানীয় সালিসি দরবারে সমাধানের প্রবল প্রচেষ্টা করেছিলাম। তা সমাধান হয়নি। হঠাৎ প্রেমিক সজিব মিয়া ও প্রবাসীর বউ তানিয়া আক্তার দুই ছেলে বাড়িতে রেখে উধাও।
এ বিষয়ে প্রবাসী ইউসুফ বৃদ্ধা মা ফাতেমা জানান, আমার পুুত্রবধু তানিয়া আক্তার দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবৎ পরকীয়া করতো এবং আমার প্রবাসী ছেলে ইউসুফের সকল টাকা পয়সা সজিবকে দিয়া দেয়। এ ব্যপারে এলাকাবাসীর গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা স্থানীয় দরবার সালিসি সমাধান করার চেষ্টা করে ছিল। কিন্তু তা সমাধান হয়নি। কয়েকদিন পূর্বে প্রেমিক সজিবকে নিয়া আমার পুত্রবধু তানিয়া আক্তার দুই নাতি রেখে উধাও। এমন অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে স্থানীয় এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের পুরানো বসতঘর ভাংচুর করে ফেলে।
তিনি আরও জানান, আমার তিন ছেলেই প্রবাসী এবং আমার মেয়ে জামাই আঙ্গর,রফিকুল তাদের চাকুরী ও ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত।পুরুষ লোকেরা কেউ বেশি সময় বাড়িতে থাকে না। আমার মেয়ে ও জামাইদেরকে অযথা মিথ্যা ও হয়রানি করার জন্য রায়পুরা থানায় লিখিত অভিযোগ করে।পুরুষশূন্য থাকার কারণে আমার বড় মেয়ে নাছিমা বেগম বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করে।
প্রবাসী স্বামী ইউসুফ বিদেশ থেকে জানান,আমার বউ তানিয়া আক্তার পূর্বে আরও কয়েকবার পরকীয়ার ঘটনা ঘটায়।এ পরকীয়া ঘটনায় স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা সালিসি দরবার করে ও আমার নিকট ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমা চেয়ে আমার দুই ছেলে ও আমার বৃদ্ধা মা নিয়া সংসার শুরু করে।আমি সরল মনে বিশ্বাস করি।সরলতার সুযোগ নিয়া অভিযুক্ত প্রেমিক সজিব মিয়ার সাথে পূনরায় পরকীয়া লিপ্ত হন। দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবৎ আমার প্রবাসী কষ্টে টাকা পয়সা তার চাহিদা মতো লেনদেন করি। হঠাৎ কয়েকদিন পূর্বে প্রেমিক সজিব মিয়াকে নিয়া উধাও হওয়ার আমি খবর পাই। আমার দুই ছেলে বাড়িতে রেখে কয়েক ভরি স্বর্ণ অলংকার ও নগদ মোটা অংকের কয়েক লাখ টাকা নিয়া উধাও।
তাছাড়া তিনি আরও জানান, আমি প্রবাসে থাকা অবস্থায় আমার সাথে জালিয়াতি করে দশ লাখ টাকার জমিও আÍসাৎ করে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলামের সাথে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার শালার বউ তানিয়া দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবৎ প্রেমিক সজিব মিয়ার সাথে পরকীয়া লিপ্ত এবং প্রবাসী শালা ইউসুফ মিয়ার প্রবাসী রক্তমাখা কষ্টে টাকা পয়সা অভিযুক্ত সজিব মিয়া ও তার পরিবারকে নিয়মিত দিয়ে থাকে।এ ব্যপারে কয়েকবার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা সালিসি দরবারে চেষ্টা করে, তা সম্ভব হয়নি। আমার শালা ইউসুফ তার দুই ছেলে সন্তানের জননী ও প্রবাসীর বউ তানিয়া আক্তার হঠাৎ প্রেমিক সজিব মিয়ার সাথে উধাও হওয়ার খবর শুনি।এ দিকে প্রেমিক সজিব মিয়ার পুরানো বসতঘর স্থানীয় এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে ভাংচুরের খরব পাই।বসতঘর ভাংচুরের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
এ দিকে অভিযুক্ত সজিব মিয়ার মা লুৎফা বেগম জানান,পারিবারিক জেরে আমার বসতঘর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে স্থানীয় সন্ত্রাসী নিয়া অভিযুক্ত আঙ্গুর মিয়ার নেতৃত্বে ভাংচুর ও কয়েক ভরি স্বর্ণ অলংকার,কয়েক লাখ টাকা লুটপাট করে।
এছাড়া তিনি আরও জানান, আমার বসতঘর ভাংচুর ও লুটপাট বিষয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করি। দ্রুত সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ নিয়ে অযথা আমার বসতঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ক্ষতি পূরণ আদায় ও আমার পরিবার সকল সদস্যের উপযুক্ত বসবাস করার পরিবেশ সৃষ্টির অনুরোধ জানায় পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের প্রতি।
এ বিষয়ে রায়পুরা থানার পুলিশ উপপরিদর্শক শফিউল¬াহ জানান, দুই ছেলে সন্তানের জননী প্রবাসীর বউকে নিয়া প্রেমিক সজিব মিয়া উধাও। আমি দ্রুত সার্বিক আইনি পদক্ষেপ ব্যবস্থা নিয়া প্রেমিক সজিব ও দুই ছেলে সন্তানের জননী প্রবাসীর বউ তানিয়াকে উদ্ধার করার প্রবল প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।
এ ছাড়া রায়পুরা থানার পুলিশ উপপরিদর্শক মোজাম্মেল হক জানান, এই থানায় বসতঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমি দ্রুত সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছি এবং রাজনৈতিক ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গদেরকে বসতঘর ভাংচুর ও লুটপাটের বিষয়টি অবগত করেছি