রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৫ পূর্বাহ্ন
মোঃ ইসমাইল কুষ্টিয়া প্রতিনিধি, কালের খবর :
কুষ্টিয়ার মাঝে প্রবাহিত অপরূপ প্রমত্ত গড়াই নদী আজ প্রায় মৃত অবস্থা। বসন্ত শেষ হতে না হতেই পানির খুব একটা অস্তিত্ব নেই কুষ্টিয়ায় প্রবাহিত গড়াই নদীতে। প্রমত্তা গড়াই এখন পরিনত হয়েছে ছোট খালে। সেই সাথে নেমে গেছে পানির স্তর। এর প্রভাবে কুষ্টিয়া পৌর এলাকাসহ এর আসে পাশের প্রায় লক্ষাধিক নল কুপে উঠছে না পানি। এমনকি পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এখানকার মানুষের পাশা পাশি জীব-বৈচিত্র পড়েছে হুমকীর মুখে। পানির জন্য চলছে হাহাকার। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে প্রাকৃতিক এই সমস্যা সমাধানে তাদের কিছুই করার নাই। তবে বৃষ্টি হলে অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে।
কুষ্টিয়া পৌরসভার দেয়া তথ্যমতে পৌর এলাকার ২১টি ওয়ার্ডে হোল্ডিং সংখ্যা ৩৭ হাজার, যার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই নিজস্ব নলকূপ আছে। এছাড়া পৌরসভার পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় দেয়া হয়েছে প্রায় ৫ হাজারের উপরে নলকূপ। পানির স্তর নেমে যাওয়ার কারনে এসব এলাকার প্রায় সব নলকুপই অকেজো হয়ে গেছে। যেগুলো কাজ করছে সেগুলোতে পানি উঠছে অতি সামান্য। ১ বালতি পানি তুলতে আধাঘন্টারও বেশি সময় লাগছে।
শুধু পৌর এলাকাই নয়, শহর সংলগ্ন হরিপুর ইউনিয়ন, কয়া, শিলাইদহ ইউনিয়ন সহ আরো অনেক এলাকায় চলছে পানির জন্য হাহাকার। তবে গড়াই নদীর তীরবর্তী বসবাস কর মানুষের অবস্থা সব চাইতে বেশি খারাপ। পানির সংকট এতটাই প্রকট যে খাবার পানির প্রয়োজনের পাশাপাশি গোছল, এবং গবাদি পশুর জন্য পানির ব্যাবস্থা করতে হিমশিম খাওয়া লাগছে। পানির জন্য নদীর চরের প্রায় দেড় দুই কিলোমিটার পথ হেটে যেতে হচ্ছে তাদের। এমন সংকটে এর আগে কখনো পড়েননি তারা।
গড়াই নদীর উপর অবস্থিত সৈয়দ মাসউদ রুমী সেতু এবং গড়াই ব্রীজের নিচে ড্রেজিং করার ফলে কিছুটা পানি প্রবাহ থাকলেও অধিকাংশ পিলার ধুধু বালির উপর অবস্থান করছে। সাধারণ মানুষ এই গড়াই নদীর অনেক স্থান দিয়ে হেঁটেই পার হচ্ছে। পানি শূন্য এই গড়াই নদী এখন শুধুই স্মৃতি। ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবেই এই গড়াই নদীর করুন দশা বলে অনেকেই মন্তব্য করছে।
কুষ্টিয়া পৌর কতৃপক্ষ বলছে, নদী গুলোর নাব্যতা না থাকার পাশাপাশি পানির স্তর বিগত বছর গুলোর তুলনায় ২৫ থেকে ৩০ফিট নেমে যাওয়ায় হস্ত চালিত নলকূপে পানি উঠছে না। পানি সরবরাহের বিকল্প ব্যবস্থা সক্রিয় না থাকায় বিপাকে পরেছে এখানকার জনজীবন। এমনকি পৌরসভার পক্ষ থেকে যে সাপ্লাই পানির ব্যাবস্থা করা আছে তার উৎপাদন ও অনেক কম। এটি একটি প্রাকৃতিক সমস্যা। বৃষ্টি শুরু হলেই এই সমস্যা অনেকটাই লাঘব হবে।
আর পানির স্তর এভাবে কমে যাওয়ার পেছনে যত্রতত্র গভীর নলকুপ ব্যবহারকে দায়ী করছেন প্রকৌশল অধিদপ্তর জনস্বাস্থ্য তারা বলছেন, শুস্ক মৌসুমে পানির স্তর নিচে নামার সাথে সাথে নদীর পানি শুকিয়ে যায় সেক্ষেত্রে যেসব নলকুপের লেয়ারকম দেয়া আছে সেসব নলকূপে পানি না ওঠারই কথা। সেক্ষেত্রে নতুন নলকুপ স্থাপনের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা মাফিক আরও গভিরে লেয়ার দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।