বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ওলামাদের মধ্যে রুহানী ঐক্য প্রয়োজন : জামায়াত আমির। কালের খবর আ.লীগ নেতা সুমন খান গ্রেফতার। কালের খবর ৭ হাজারের বেশি অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন। কালের খবর নেতাকর্মীদের আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের আহবান : ওয়াদুদ ভুইয়ার। কালের খবর গুজব প্রতিরোধে সাংবাদিকদের কাজ করার আহ্বান জানালেন ব্রি. জে. শরীফ মো. আমান হাসান। কালের খবর শাহজাদপুর প্রেস ক্লাবের সহ- সভাপতি সাংবাদিক শিশিরকে প্রাননাশের হুমকি : থানায় জিডি। কালের খবর উত্তরায় ছাত্রদল নেতা মেহেদীর নেতৃত্বে মহড়া। কালের খবর সরকারি জমিতে দোকান তুলে আ.লীগ নেতার চাঁদাবাজি। কালের খবর সাম্প্রদায়ীক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় ওলামা মাশায়েখদের অগ্রণী ভুমিকা রাখতে হবে : আলহাজ্ব নুরুজ্জামান খাঁন। কালের খবর কিউয়েসার শপথ গ্রহণ। কালের খবর
শ্রমিক দলের নাম ভা‌ঙ্গিয়ে কাউন্টার দখলে নিতে এক শিক্ষার্থীকে পি‌টিয়ে রক্তাক্ত জখম করে দখলবাজরা। কালের খবর

শ্রমিক দলের নাম ভা‌ঙ্গিয়ে কাউন্টার দখলে নিতে এক শিক্ষার্থীকে পি‌টিয়ে রক্তাক্ত জখম করে দখলবাজরা। কালের খবর

 

মো : আঁখি নুর চৌধুরী, নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের খবর : ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তাদের দোসররা বিএনপি ও এর অংগসংগঠনের নাম ভাঙ্গিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার পায়তারা শুরু করেছে। যার ফলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা ভাংচুর দখলদারিত্ব শুরু করেছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ অক্টোবর ২০২৪ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সানারপাড় বাসষ্ট্যান্ডে পরিবহন কাউন্টার দখল করতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসময় কাউন্টার পরিচালক মাতুয়াইল হাজী আব্দুল লতিফ ভুইয়া ডিগ্রী কলেজের ইংরেজী বিভাগে অধ্যয়ণরত অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ ইব্রাহীম খলিল (জাহিদ) নামের এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করা হয়।

জানা যায়, সানারপাড় বাসষ্ট্যান্ডে পরিবহন কাউন্টারের মালিক জনৈক সোহাগ আহমেদ। তার কাউন্টারে ইব্রাহিম খলিল (জাহিদ) পড়াশুনার পাশাপাশি পার্টটাইম চাকুরী করে। গত ৩০ অ‌ক্টোবর দুপুরে নারায়নগঞ্জ শ্রমিক দলের পরিচয়ধারী জনৈক আলমগীর হোসেন, পিতা মৃত নেওয়াজ আলী এর নেতৃত্বে ইমরান, পিতা মৃত শাহাবুদ্দিন সহ আরো অজ্ঞাত ১০-১২জনের একটি দল কাউন্টারে এসে প্রথমে কাউন্টার চাঁদা দাবী করে। চাঁদা দিতে অপারগতা জানালে, চাঁদাবাজরা কাউন্টার বন্ধ করে চলে যেতে বলে। জবাবে কাউন্টারে কর্মরত ইব্রাহীম তাদের বলেন যে, মালিক সোহাগ কাকার সাথে একটু কথা বলেন, আমি কাউন্টার বন্ধ করে দিচ্ছি। এরপর আলমগীর ও তার লোকজন কাউন্টার বন্ধ করার হুমকী দিয়ে চলে যান। কিছুক্ষণ পর আলমগীরের নেতৃত্বে থাকা ইমরান নামক ব্যাক্তি দলবল নিয়ে এসে কাউন্টারে কর্মরত ইব্রাহীমকে এলোপাতাড়ি চড় থাপ্পড়সহ দেশীয় অস্ত্র বাশ কাঠ দিয়ে পিটাতে থাকে। এসময় তাকে উদ্ধার করতে আসা ইব্রাহীমের ছোট ভাই ও পাশে অবস্থিত এক চায়ের দোকানদার বাবু এগিয়ে আসলে তাদেরকেও এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। পেটানোর এক পর্যায়ে মাথা ফেটে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হলে, ইব্রাহীম দুর্বল ও অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এসব দেখে দৃর্বৃত্তরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে কাউন্টারের মালিক সোহাগ ও চা দোকানদার বাবু সহ আরো অনেকে ইব্রাহীমকে তুলে প্রথমে সানারপাড় ইষ্টভিউ হসপিটালে এবং পরবর্তীতে নারায়নগঞ্জের খানপুর সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা প্রদান করেন। তার শরীরে ও মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হাওয়ায় প্রচুর রক্তক্ষরন হয়। এতে তার শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে। আসংস্কাজনক অবস্থায় তার মাথায় সাতটি সেলাই করা হয়, হাতের এক্সরে করা হয়। চিকিৎসার এক পর্যায়ে ডাক্তার মাথার সিটিস্ক্যান করানোর পরামর্শ ও ঔষধ লিখে দেন এবং সম্পূর্ন বেড রেস্টে থাকতে বলেন।

