ফারুককে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া সেই তিন যুবক উল্টো এখন মামলার আসামি হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে ফারুক মিয়া বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে শুক্রবার ঘটনার মূলহোতা নবীনগরের ধরাভাঙ্গা গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার ছেলে জালাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। মামলার অন্য আসামিরা হলেন-নবীনগরের ধরাভাঙ্গা গ্রামের আফসার মিয়ার ছেলে মো. ফারুক ও জজ মিয়ার ছেলে লালন মিয়া।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার জয়কালিপুর গ্রামের মোহাম্মদ কবিরের ছেলে মোহাম্মদ ফারুক একটি মোটরসাইকেল বিক্রি করতে চান। পরে গত বুধবার পূর্বপরিচিত পার্শবর্তী নবীনগর উপজেলার ধরাভাঙ্গা গ্রামের আবসার উদ্দিন মিয়ার ছেলে মো. ফারুক মোটরসাইকেলটি কিনবেন বলে তাকে ধরাভাঙ্গা গ্রামে যেতে বলেন। পরে মোটরসাইকেলের মালিক ফারুক সেখানে গেলে ধরাভাঙ্গার ফারুকের সঙ্গে জালালও সেখানে উপস্থিত হন। পরে মোটরসাইকেলের টাকা দেয়ার কথা বলে মেঘনা নদীর তীরবর্তী এমপি টিলায় নিয়ে যাওয়া হয় ফারুককে। সেখানে প্রায় ১ ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়। এই সময়ের মধ্যেই চক্রটি সলিমগঞ্জ ফাঁড়িতে ফোন দিয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ আসার ৩-৪ মিনিট আগে মোটরসাইকেল মালিক ফারুকের পকেটে ২৯ পিচ ইয়াবা দিয়ে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে বুধবার সন্ধ্যায় ধরাভাঙ্গার ফারুক বাদী হয়ে জালাল ও হান্নানকে স্বাক্ষী করে একটি মিথ্যা এজাহার দেন। পরে মোটরসাইকেল মালিক ফারুকের পরিবার নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকবল হোসেনকে বিষয়টি জানান। তিনি বৃহস্পতিবার বিষয়টি তদন্ত করে আসল ঘটনা উদঘাটন করেন। পরে জালালকে ডেকে জিজ্ঞসাবাদ করলে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর কথা স্বীকার করেন তিনি। এসময় তাদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে ফারুককে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী ফারুক বলেন, আমাকে মাদক দিয়ে আটক করার খবর পেয়ে বন্ধুরা বিষয়টি নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকবল হোসেনকে জানান। তিনি বৃহস্পতিবার সারা দিন বিষয়টি তদন্ত করে আসল ঘটনা উদঘাটন করেন। আমার জীবন বাঁচিয়ে দিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। জালালকে ডেকে জিজ্ঞসাবাদ করলে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর কথা স্বীকার করেন তিনি। পরে আমি বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। পূর্বপরিচিত জালাল মোটরসাইকেল কেনার কথা বলে এমন প্রতারণা করবেন, এটা ভাবতেও পারিনি।
নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মকবুল হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে যখন বেশ কয়েকজন জানালো একজন ভালো ছেলেকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে, তখন আমি এক অফিসারকে দায়িত্ব দেই সরে জমিনে গিয়ে তদন্ত করতে। পরে জানতে পারি জয়কালিপুরের ফারুক নামের ছেলেটাকে ধরে নিয়ে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। পরে জালালকে ডেকে এনে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।