সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২০ পূর্বাহ্ন
অতিরিক্ত ভারায় মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারে দূর-দূরান্তে যাচ্ছেন যাত্রীরা
এম আই ফারুক আহমেদ, ঢাকা, কালের খবর :
ঘরমুখো মানুষকে গ্রামে-গঞ্জে পৌঁছে দিতে অভিনব ‘সিটিং সার্ভিস’ চালু হয়েছে নারায়ণগঞ্জে। লকডাউনে দূরপাল্লার গণপরিবহণ চলাচলে বিধিনিষেধ থাকলেও শত শত মানুষ আরামদায়ক এই ‘সিটিং সার্ভিস’ সুবিধা নিয়ে বাড়ি যাচ্ছে। এসি-নন এসি মাইক্রোবাস আর প্রাইভেট কারে এই সার্ভিস দেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ট্রাফিক পুলিশকে ম্যানেজ করেই যাত্রী নিয়ে দূরদূরান্তে যাচ্ছে এসব গাড়ি। খোদ ট্রাফিক পুলিশের বক্সের সামনেই এসব মাইক্রোবাস আর প্রাইভেট কারে যাত্রী তোলা হচ্ছে।
সরেজমিনে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের সাইনবোর্ডে দেখা যায়, তিন রাস্তার মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের বক্স। এখানে বেশ কিছু দূরপাল্লার বাস সার্ভিসের টিকিট কাউন্টার রয়েছে। ওই ট্রাফিক বক্সের সামনেই রীতিমতো মাইক্রোবাসের অস্থায়ী স্ট্যান্ড তৈরি করা হয়েছে। সিএনজি ও দূরপাল্লার বাসের লাইনম্যানরা এখন এসব মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কারের দায়িত্ব পালন করছেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেখানে বাস সার্ভিসের টিকিট কাউন্টার এখন মাইক্রো কাউন্টারের কাজ করছে। সাইনবোর্ড থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত নন এসি মাইক্রোবাসে প্রতি যাত্রীর ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৪শ টাকা। এসি সার্ভিসে ভাড়া ৭শ থেকে ৮শ টাকা। তবে দিনে ও রাতে ভাড়া কমবেশি হয়। একটি হাইএস মাইক্রোবাসে ১৫ জন যাত্রী নেওয়া হয়। কুমিল্লা ছাড়াও অন্যান্য জেলাতেও যাচ্ছেন যাত্রীরা। মাইক্রো বা প্রাইভেট কারের পাশাপাশি গভীর রাতে এখান থেকে ছাড়া হয় ছোট আকারের পিকআপ ভ্যান। পিকআপ ভ্যানে যাত্রীর বসার সুবিধা নেই বলে ভাড়া জনপ্রতি ২শ টাকা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন লাইনম্যান ও বাস সার্ভিসের কর্মচারী বলেন, বাস বন্ধ থাকায় এই ব্যবস্থা, ট্রাফিক পুলিশকে ম্যানেজ করেই এগুলো চলছে। এখান থেকে কুমিল্লা, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ ১৫-১৬টি জেলায় যাত্রীরা যাতায়াত করছে। যে ভাড়া নেওয়া হয় তার মধ্যে যাত্রীপ্রতি ট্রাফিক পুলিশকে ১শ’ থেকে ২শ টাকা দিতে হয়।
অন্য জেলার ট্রাফিক বা পুলিশ গাড়ি আটকালে কী করেন এমন প্রশ্নের জবাবে তারা জানান, ওইসব জেলা থেকেও তো মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকারে যাত্রীরা মাঝে মাঝে আসে। সব মিলেমিশেই হয়, তবে অন্য জেলায় আটকালে সেখানেও মাঝেমধ্যে টাকা দিতে হয়।
সরেজমিন চিটাগাং রোডে গিয়েও একই চিত্র দেখা যায়। এখান থেকেও একই কায়দায় দূরদূরান্তে যাত্রী সার্ভিস দেওয়া হচ্ছে, তবে সেটি রাতে। এখানে নিযুক্ত লাইনম্যানরা জানান, দিনের বেলায় এখানে ঢাকামুখী ও ঢাকা থেকে আসা হাজার হাজার যানবাহন সামাল দিতেই হিমশিম খেতে হয় তাদের। তাই রাতের বেলা যাত্রী ওঠানো হয়।
এ ব্যাপারে জেলা ট্রাফিকের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি বিষয়টি জানি না। পুলিশ বক্সের সামনে যাত্রী ওঠানামা বা এই সময়ে যাত্রী অন্য জেলায় পরিবহণের কোনো সুযোগ নেই। কেউ করলে সেটা অবশ্যই আইনত দণ্ডনীয়। এমনটি হয়ে থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।