চিকিৎসকের সাথে কথা বলে জানা যায়, মাথায় গুরুতর আঘাতের কারণে আগামী ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত তাকে সম্পূর্ন বিশ্রামে থাকতে হবে এবং তার জীবন এখন ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ঘটনার আকস্মিকতায় সবাই বিস্মিত। প্রতিবেশী সবাই জানায়, যে ইব্রাহীম ছেলেটা খুবই শান্ত শিষ্ট ও ভদ্র। বাসষ্ট্যান্ডের সবাই তাকে খুব ভালো জানে। সে অনার্স পড়ুয়া একজন ছাত্র। বেকার বসে না থেকে নিজ পড়াশুনার খরচ বহনের জন্য সে পার্টটাইম এই কাউন্টারে চাকুরি করে। কাউন্টার দখল বা কাউন্টার মালিকের সাথে কোন ঝামেলা থেকে থাকলে তাহলে তারা বসে সমাধান করতে পারত। কিন্তু কর্মচারী সাধারণ একজন শিক্ষার্থীকে এভাবে পিটিয়ে আহত করা কোনভাবেই কাম্য নয়। এবিষয়ে কাউন্টারের মালিক জনাব সোহাগ সাহেব ব‌লেন, কেন? কি জন্য এভাবে আমার একজন নিরীহ কর্মচারী যে কিনা একজন শিক্ষার্থী তার উপর এভাবে হামলা হলো তা বোধগম্য নয়। কাউন্টার যদি দখল করতেই হয় বা অন্যকোন চাহিদা থাকত তাহলে আমার সাথে কথা বলে সমাধান করতে পারত। এভাবে নিরীহ ছেলেটাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করা ঠিক হয়নি। এবিষয়ে আমি আইনী ব্যবস্থা নিব। হামলার বিষয়ে অভিযুক্ত আলমগীর হোসেনের সাথে কথা বলার জন্য ফোন করলে তিনি নিজেকে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের (পরিবহন) নারায়নগঞ্জ জেলার নেতা হিসেবে পরিচয় দেন। তবে কোন প্রকার পদপদবীর কথা উল্লেখ করেননি। হামলার বিষয়ে তিনি বলেন ‘আমি সেখানে উপস্থিত ছিলামই না আমি হামলা করব কিভাবে। আবার ইমরান এর বিষয়ে তিনি বলেন সে যে মারবে এটা ভাবতেই পারিনি। অথচ তারই নেতেৃত্বে ইমরান ও আরো অজ্ঞাত ১০-১২ জনের দল কাউন্টারে গিয়ে হামলা ভাঙচুর করে যা ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলে জানা যায়। এবিষয়ে এলাকার নেতৃস্থানীয় মোঃ জসিম এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, যে ভাই আমি হাজী মানুষ হজ ক‌রে আসছি মিথ্যা বলব না, কি জন্য বা কেনইবা ছেলেটাকে পিটিয়ে আহত করে তা বুজতে পারছিনা। তবে শুনছি আলমগীর ও ইমরানের নাম। এবিষয়ে তাদের কড়া বিচার করা উচিত বা আইনের আশ্রয় নিতে পারেন ভুক্তভোগীর পরিবার বা কাউন্টার মালিক। হামলার পর ভুক্তোভোগীর পরিবার থেকে থানা ও সেনা ক্যাম্পে যোগাযোগ করেন এবং এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ গ্রহন করেন। ভুক্তোভোগীর মা জানান আমার ছেলে বাজে কোন জায়গায় আড্ডা না দিয়ে নিজেই নিজের পড়াশুনার খরচ চালানোর জন্য সোহাগ ভাইয়ের কাউন্টারে পার্টটাইম চাকুরী করে। যদি আলমগীর ও ইমরানের সাথে কাউন্টারের মালিক এর কোন ঝা‌মেলা থা‌কে তাহ‌লে তার সাথে থাকবে। তারা নিজেরা বসে সমাধান করত। কিন্তু আমার ছেলেকে সোহাগ ভাইয়ের কাউন্টারে কাজ করার জন্য এভাবে পিটিয়ে আহত করবে তা কোনভাবেই মানা যায় না। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com