শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৩৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করে পশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলছে। কালের খবর সমাজে “শান্তি স্থাপন ও সহিংসতা নিরসনে — সাতক্ষীরায় তাপদাহে রিকশাচালকদের মাঝে পানি ও স্যালাইন বিতারণ। কালের খবর প্রচণ্ড তাপদাহে পুড়ছে বাগান, ঝরছে আম, শঙ্কায় চাষীরা। কালের খবর ট্রাফিক-ওয়ারী বিভাগ যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে। কালের খবর মারামারি দিয়ে শুরু হলো ‘খলনায়ক’দের কমিটির যাত্রা। কালের খবর কুতুবদিয়ার সাবেক ফ্রীডম পার্টির নেতা আওরঙ্গজেবকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন। কালের খবর সাতক্ষীরায় লোনা পানিতে ‘সোনা’ নষ্ট হচ্ছে মাটির ভৌত গঠন। কালের খবর সড়ক প্রশস্তকরণের কাজে অনিয়মের মহোৎসব। কালের খবর ইপিজেড থানা কমিউনিটি পুলিশিং এর উদ্যোগে আইন শৃঙ্খলা ও কিশোর গ্যাং প্রতিরোধ বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত। কালের খবর
দেশের আলোচিত প্রতারক সাহেদের গ্রেফতার কাহিনী । কালের খবর

দেশের আলোচিত প্রতারক সাহেদের গ্রেফতার কাহিনী । কালের খবর

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি, কালের খবর : 
 নুরুল ইসলাম, সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার কোমরপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি হোটেল ব্যবসায়ী। ফজরের নামাজের জন্য মসজিদে যান। নামাজ শেষ হওয়ার পরপরই তাদের কানে চিৎকার ভেসে আসে। শুরু হয় হইচই। ঘটনা কী দেখার জন্য দৌড়ে যান সবাই। গিয়ে যা দেখলেন সেটি তারা কল্পনাও করেননি আগে। দেশের আলোচিত প্রতারক সাহেদ করিমকে ধরে ফেলেছে র‌্যাব। দেবহাটা উপজেলার শাখরা কোমরপুর বেইলি ব্রিজের পাশে নর্দমার মধ্যে থেকে বোরকা পরা অবস্থায়  সাহেদকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে একটি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার বর্ণনা করতে গিয়ে নুরুল ইসলাম বলেন, আমরা যখন নামাজ শেষ করেছি সেই মুহূর্তেই তিনটি র‌্যাবের গাড়ি দ্রুতগতিতে চলে গেল। ২-৩ মিনিট পরই আওয়াজ আসতে লাগল আল্লাহু আকবার, ধরে ফেলেছি, ধরে ফেলেছি। আমিসহ মসজিদের মুসল্লি ও এলাকার বাসিন্দারা দৌড়ে ঘটনাস্থলে আসি কী ঘটেছে দেখার জন্য। গিয়ে দেখি বর্তমানের আলোচিত প্রতারক সাহেদ করিমকে ধরে ফেলেছে র‌্যাব। হাতে হাতকড়া পরাচ্ছে তখন। কাছে একটি পিস্তলও পেয়েছে।

তিনি ওই ব্রিজের পাশে একটি ছোট ড্রেন দেখিয়ে বলেন, ওইখানে একটি নর্দমার মতো রয়েছে। সেই ড্রেনের ভেতরে বোরকা পরে শুয়ে ছিলেন প্রতারক সাহেদ। শোয়া অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এ সময় তার পরনে শার্ট, প্যান্ট ও বোরকা ছিল। কোমরে ছিল একটি পিস্তল। পরে র‌্যাবের উপস্থিত জনতার সঙ্গে কথা বলে ও ছবি তুলে তাকে এখান থেকে নিয়ে যায়। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী গতকাল বুধবার সকাল ৯টার দিকে রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মো. সাহেদকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি ঢাকায় এসে পৌঁছে।

এলাকাবাসী মারতে চেয়েছিলেন সাহেদকে : করোনা মহামারির এ সময়ে সবাই যখন নিজেদের জীবন বাঁচানোর লড়াইয়ে ব্যস্ত তখন সাহেদের এমন প্রতারণার খবরে ক্ষুব্ধ দেশের মানুষ। যার প্রতিফলন দেখা গেল সাহেদ গ্রেফতারের পরে। গ্রেফতারের পর র‌্যাবের হেফাজতে থাকা অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে মারতে চেয়েছিলেন। সাতক্ষীরায় র‌্যাব যখন সাহেদকে ধরে নিয়ে আসছিল তখন এক কিশোর ভিডিও ধারণ করছিল। সেই কিশোর র‌্যাবেবের কাছে আবদার করে বলল; ‘সবাই মিলে একটু মারলে হইতো।’যদিও র‌্যাব ওই কিশোরের আবদার রাখেনি।

স্থানীয়রা জানান, র‌্যাবের হেফাজতে থাকা অবস্থায় ওই কিশোরের মতো বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী সাহেদের দিকে মারমুখী হন। কিন্তু র‌্যাবের বাধার কারণে তারা মারতে পারেননি। গ্রেফতার হওয়া সাহেদকে ঢাকায় র‌্যাবের সদর দফতরে নেওয়া হয়েছে। বুধবার সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে তাকে নিয়ে সেখানে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। র‌্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া ইউংয়ের পরিচালক আশিক বিল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মোটা হওয়ায় দৌড়াতে পারেনি : গ্রেফতারের পর তাকে নিয়ে আসা হয় র‌্যাব-৬-এর আওতাধীন সাতক্ষীরা র‌্যাব ক্যাম্পে। সেখান থেকে সকাল ৮টায় নিয়ে আসা হয় সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে। এরপর র‌্যাবের একটি বিশেষ হেলিকপ্টারে তাৎক্ষণিক তাকে ঢাকায় নেওয়া হয়। সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন র‌্যাবের এডিজি কর্নেল তোফায়েল আহম্মেদ। তিনি বলেন, আমরা তার (সাহেদ) গতিবিধি আগে থেকেই অনুসরণ করছিলাম। ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করছিল সাহেদ। তিনি সীমান্ত নদী ইছামতী দিয়ে ভারতে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। সেজন্য দালালদের সঙ্গেও যোগাযোগ করে। সাহেদকে যে দালাল সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছে তাকেও আমরা গ্রেফতার করব।

চুল ছেঁটে, গোঁফ ফেলেও লাভ হলো না : তিনি আরও বলেন, সাহেদের কাছ থেকে আমরা বিশেষ কিছু তথ্য পেয়েছি। সাহেদের বেশ পরিবর্তনের বিষয়ে র‌্যাবের এডিজি কর্নেল তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, চুলের রঙ পরিবর্তন করে সাদা চুল কালো করেছে সে। গোঁফ কেটে কালো করে ফেলেছে। তার প্ল্যান ছিল মাথা ন্যাড়া করার। ভারতে গেলে হয়তো ন্যাড়া করে ফেলত। র‌্যাবের এডিজি বলেন, সাহেদকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার কাজে সহযোগিতা করছিল একজন মাঝি, সে সাঁতরে পালিয়ে গেছে। তবে সাহেদ করিম মোটা হওয়ায় হয়তো দৌড়াতে পারেনি। যার কারণে তাকে আমরা ধরতে সক্ষম হয়েছি। বোরকা পরা অবস্থায় নৌকায় উঠে পালিয়ে যাওয়ার আগেই তাকে আমরা ধরে ফেলেছি।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com