রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০১ অপরাহ্ন
রত্না আহমেদ, নবীনগর দক্ষিণ, (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি, কালের খবর : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় বীর আব্দুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্তমঞ্চে মঙ্গলবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার উদ্যোগে এক কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় । অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামাতে ইসলামের আমির ডা.শফিকুর রহমান।
তিনি তার প্রধান অতিথির ভাষনে বলেন, সংবাদকর্মীরা তাদের লেখনীতে বের করে নিয়ে আসে, উনি অমুক জেলার ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন, তার পাঁচটি গাড়ি রয়েছে, ১০টি বাড়ি রয়েছে। এসব কলঙ্কজনক কথা বিচারকদের ব্যাপারে শুনতে চাই না। আমরা এমন একটি বিচার ব্যবস্থা চাই, যে ব্যবস্থা উঁচু-নিচু কাউকে ভাববে না। বিচারপ্রার্থীকে বিচার প্রার্থী হিসেবে দেখবে। কোনো বিচারপ্রার্থী যদি মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে হাজির হয়, তাহলে মিথ্যার অভিযোগের দণ্ডও তাকে পেতে হবে। আবার যদি কেউ সঠিক অভিযোগ নিয়ে আসে তাহলে ন্যায় বিচার থেকে যেন বঞ্চিত না হয়।
তিনি বলেন,পৃথিবীর অন্য ১০টি দেশ যেমন মর্যাদার সঙ্গে মাথা উঁচু করে বিশ্বের বুকে দাঁড়ায়, বাংলাদেশও ইনশাআল্লাহ তার শির উঁচু করে দাঁড়াবে। বিদেশে আমাদের বন্ধু থাকবে কিন্তু কোনো প্রভু মেনে নেব না। কেউ আমাদের সঙ্গে প্রভুত্ব দেখাতে আসলে জাতির কাছে তার সঠিক জবাব বুঝিয়ে দেবেন।
দলের নেতা–কর্মীদের উদ্দেশ্যে জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আমরা আগামীতে একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠন করতে চাই। সুতরাং আমাদের সীমাহীন ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি বৈঠার তাণ্ডব চালিয়ে বাংলাদেশের মানবতাকে গণতন্ত্রকে বাংলাদেশে জনগণের ইচ্ছা এবং আকাঙ্ক্ষাকে জবাই করা হয়েছে। ওই দিনই সত্যিকারার্থে বাংলাদেশ পথ হারিয়েছিল। দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর বহু ত্যাগ–তীতিক্ষা স্বীকার করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট নিজেদের আপন পথ ফিরে পেয়েছি।
বিচারিক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের হত্যা করা হয়েছে’ বলে অভিযোগ করেন শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সব খুনিদের বিচার করতে হবে। তবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্প্রতি গণ–আন্দোলনে যারা গণহত্যা করেছে, তাদের বিচার আগে করতে হবে। তাদের বিচার আগে এ কারণে করতে হবে; কারণ, শহীদদের তাজা রক্ত এখনো ভাসছে। আহত ব্যক্তিরা এখনো কাতরাচ্ছেন।
শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘ন্যাচারাল না আর্টিফিশিয়াল, জানি না, তারা (আওয়ামী লীগ) দাড়িও রাখা শুরু করেছেন। মাথায় টুপি দিচ্ছেন এবং আরেকটা রূপে ফিরে আসার চেষ্টা করছেন। একদিকে ধর্মপ্রাণ মানুষকে ধোঁকা দেওয়া, অন্যদিকে বিশ্ববাসীকে বার্তা দেওয়া চেষ্টাই আছে। আমরা তাদের মত হতে দিব না।
শফিকুর রহমান আরও বলেন, নিজের দলকে নিজেদেরই নিষিদ্ধ করার ইতিহাস তাদের আছে। তারা যখন একদলীয় বাকশাল কায়েম করে, তখন তারা তাদের দলসহ সব দল নিষিদ্ধ করেছিল। এবার জনগণ তাদের দল নিষিদ্ধ করেছে আল্লাহর সাহায্য নিয়ে।
জামায়াতের আমির বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তারা বিভিন্ন নামে দাবি নিয়ে আসছে। তাদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত না হয়ে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করছে। তারা আনসার লীগ নামায়, বিচার লীগ নামায়, বিভিন্ন বিষয়ে তারা দাবি লীগ, ওই দাবি লীগ নামিয়ে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আমীর গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মী সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, জামাতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা এ.টি.এম. মাসুম, কেন্দ্রী কর্মপরিষদের সদস্য ও কুমিল্লা মহানগর জামাতের আমীর কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা ও কুমিল্লা-নোয়াখালী অঞ্চলের টিম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা ও কুমিল্লা-নোয়াখালী অঞ্চলের টিম সদস্য সাবেক জেলা আমীর অধ্যক্ষ কাজী নজরুল ইসলাম খাদেম, সাবেক জেলা আমীর সৈয়দ গোলাম সারোয়ার, জেলা নায়েবে আমীর কাজী ইয়াকুব আলী, ইসলামী ছাত্র শিবিরের সভাপতি মো.আতিকুল ইসলাম ভূইয়া ও সেক্রেটারী হাসান মাহমুদ কেন্দ্রীয়, আঞ্চলিক ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এতে বক্তৃতা করবেন। কর্মীসভা পরিচালনা করেন জেলা সেক্রেটারি মুহাম্মদ মোবারক হোসাইন।