সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০৬ পূর্বাহ্ন
কালের খবর প্রতিবেদক :
‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ সংশোধনসহ আট দফা দাবিতে আজ রোববার সকাল ৬টা থেকে সারাদেশে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট পালন করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। ধর্মঘটের প্রথম দিনে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অফিসগামী সাধারণ কর্মজীবীরা। গাড়ি না পেয়ে পায়ে হেঁটেই অনেকে গন্তব্যস্থলে রওনা হয়েছেন। সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ অন্যান্য ব্যক্তিগত গাড়ি পাওয়া গেলেও চালকরা কয়েকগুণ বেশি ভাড়া নিচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, আব্দুল্লাহপুর, জসিমউদ্দিন রোড, এয়ারপোর্ট, খিঁলক্ষেত, বনানী, মহাখালী ও ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার ও সাতরাস্তাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে হাজার হাজার যাত্রী কাঙ্খিত গাড়ির অপেক্ষায় সড়কে দাঁড়িয়ে আছেন। অফিস সময় হওয়ায় অনেকে পাগলের মতো হন্য হয়ে খুঁজছে গাড়ি। গণপরিবহন ছাড়া সিএনজি, পাঠাও ও উবারের মতো গাড়ি পাওয়া গেলেও গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। বাধ্য হয়ে অনেকে বেশি ভাড়া দিয়ে অফিসে যাচ্ছেন।
তবে বাস না পাওয়ায় নারী ও বয়স্কদের পড়তে হয়েছে বেশি ভোগান্তিতে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ব্যক্তিগত গাড়ি ছাড়া রাস্তায় কোনো গণপরিবহন নেই।
এর আগে শনিবার শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি সংসদ সদস্য ওয়াজিউদ্দিন খান ও সাধারণ সম্পাদক উছমান আলী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। ফেডারেশনের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন যুগোপযোগী আধুনিক ও উন্নত সড়ক পরিবহন আইন প্রণয়নের দাবি করে আসছে।
সেই দাবিকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান সরকার আইন পাস করলেও বেশ কিছু ধারা শ্রমিক স্বার্থের বিরুদ্ধে করা হয়েছে। যে কারণে পরিবহন শ্রমিকদের চরম অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া আইনে সড়ক দুর্ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসেবে গণ্য না করে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে জামিন অযোগ্য করা হয়েছে। আমরা জানি, দুর্ঘটনা পরিকল্পিতভাবে ঘটে না। কিন্তু অপরাধ পরিকল্পিতভাবেই ঘটে।
পরিবহন শ্রমিকদের ঘোষিত আট দফ দাবি হল- সড়ক দুর্ঘটনায় মামলা জামিনযোগ্য করতে হবে, শ্রমিকদের অর্থদন্ড পাঁচ লাখ টাকা করা যাবে না, সড়ক দুর্ঘটনা তদন্ত কমিটিতে শ্রমিক প্রতিনিধি রাখতে হবে, ড্রাইভিং লাইসেন্সে শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি করতে হবে, ওয়েস্কেলে (ট্রাক ওজন স্কেল) জরিমানা কমানোসহ শাস্তি বাতিল করতে হবে, সড়কে পুলিশের হয়রানি বন্ধ করতে হবে, গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের সময় শ্রমিকদের নিয়োগপত্র সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সত্যায়িত স্বাক্ষর থাকার ব্যবস্থা করতে হবে, সব জেলায় শ্রমিকদের ব্যাপক হারে প্রশিক্ষণ দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করতে হবে এবং লাইসেন্স ইস্যুর ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধ করতে হবে।
শনিবার সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেন, আমাদের দাবি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহী। যদি দাবি পূরণ করা হয়, তাহলে আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করব।
এর আগে গত ১২ অক্টোবর শ্রমিক ফেডারেশন সিদ্ধান্ত নেয়, সড়ক পরিবহন আইন সংস্কারসহ আট দফা দাবি ২৭ অক্টোবরের মধ্যে পূরণ না হলে ২৮ অক্টোবর থেকে দুদিনের কর্মবিরতিতে যাবেন শ্রমিকরা।