সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪৪ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ফ্যাসিস্ট আ.লীগের নেতা মোঃ কামরুল ইসলাম নান্টুর রাজধানী ঢাকায় আবাসিক হোটেলের নামে অবৈধ পতিতা, মাদক ও অস্ত্রের রমরমা ব্যবসা। কালের খবর শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় ইসলামী শ্রমনীতি চালু করতে হবে : আ ন ম শামসুল ইসলাম। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে পৌর বিএনপি। কালের খবর অন্তর্বর্তী সরকারের উদারতা কপালপোড়া জাতিকে অনন্তকাল ভোগাবে : হাসনাত। কালের খবর মাটিরাঙ্গা বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটির নেতৃত্বে জামাল-মুকুট। কালের খবর তিল ধারণের ঠাঁই নেই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। কালের খবর আমতলীতে ভূমি দস্যুর অত্যাচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন। কালের খবর নবীগঞ্জ প্রেস ক্লাব নির্বাচন সম্পন্ন : সালাম সভাপতি, ছনি সম্পাদক নির্বাচিত। কালের খবর সীতাকুণ্ডে জামায়াত নেতার ওপর হামলা, প্রতিবাদে মিছিল সমাবেশ। কালের খবর আমাকে ও আমার মেয়েদের কুপ্রস্তাব দেয় রাজ্জাক। কালের খবর
কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে কঠিন তিন পদক্ষেপ নেয়ার কথা ভাবছেন সিএমপি। কালের খবর

কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে কঠিন তিন পদক্ষেপ নেয়ার কথা ভাবছেন সিএমপি। কালের খবর

 

মোঃ শহিদুল ইসলাম, বিশেষ প্রতিনিধি, কালের খবর : চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী কিশোর গ্যাং সংস্কৃতি বর্তমানে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। হিরোইজম বা বাহাদুরি, কাঁচা টাকা–পয়সা, মাদকাসক্তি, সাংস্কৃতিক চর্চার নামে ছেলে–মেয়েদের অবাধে মেলামেশার তীব্র আকর্ষণ ইত্যাদি হাতছানি দিয়ে ডাকায় দ্রুত এ সমস্ত গ্যাং এবং তাদের সদস্য সংখ্যা বাড়ছে। সেই সাথে টিকটক, লাইকি ইত্যাদি নানান ধরনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও পথভ্রষ্ট হয়ে কিশোররা কিশোর গ্যাংয়ে নাম লেখাচ্ছে। ফলে সমাজকে ভেতরে ভেতরে উইপোকার মতো খুবলে খেয়ে ফেলছে এই অশুভ চর্চা।

সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় এ প্রসঙ্গে জানান, ২০১৯ সালে করা কিশোর গ্যাংয়ের একটি তালিকা আমাদের কাছে আছে। কিশোর গ্যাংয়ের সেই তালিকাটি হালনাগাদ করা হবে। পাশাপাশি এই গ্যাং কালচার দমাতে তিন উপায়ে কাজ করার কথা ভাবছে পুলিশ। এক. নতুন করে কিশোর গ্যাংয়ের সলিড তালিকা তৈরি করে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা। দুই. কিশোর গ্যাংয়ে জড়িত কিশোরদের অভিভাবকদের ডেকে এনে কাউন্সেলিং সভা করা। তিন. এসব গ্যাং কালচারে যেসব কথিত বড় ভাইরা ছায়া হয়ে আছেন তাদেরও সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আইনের আওতায় আনা।

র‌্যাব–৭ চট্টগ্রামের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মাহবুব আলম এ প্রসঙ্গে বলেন, দেশে কিছু অপসংস্কৃতির প্রভাব ঘটেছে, তার একটি হচ্ছে কিশোর গ্যাং। অন্যান্য জেলার মতো চট্টগ্রাম মহানগরীতে কিশোর গ্যাংয়ের আধিপত্য রয়েছে। এর প্রেক্ষিতে কিশোর গ্যাংয়ের ওপর নজরদারি রাখার পাশাপাশি আমরা অভিযান শুরু করেছি। বর্তমানে কিশোর গ্যাংয়ের যারা ধরা পড়ছে, তাদের অনেকের বিরুদ্ধে পূর্বেকার মামলা রয়েছে। আমরা সম্প্রতি এমন একজনকে পেয়েছি, যার বিরুদ্ধে খুনের মামলাও রয়েছে। খুব দুঃখজনক বিষয়টি। তিনি বলেন, পারিবারিকভাবে নৈতিক শিক্ষা আরও জোরদার এবং সন্তান কোথায় যায়, কার সঙ্গে মেশে– এসব বিষয়ে অভিভাবকদের আরও সচেতন হতে হবে।

