সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন
লালমনিরহাট থেকে এম সহিদুল ইসলাম, কালের খবর : প্রাথমিক বিদ্যালয় শিশুকে জগৎ চেনার প্রথম পাঠ দেয়। মায়ের আদর-শাসনের পরিধি টপকে সেই তো প্রথম বাইরের সঙ্গে যোগাযোগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সেই শিক্ষার শুরু যদি ভুলপথে চালিত হয়, তবে শিশুর ভবিষ্যৎ তো অনাদরে হারিয়ে যাবে। আগামী প্রজন্ম যদি হেলায় লালিত হয়, তাহলে ভবিষ্যৎ অন্ধকারে। সেই অন্ধকারই গ্রাস করল লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার দলগ্রাম ইউনিয়নের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়কে। ছোট ছোট হাত অচেনাকে জানার বদলে প্রধান শিক্ষকের হুকুমে ইট বইছে ভ্যানে করে।
প্রধান শিক্ষকের প্ররোচনায় স্কুলে শিশুশ্রম। স্কুল পড়ুয়াদের দিয়ে শ্রমিকের কাজ করানোর অভিযোগ। ভ্যানে করে ইট বইতে দেখা গেল কচিকাঁচাদের। এই ঘটনায় অভিযোগের তির স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দিকে। অভিভাবক-সহ স্কুল লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা এই দৃশ্য দেখে আতঙ্কিত। যদিও শিশুদের ভ্যানে করে ইট বয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় শিক্ষকদের মধ্যে কোনও প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়নি।
এহেন ঘটনার পর রীতিমতো প্রশ্নের মুখে চলবলা দলগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার রায়।
বৃহস্পতিবার ১৮ জুলাই সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ,পুরাতন বেশ কিছু ইট ওই বিদ্যালয়ের কচিকাঁচা শিক্ষার্থীদের দিয়েই শ্রমিকের কাজ করানো হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের একপ্রান্ত থেকে এই ইট ভ্যানগাড়ীতে করে টেনে নিয়ে পৌঁছে দিচ্ছে মাঠের অন্য প্রান্তে । স্কুলের পোশাক পরেই ছেলেদের দিয়ে এই কাজ করানো হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক জানান, বাচ্চাদের দিয়ে যেভাবে ইট বহনের কাজ করানো হল, তা অমানবিক ও গর্হিত কাজ। প্রধান শিক্ষকের ভয়েই তারা এই কাজ করেছে।
এ বিষয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার রবিউল হাসান বলেন, স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থী দিয়ে ভারী কাজ করার কোন বিধান নেই। আমি খোজ নিয়ে বিষয়টি দেখতেছি।
এই প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার রায়ের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোমলমতি শিক্ষার্থী দিয়ে ইট বহনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এটা আমার রুটিন মাফিক কাজ। এখন ব্যাস্ত আছি বলে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এ বিষয় আমার কোন বক্তব্য নেই।আপনি প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য নেন।
স্কুল শিক্ষার্থীদের দিয়ে ভ্যানে করে ইট বহনের কাজ করানোর বিষয়ে এলাকায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে।