রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২৯ পূর্বাহ্ন
।। এম আই ফারুক আহমেদ, কালের খবর ।।
দেশের ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যম ও গণমাধ্যম কর্মীগণের অবদান সমাজের প্রথম শ্রেণিতেই। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সংবাদ মাধ্যম ও সাংবাদিকতা দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। উপরন্তু পরস্পর পরস্পরের পরিপূরক। পৃথিবীতে সাংবাদিকতার মতো এমন মহৎ পেশা খুব কমই পাওয়া যাবে। এ পেশাটিতে পরিপূর্ণ ভাবে বিচরণ করতে হলে যেমন বুকে সৎ সাহস প্রয়োজন তেমনি নৈতিকভাবেও স্বচ্ছতা দরকার। জ্ঞান-মেধা-প্রতিভার সম্মিলনে পূর্ণতা লাভ করে সাংবাদিকতা। একজন প্রকৃত সাংবাদিকের ক্ষুরধার লেখনীতে বদলে যায় অনেক অবহেলিত-নির্যাতিত-বঞ্চিত সমাজের চিত্র।
আবার তেমনি কুরুচিপূর্ণ বর্নচোরা বিকৃত মানুষিকতা পোষণকৃত কিছু অমানুষের অপ-সাংবাদিকতার রোষানলে পড়লে সমাজ তথা মেধাবী সৎ ও আদর্শবান মানুষের জীবন বিপন্ন হয়।
আর তেমনি কিছু কুচক্রী ও কুরুচিপূর্ণ ষড়যন্ত্রকারীরদের তথ্য সন্ত্রাসের শিকার জাতীয়তাবাদী চেতনার অবিসংবাদিত সাংবাদিক নেতা, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী।
সাংবাদিক নেতা কাদের গনি চৌধুরী বরাবরই সাংবাদিকদের দাবি আদায়ে সোচ্চার ছিলেন এবং আছেন। ওয়ান ইলাভেন থেকে আমি উনাকে চিনি। তখনও আমি দৈনিক দিনকালের সংবাদকর্মী ছিলাম, এখনও দিনকালের পরিবারের সাথেই আছি, তখন জনাব কাদের গনি চৌধুরীও দৈনিক দিনকালের মেধী সাংবাদিক ছিলেন । ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিনের সময় এই তরুণ সাংবাদিক নেতাকে দেখেছি রাজপথ কাঁপিয়ে বেড়াতে। অসীম সাহসী এই নেতা সে দিন থেকে আমাদের দৃষ্টি কেড়েছে। সে সময় জিয়া পরিবারের নাম নেয়া ছিল বড় অপরাধ। কিন্তু কাদের গনি চৌধুরীকে আমরা দেখেছি সে সময়ও দৈনিক দিনকালে প্রতিদিন জিয়া পরিবারের পক্ষে লিখতে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তিনি ছিলেন সোচ্চার।
সভা-সমাবেশ-সেমিনারে তার সাহসী বক্তব্য আমাদের উদ্বুদ্ধ করতো। ওয়ান ইলাভেনের আরেকটি ঘটনা সবাইকে অবাক করে দিল, বাংলা একাডেমির বই মেলা চলছিল। ঘোরতর ওই দুর্দিনে চরম সাহসীকতার সাথে কাদের গনি চৌধুরী ও ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম বাংলা একাডেমিতে গিয়ে তারেক রহমানের উপর লিখা একটা বইয়ের প্রকাশনা উৎসব করে ফেললেন। ওই সময় তারেক রহমানের নাম নেওয়াই ছিল নিষিদ্ধ। এভাবেই কাদের গনি চৌধুরী দিনের পর দিন জাতীয়তাবাদের আদর্শ নিজের মধ্যে লালন করে চলছেন।
গত ১৭টি বছর গণতন্ত্রের জন্য একটানা পরিশ্রম করে গেছেন নির্লোভ, নির্মোহ মানুষটি। ফ্যাসিস্ট সরকার যখনই বিএনপিকে ঘরে ঢুকিয়ে দিত, সভা-সভা-সমাবেশ করতে দিতো না; সামনে এসে হাজির হতেন তারুণ্যময়ী সৎ সাহসী বীর পুরুষ কাদের গনি চৌধুরী। সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে কখনো সাংবাদিকদের ব্যানারে, কখনো পেশাজীবীদের ব্যানারে কখনো অন্য ব্যানারে নেমে পড়েছেন রাজপথে।
সর্বশেষ ৪ জুলাই শিশু ও গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার পতনের আগের দিন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তাঁরই নেতৃত্বে পেশাজীবী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। শত শত রাউন্ড গুলির মুখে বুক চেতিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের পুলিশ বাহিনীকে বলেছিলেন, “আমাদের হত্যা কর, কিন্তু আর কোন ছাত্রকে হত্যা করো না”।