গোয়েন্দা প্রতিবেদন ও গনমাধ্যম অনুসন্ধান বলছে, রাজনৈতিক নেতাদের মদদে দিন দিন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে কিশোর গ্যাং। পাড়া–মহল্লায় গড়ে ওঠা এসব গ্রুপের দৌরাত্ম্য রুখতে তালিকা হচ্ছে মদদদাতাদের। গত কয়েক বছর ধরে কিশোর অপরাধের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সিনিয়র–জুনিয়র দ্বন্দ্ব, সিগারেট খাওয়া, প্রভাব বিস্তারের জেরে হরহামেশা ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া, মারধর, সশস্ত্র হামলা, এমনকি খুন করতেও দ্বিধা করছে না তারা। গত এক বছরে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে অন্তত এক ডজন খুনের ঘটনা ঘটেছে।

২০১৯ সালে করা সিএমপির তালিকায় কিশোর গ্যাংয়ে মোট কিশোরের সংখ্যা ৫৩৫ জন। গ্যাংয়ের সংখ্যা ৪৭টি। তাদের নিয়ন্ত্রক কথিত বড় ভাইদের বেশিরভাগই সরকার দলীয় রাজনৈতিক নেতা নামধারী। তবে এ তালিকার অধিকাংশই ধরাছোঁয়ার বাইরে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

সিএমপির পশ্চিম বিভাগের চার থানায় কিশোর গ্যাং গ্রুপের সংখ্যা ১৪টি ও সদস্য সংখ্যা ৯৩ জন। এর মধ্যে ডবলমুরিং থানায় গ্রুপের সংখ্যা ৭টি ও সদস্য সংখ্যা ৪৫ জন। পাহাড়তলী থানায় সদস্য সংখ্যা ২২ জন ও গ্রুপের সংখ্যা ৩টি। হালিশহর থানায় গ্রুপের সংখ্যা ২টি আর সদস্য সংখ্যা ১৩ জন। আকবর শাহ থানায় সদস্য সংখ্যা ১৩ জন আর গ্রুপ হচ্ছে ২টি।

বন্দর বিভাগের দুই থানায় কিশোর গ্যাংয়ের নাম পুলিশের তালিকায় থাকলেও কর্ণফুলী ও পতেঙ্গায় কোনো কিশোর গ্যাং নেই বলে দাবি পুলিশের। ইপিজেড থানায় গ্রুপের সংখ্যা একটি আর সদস্য সংখ্যা ৮ জন। অন্যদিকে বন্দর থানায় গ্রুপের সংখ্যা ৩টি এবং সদস্য সংখ্যা ৩০ জন।

সিএমপির দক্ষিণ বিভাগের চার থানায় ১৬টি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য সংখ্যা ৩১৬ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কিশোর অপরাধীর সংখ্যা কোতোয়ালী থানায়। যার সদস্য সংখ্যা ১৫০ জন ও গ্রুপের সংখ্যা ৪টি। বাকলিয়া থানার গ্রুপের সংখ্যা ৩টি আর সদস্য সংখ্যা ১৮ জন। চকবাজারে গ্রুপের সংখ্যা ৭টি ও সদস্য সংখ্যা ১১৮ জন। সদরঘাট থানায় গ্রুপের সংখ্যা ২টি ও সদস্য সংখ্যা ৩০ জন।

একইভাবে সিএমপির উত্তর বিভাগের চার থানায় কিশোর গ্যাং গ্রুপের সংখ্যা ১৩টি ও সদস্য সংখ্যা ৮৮ জন। এর মধ্যে চান্দগাঁও থানায় গ্রুপের সংখ্যা ২টি ও সদস্য সংখ্যা ৩০ জন। পাঁচলাইশ থানায় সদস্য সংখ্যা ১৮ জন ও গ্রুপের সংখ্যা ৩টি। খুলশী থানায় গ্রুপের সংখ্যা ৬টি আর সদস্য সংখ্যা ৩২ জন। বায়েজিদ থানায় গ্রুপ ২টি এবং সদস্য সংখ্যা আট।

সিএমপি সূত্রে জানা যায়, নগরীতে নিয়মিত বসে আড্ডা দেয় সেরকম অপরাধপ্রবণ স্পটের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩০০টি। কোচিংভিত্তিক, রাজনৈতিক, স্কুল–কলেজভিত্তিক, চাকরিজীবী এই ধরনের অন্তত ১৫টি ক্যাটাগরির আড্ডার এই ৩০০ স্থান নির্ধারণ করা হয়েছিল বলে সিএমপির সূত্রে জানা গেছে।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com