শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৩৫ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
যৌথ বাহিনীর অভিযান: থানচি-রুমা-রোয়াংছড়ি ভ্রমণে বারণ সাতক্ষীরার দেবহাটায় ইউপি চেয়ারম্যান ও আ’লীগ সভাপতি সহ আহত পাঁচ। কালের খবর সাপাহারে রাতের অন্ধকারে ফলন্ত আম গাছ কাটল দূর্বৃত্তরা। কালের খবর বাঘারপাড়ায় হাঙ্গার প্রজেক্টের সামাজিক সম্প্রীতি কমিটির সাথে উপজেলা নির্বাহী অফিসার’র মতবিনিময়। কালের খবর রায়পুরায় মরহুম ডাঃরোস্তাম আলীর ২৭ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে ইফতার ও দোয়া মাহফিল। কালের খবর ভাতৃত্ববোধ সুদৃঢ় করতে রায়পুরাতে দোয়া ও ইফতার। কালের খবর রিয়াদে বাংলাদেশ প্রবাসী সাংবাদিক ফোরামের ইফতার মাহফিলে প্রবাসীদের মিলন মেলা। কালের খবর ঢাকা প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে স্বাধীনতা দিবসে গুনীজনদের আলোচনা সভা সম্পন্ন। কালের খবর আরজেএফ’র উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল সম্পন্ন। কালের খবর সাতক্ষীরার সুন্দরবন রেঞ্জে ২৪ জন হরিন শিকারীর আত্মসমর্পণ। কালের খবর
বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসায় ও বাসাবাড়িতে চরমভাবে ব্যাহত। কালের খবর

বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসায় ও বাসাবাড়িতে চরমভাবে ব্যাহত। কালের খবর

কালের খবর ডেস্ক :

মঙ্গলবার বিকালে সরেজমিন দেখা গেছে, হাসপাতালগুলোতে ভর্তি থাকা রোগীরা নানামুখী ভোগান্তিতে পড়েন। জরুরি বিভাগে এ সমস্যা ছিল প্রকট। রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা করাতে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মেশিনগুলো বিদ্যুতের অভাবে চলছিল না। ওয়ার্ড থেকে হাসপাতাল বারান্দা-টয়লেট কোথাও বিদ্যুৎ নেই। কেউ কেউ মোমবাতি জ্বালিয়ে অবস্থান করছিলেন। আবার অনেকে হাতপাখা দিয়ে রোগীদের বাতাস করছিলেন। চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয় ও নিরাপত্তাকর্মীরা রোগীদের চিকিৎসা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন।

বিদ্যুৎ না থাকায় হাসপাতালের সার্ভার ডাউন হয়ে যায়। বিলের পেমেন্টসহ দাপ্তরিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে। অনেক চিকিৎসক চেম্বারে এসে বিদ্যুৎ না থাকায় রোগী না দেখে চলে গেছেন।

মঙ্গলবার বিকালে ঢামেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (অর্থ ও স্টোর) ডা. আশরাফুল আলম সাংবাদিকদের জানান, একান্ত ভাবে যেখানে প্রয়োজন সেখানে জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে আইসিইউ ও ওটিতে জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জেনারেটর টানা ১২ ঘণ্টা চলবে, তারপর সম্ভব নয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুপুর থেকেই রাজধানীর সরকারি হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতাল-ক্লিনিক জেনারেটরের মাধ্যমে চালিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হয়। এসব হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ বলছেন, দ্রুততম সময়ে বিদ্যুৎ না এলে বড় ধরনের বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে। দুপুর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে বিদ্যুৎ না থাকায় রোগী-স্বজনরা বারান্দায় অবস্থান নেন। সাধারণ ওয়ার্ডগুলো একেবারেই অন্ধকার ছিল। কিছু হাসপাতাল ২ ঘণ্টা জেনারেটর চালিয়ে ২ ঘণ্টা বন্ধ করে আবারও চালু করে রোগীদের সহায়তা করছিল।

বেশ কয়েকজন হাসপাতাল স্টাফ জানান, কোনো হাসপাতালেই পর্যাপ্ত ডিজেল রাখা হয়নি। এক্ষেত্রে রাজধানীর বিভিন্ন পেট্রোল পাম্পও বিদ্যুতের অভাবে বন্ধ ছিল। ফলে পেট্রোল না মেলায় বহু হাসপাতালে জেনারেটরও চালানো সম্ভব হয়নি। হাসপাতালে পানির সংকটও চরম দেখা দেয়।

এদিকে শুধু হাসপাতাল নয়, আবাসিক এলাকায় বিদ্যুতের অভাবে পানি উত্তোলন না হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে পানি সংকট চরমে উঠে। বিদ্যুৎহীনতার মধ্যে বাসাবাড়িতে পানি সরবরাহ না থাকার ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ। খাবার পানি থেকে শুরু করে রান্নাবান্না, গোসল আর নিত্যকার কাজে সংকটের মধ্যে পড়েছেন তারা। লিফট বন্ধ থাকায় উঁচু ভবনে উঠানামায়ও কষ্টের মুখোমুখি হয়েছেন মানুষ।

সন্ধ্যায় মহাখালীর জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউট হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় রোগীদের দুর্ভোগ। জেনারেটর দিয়ে জরুরি বিভাগ, অস্ত্রোপচার কক্ষ, আইসিইউতে বিদ্যুৎ সরবরাহ চলছে। তবে ওয়ার্ডে বাতি জ্বলছিল না, প্রায় সব পাখা বন্ধ। রোগীদের স্বজনরা ওয়ার্ডে মোবাইলের বাতি কিংবা মোমবাতি জ্বালিয়ে আলোর ব্যবস্থা করেছিলেন। অনেকে বারান্দায়-ফ্লোরে বসে, শুইয়ে বাতাস করছিলেন।

চিকিৎসক-নার্সদের অনেকে বলছিলেন, অন্ধকারে সেবা নিশ্চিত করা যায় না। ইনজেকশন কিংবা প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা কোনোটাই যথাযথ হয় না। কোন কোন ওয়ার্ড, বেডে মোমবাতি রয়েছে, তবে তা যথেষ্ট নয়। মোবাইল ফোনের আলো দিয়ে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন নার্স-চিকিৎসকরা। বক্ষব্যাধির পাশের জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউট হাসপাতালের অবস্থা কিছুটা ভালো দেখা গেছে। সেখানে ওয়ার্ডে আলো আছে, তবে সব ফ্যান চলছিল না।

শেরে বাংলা নগরের জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালেও বেলা ৩টা থেকে বিদ্যুৎ ছিল না। রোগীর স্বজনরা জানান, ৫টার পর থেকেই ওয়ার্ড, বারান্দা অন্ধকার হতে শুরু করে।

পুরান ঢাকার ইসলামপুরের ব্যবসায়ী মিলন চৌধুরী জানান, পুরান ঢাকা এমনিতে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। দুপুর ২টার পর বিদ্যুৎ চলে যায়। সেই থেকেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। ওই সময় পানি সরবরাহও বন্ধ হয়ে যায়। মসজিদ থেকে মাইকিং করা হয় অজু করে নামাজে যেতে। মসজিদে পানির সংকট দেখা দেয় বিদ্যুৎ যাওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই। দুপুরের দিকে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় সাধারণ রান্নাবান্না, গোসল করার ক্ষেত্রে বিশেষ সমস্যায় পড়তে হয় বাসিন্দাদের।

সেগুনবাগিচার বেশ কয়েকটি উঁচু ভবনের স্টাফদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কয়েক ঘণ্টা ডিজেলচালিত জেনারেটর দিয়ে সার্ভিস দেওয়ার চেষ্টার পর আর সম্ভব হয়নি। তেল ফুরিয়ে যাওয়ায় ঢাকার বিভিন্ন ফিলিং স্টেশনে ডিজেলের জন্য দেখা দিয়েছে লম্বা লাইন। সেখানেও যথাযথ তেল পাওয়া যাচ্ছিল না। দুপুরের পর থেকেই লোকজন কনটেইনার নিয়ে তেলের জন্য বিভিন্ন তেলের পাম্পে ভিড় জমান।

এদিকে হাতিরঝিল এলাকায় লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে বিকাল থেকেই। বিদ্যুৎবিহীন বাসাবাড়ি-ভবনে থাকা সাধারণ লোকজন ঝিলের পাড়ে অবস্থান নেন। সুজন নামের এক বাসিন্দা জানান, তিনি হাতিরঝিল ঢাল পাড় থাকেন। তিনি শুধু নন, প্রায় শতাধিক মানুষ বাসাবাড়ি থেকে বেরিয়ে হাতিরঝিলে অবস্থান নেন-একটু স্বস্তি পাওয়ার জন্য।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com