সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৭ পূর্বাহ্ন
এম আই ফারুক আহমেদ, কালের খবর :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানার এএসআই নুরুল হাকিমের বিরুদ্ধে পকেটে গাঁজা ঢুকিয়ে মামলাসহ বিভিন্ন চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তিনি চাঁদাবাজি করেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
তার দায়িত্বে রয়েছে থানার জিনোদপুর ইউনিয়ন। ইউনিয়নের বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এএসআই মো. নুরুল হাকিম থানায় যোগ দেওয়ার পর থেকেই নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়েছেন। ব্যবহার করেন আইফোন আর ফেজারের মতো দামি ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল। চলাফেরা করেন রাজকীয়ভাবে।
নবীনগর উপজেলার মালাই বাঙ্গরা গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী মো. কাজল মিয়ার স্ত্রী তাসলিমা আক্তার বলেন, আমার চাচা আবদুল্লা সৌদি আরবে আমার স্বামীর সঙ্গে থাকেন। এক লোক সৌদি যাওয়ার সময় আমার চাচি বাঙ্গরার নিয়ামের কাছে কিছু গরুর ভুঁড়ি দিয়েছিল। এই তরকারি খেয়েছিল আমার স্বামী ও তার রোমের বন্ধুরা। এ ঘটনায় মোবাইল ফোনে আমার ফুফাতো বোন হেনা ঝগড়া করেছিল আমার স্বামীর সঙ্গে। পরে হেনা ও আমার চাচি থানায় অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় পরে এএসআই হাকিম আমার বাড়িতে এসে হেস্ত-নেস্ত করার ভয় দেখায়। অভিযোগে ৮ জনের নাম দিয়েছিল। পরে হাকিম দারোগাকে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে রক্ষা পেয়েছি।
বাঙ্গরা বাজারের এক ডেকোরেটর দোকানের কর্মচারী আফজাল মিয়া বলেন, গত ২৮ মে আমি বাজারে যাওয়ার সময় হাকিম দারোগা আমার পকেটে গাঁজা দিয়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। আমি ভয়ে ২৫ হাজার টাকা দিতে চেয়েছিলাম। ৫০ হাজার টাকা না দেওয়ায় আরও বেশি গাঁজা দিয়ে আমাকে গাজা ব্যবসায়ী হিসেবে মারধর করে চালান করে দেয়।
এ ব্যাপারে মোটরসাইকেল মেকানিক বাশার মিয়া বলেন, আমি ২ হাজার টাকা দিয়ে থানা থেকে আমার মোটরসাইকেল ছাড়াইয়া নিছি। হাকিম দারোগা ৫ হাজার টাকা চাইছিল।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে থানার এক কনস্টেবল বলেন, মোটরসাইকেলটি ছাড়ানোর জন্য আমার মাধ্যমে বাশার দুই হাজার টাকা দিয়েছিল এএসআই নুরুল হাকিমকে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী সুমন মিয়া বলেন, আমার সেচ প্রকল্প নিয়ে গত ২৫ জুন নবীনগর থানায় একটি জিডি করতে গিয়েছিলাম। তদন্ত করতে এসে হাকিম দারোগা ৪ হাজার টাকা নিয়েছে। এখন জিডি তুলে নেব। সে আরও ৫ হাজার টাকা দাবি করছে। জিডি করতে যদি এত টাকা লাগে তাহলে আমরা সাধারণ মানুষ যাব কোথায়?
এ বিষয়ে জিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রউফ বলেন, এএসআই হাকিম একটু বেপরোয়াভাবে চলাফেরা করে। এলাকার মানুষ তার কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে এএসআই মো. নুরুল হাকিম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কারও কাছ থেকে কোনো টাকা নেইনি। তবে সৌদি আরবে গরুর ভুঁড়ির ঘটনায় জিডি হয়েছিল। সেই ঘটনায় স্থানীয়ভাবে মীমাংসা হয়েছে। আমার নামে নাকি কে টাকা নিয়েছে শুনেছি কিন্তু আমি কোনো টাকা নেইনি।
এ বিষয়ে নবীনগর থানার ওসি আমিনুর রশিদ বলেন, সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।