আমাদের দুর্ভাগ্য ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হতে না হতেই সাহসী বীর কাদের গনি চৌধুরীর বিরুদ্ধে একটি গোষ্ঠী নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত । তারা মিথ্যা কল্পকাহিনী বানিয়ে সৎ, মেধাবী ও আদর্শবান সাংবাদিক নেতা কাদের গনি চৌধুরীর চরিত্রহনন করতে চায়। এই কুচক্রী মহলটি জাতীয় প্রেস ক্লাবে তাদের স্বার্থ উদ্ধারে ব্যর্থ হওয়ার প্রেক্ষাপটে তারা সাচ্চা জাতীয়তাবাদী এই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে তথ্য সন্ত্রাসে লিপ্ত হয়েছে। তারা চাচ্ছে ত্যাগি এই নেতাদেরকে বিতর্কিত করতে পারলে জাতীয়তাবাদের শক্তিকে দুর্বল করা যাবে।
একটি পত্রিকায় লিখেছে কাদের গনি চৌধুরী চাঁদাবাজি করছে। আমি তাঁদের উদ্দেশ্যে বলি, এমনি মিথ্যাচার করতে একটুও কি বিবেক বাঁধ সাধলোনা! যে লোকটি কখনো বন্ধু-বান্ধবের অফিসে আড্ডা দিতে পর্যন্ত যান না, তার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যাচার। ছি: ছি: ছি:। এর নাম কি সাংবাদিকতা? আপনার পত্রিকা আছে, তাই যা ইচ্ছে তা লিখবেন-তাতো হতে পারে না। যার বিরুদ্ধে লিখছেন তার বক্তব্য নেয়ার প্রয়োজনবোধও করলেন না, এটা কি সাংবাদিকতার নীতি মালার মধ্যে পড়ে? সাংবাদিক নামধারী এসব ধান্ধাবাজদের কাছে আমার প্রশ্ন, মিথ্যা গল্প ফেঁদে উনাকে যে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করেছেন এর দায় কে নেবে? এখন পার পেলেন, পরকাকে কি জবাব দেবেন? এসব হলুদ সাংবাদিকদের রুখে দাঁড়ানোর এখনই সময়।
আমাদের কষ্ট হয়, এমন ব্যক্তির বিরুদ্ধে তারা লিখলো যিনি দূর্যোগে ও দু:সময়ে, সাংবাদিকদের রুটি-রুজির আন্দোলনের অগ্রনায়কের ভূমিকা পালন করে আসছেন। যিনি জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাসী সাংবাদিকদের বাতিঘর, আস্থার ঠিকানা। বিপদে-আপদে যার সহযোগিতা থাকে পিতার স্নেহ,মায়া-মমতায়, বটবৃক্ষের মতো। শত শত তরুণ সাংবাদিকের কাছে তিনি একজন “আইডল”। আদর্শবান মানুষ বলেই সাংবাদিকদের ভোটে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বার বার নির্বাচিত হয়েছেন। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হন পর পর দুইবার। বর্তমানে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব। জনপ্রিয়তাই কি তা হলে উনার জন্য কাল হলো?
কোনভাবেই অস্বীকার করার জায়গা নেই যে, কাদের গনি চৌধুরী একজন প্রতিভাবান, গুণী-জ্ঞানী, মেধাবী ও প্রথিতযশা সুশীল সাংবাদিক। তাঁর আদর্শিক কর্ম গুনের কারণেই তিনি সবার কাছে এতো প্রিয়। জনাব কাদের গনি চৌধুরীর ক্ষুরধার লেখনীতে ঢেউ উঠে সমাজের বৃহৎ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাপারে। তাঁর উদ্দম গতি মেধা ও অধিক যোগ্যতার ফলে তিনি পৌঁছাতে পেরেছেন সাফল্যের চরম শিকড়ে । তাঁর এই সফলতাকে মেনে নিতে পারছেন না কিছু বিপদ গামী সাংবাদিক। তাই এসব অযোগ্য, অপদার্থ, অথর্ব সাংবাদিকরা ঈর্ষান্বিত হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছে। যাদেরকে বলা হয়, “তথ্য সন্ত্রাসী”।
এই তথ্য সন্ত্রাস মূলত সৎ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে, সাংবাদিকদের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে।এরা জাতীয় শত্রু। তাই এদের কে আমি অপসাংবাদিক কিংবা হলুদ সাংবাদিক বলতে একেবারেই নারাজ। এক বাক্যে এরা তথ্য সন্ত্রাসী; যাঁদের হাতে নিরাপদ নয় এই দেশ, সমাজ, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সাংবাদিক নেতা কিংবা আগত ভবিষ্যৎ। এসব অযোগ্য, অপদার্থ, অথর্ব সাংবাদিকদের কারণে যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের পথ চলা দূরহ হয়ে পড়েছে। এমন মূর্তিমান তথ্য সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে, তথ্য সন্ত্রাসের আগ্রাসন ঠেকাতে হবে। নতুবা এর খেসারত দিতে হবে জাতিকে।
এধরণের টাউট সাংবাদিকদের কারণে সাংবাদিকতা পেশা মর্যাদা হারাচ্ছে। তাই এর লাগাম এখনই টেনে ধরতে হবে। এসব তথ্য সন্ত্রাসীদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ-প্রতিহত করতে হবে, এবং আইনের আওতায় আনতে হবে।