শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০৭ অপরাহ্ন
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি, কালের খবর :
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থাপতি ৬৪টি মাতৃকেন্দ্র দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে দখলে নেই সমাজসেবা অধিদপ্তরের। স্থানীয় কয়েক প্রভাবশালী ব্যক্তি এসব ভবনে প্রাইভেট স্কুল ও সংগঠনের নামে সাইনবোর্ড টানিয়ে দখল করে নিয়েছেন। আবার কোথাও কোথাও পরিত্যক্ত অবস্থায় ভবনগুলো পড়ে আছে।
গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে স্বনির্ভর করতে ১৯৭৫-৭৬ সালে শ্রম ও সমাজসেবা মন্ত্রণালয়ের অধিন দেশব্যাপী মাতৃ কেন্দ্রের বহুমুখী কার্যক্রম চালু করা হয়। যার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য মা ও শিশুর যতœ, টিকাদান কর্মসূচি, খাদ্য পুষ্টি, বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি, সার্বিক সাক্ষরতা আন্দোলন, পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণসহ ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করা। এসব কার্যক্রমের ফলে তখন মাতৃ কেন্দ্রেগুলোর কাজের পরিধি ক্রমেই বাড়তে থাকে। ফলে এর সুফল ভোগ করতে থাকে এলাকাবাসী। দেশব্যাপী যখন থেকে উপজেলা পরিষদ চালু হয়, তখন থেকে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাতৃ কেন্দ্রের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করতে থাকেন। তখন সরকারি, বেসরকারি ও বিদেশি দাতা সংস্থা ইউনিসেফ, আইইউসিডবিøউর দেওয়া অর্থে এ প্রকল্পের কাজের পরিধি দিন দিন আরও বাড়তে থাকে। ফলে উপকারভোগীরা হতে থাকেন আত্মনির্ভরশীল আর দেশ হতে চলে স্বাবলম্বী।
হঠাৎ করে ১৯৮৬-৮৭ সালে ইউনিয়ন পর্যায়ে সচল এসব মাতৃ বেন্দ্রের কার্যক্রম সরকার বন্ধ করে দেয়। সেই থেকে কর্তৃপক্ষের নীরবতা ও প্রয়োজনীয় তদারকি না থাকায় মাতৃ কেন্দ্র এসব ভবন হাতছাড়া হয়ে যায়। কথায় আছে, ‘সরকারি মাল দরিয়ামে ঢাল’- ঠিক তেমনিভাবে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা যে যার মতো করে সুযোগ বুঝে বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও সংগঠনের নামে দখলে নেন।
দখলদারদের একজন উপজেলার আলাদিপুর ইউনিয়নের আলাদিপুর গ্রামের ফণিন্দ্র নাথ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আলাদিপুর এলাকার মাতৃকেন্দ্র ভবনটি পরিত্যক্ত থাকায় এলাকাটি ঘেড়াবেড়া দিয়ে নিজ দখলে রেখেছেন। কর্তৃপক্ষ চাইলে তার প্রতিষ্ঠান এখান থেকে সরিয়ে নেবেন।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ১৯৭৫ থেকে ৭৮ সাল পর্যন্ত মাতৃ কেন্দ্রগুলো সচল ছিল। সে সময় মাতৃ কেন্দ্রের মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকার নারীদের স্বাবলম্বী আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। কিন্তু ওই কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মাতৃ কেন্দ্রগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। মাতৃ কেন্দ্রের সাথে জড়িত নারীদের আয়বর্ধক কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। মাতৃ কেন্দ্রের ভবনের খাজনা দাখিলা নিয়মিত পরিশোধ করা হয়ে থাকছে। তবে বর্তমানে এসব মাতৃ কেন্দ্রের ভবনগুলো কাগজ-কলমে সরকারের দখলে থাকলেও বাস্তবে তা নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম চৌধুরী বলেন, মাতৃ কেন্দ্রের ভবনগুলো বেদখলের বিষয়টি তাঁকে আগে কেউ জানায়নি। তবে সমাজসেবা কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে দ্রæত সরকারি সম্পদ দখলে নেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।