সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৩ পূর্বাহ্ন
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি, কালের খবর :
কখনও তিনি ডিবি পুলিশের ক্যাশিয়ার। কখনও পুলিশের সোর্স। আবার কখনো অনলাইন টিভির রিপোর্টার। এমন নানা পরিচয় ব্যবহার করে তিনি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছেন চুক্তিতে। ক্ষণে ক্ষণে পরিচয় বদলানো মানুষটির নাম বেলাল হোসেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নগরের বাণিজ্যিক এলাকাখ্যাত আগ্রাবাদ এলাকায় রয়েছে বেলালের দোর্দণ্ড প্রতাপ। এই ‘বহুরূপী’ বেলাল রীতিমত অতিষ্ঠ করে তুলেছেন আগ্রাবাদ, মনসুরাবাদ, মুহুরি পাড়াসহ অন্যান্য এলাকার ব্যবসায়ীদের।
শুধু ব্যবসায়ী নয়, সাধারণ মানুষরাও বাদ পড়ছেন না। তাঁর বিরুদ্ধে এলাকায় অভিযোগের পাহাড়। তবুও তিনি অদৃশ্য কারণ ধরাছোঁয়ার বাইরে। প্রশাসনও তাঁর ব্যাপারে অনেকটা নমনীয় ভূমিকা পালন করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী একাধিক ব্যবসায়ী জানান, ডিবির ক্যাশিয়ার পরিচয় দিয়ে ‘মাসিক চুক্তি’ করার ‘নির্দেশ’ দিয়ে বেলাল প্রথমে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের মোবাইল নম্বরে মেসেজ পাঠান । চুক্তিতে না এলে ‘ব্যবসা বন্ধ’ জানিয়ে দেওয়া হয় হুমকি। ভয়ে বাধ্য হয়ে রাজি হতে হয় তাঁর কথায়।
এদিকে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পশ্চিম জোনে কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁর ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে দায় সেরেছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বেলাল হোসেন সাবেক এক পুলিশ কর্মকর্তার ‘সোর্স’ হিসেবে আগ্রাবাদ এলাকায় পরিচিত। বেলালের সহযোগী ক্যাশিয়ার হিসেবে ‘দায়িত্ব’ পালন করেন বায়েজিদ থানার সাবেক ‘ক্যাশিয়ার’ জাহাঙ্গীর। তাঁরা দুজন মিলে ‘ডিবির ক্যাশিয়ার’ পরিচয়ে মাসিক চুক্তি করতে এলাকার ব্যবসায়ীদের মোবাইল ফোনে মেসেজ পাঠান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী এক ব্যবসায়ী বলেন, ১৫ আগস্ট বেলাল ডিবি পশ্চিম জোনের ‘ক্যাশিয়ার’ পরিচয়ে মাসিক চুক্তির জন্য মোবাইলে মেসেজ (ক্ষুদে বার্তা) পাঠিয়েছেন। আমার পাশাপাশি অন্যান্য ব্যবসায়ীদের কাছে মেসেজ এসেছে। চুক্তিতে না এলে ব্যবসা বন্ধ জানিয়ে দিয়ে হুমকি।
ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ীর মোবাইলে আসা মেসেজের নম্বরে শুক্রবার (২০ আগস্ট) ফোন করেন প্রতিবেদক। বেলাল নিজেকে ডিবি পশ্চিম জোনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ‘ক্যাশিয়ার’ পরিচয় দিয়ে বলেন, তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল সিমটি ‘ডিবির ক্যাশ’ থেকে দেওয়া।
জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগে যারা ক্যাশিয়ার ছিলেন তারাও এই সিমটি ব্যবহার করতেন। দায়িত্ব পাওয়ার পর বর্তমানে সিমটি আমি ব্যবহার করছি।
এসব বিষয়ে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ডিবি-পশ্চিম) ফারুকুল হকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘ডিবির কোনো ক্যাশিয়ার নেই। এ ধরনের পরিচয় দিয়ে কেউ চাঁদা দাবি করলে আমাদের কাছে ধরিয়ে দেবেন।