বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ১১:১৫ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
কোরবানির পশু প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সাতক্ষীরার খামারিরা। কালের খবর চট্টগ্রামের ইপিজেডে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন, ঘটনায় জড়িত মূল হোতাসহ ২জন গ্রেপ্তার। কালের খবর রাজধানী ঢাকা শহরে কোনো ব্যাটারিচালিত রিকশা চলবে না : সড়ক পরিবহনমন্ত্রী। কালের খবর সাতক্ষীরায় দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে ইয়াছিন আলীকে কুপিয়ে জখম। কালের খবর সাতক্ষীরার খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধের বালুভর্তি জিও বস্তায় ফাটল। কালের খবর শাহজাহান আবদালীর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি। কালের খবর নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আবাসন প্রকল্প নিচ্ছে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। কালের খবর মাটিরাঙ্গার অপরাধ আখড়া রাজধানীর অভিজাত এলাকায় ( QD’S ) সিসা লাউঞ্জের নামে চলছে ব্ল্যাকমেইলসহ মাদক বাণিজ্য। কালের খবর গ্যাস সরকারি, বিল যাচ্ছে দালালের পকেটে
কক্সবাজারে অপহরণকারী সেই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা দিলেন প্রতিবন্ধী যুবক। কালের খবর

কক্সবাজারে অপহরণকারী সেই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা দিলেন প্রতিবন্ধী যুবক। কালের খবর

 

কক্সবাজার প্রতিনিধি, নূরুল আবছার, কালের খবর :

কক্সবাজার উখিয়া উপজেলার কোটবাজারস্থ শফিকুর রহমান পুত্র ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল নামক এক যুবকের বিরুদ্ধে অপহরণ করে চার লাখ টাকা মুক্তিপণ নেওয়ার বিষয়ে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী বেলাল নামের এক যুবক।

গত ৭ মার্চ বৃহস্পতিবার রাতে সিএনজি যোগে দুই যুবক’কে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে গহীন পাহাড়ের পাদদেশে উপুর্যুপরি নির্যাতন চালায় ছাত্রলীগের নামধারী শীর্ষ সন্ত্রাস জামাল। পরিশেষে তাদের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে জীবন বাঁচায় প্রতিবন্ধী বেলাল ও আমিন। তবে প্রতিবন্ধী বেলালের ৪ লাখ টাকা নেয়ার পর ঘটনা আড়াল রাখতে মেরে ফেলার হুমকিও প্রদর্শন করেন।

জামাল উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক পদে থাকলেও নিজেকে রত্নাপালং ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে মাদকের চুরা চালান, ইয়াবা চিন্তায় ও মাদক কারবারের বিষয়েও গুঞ্জন উঠছে। বেপরোয়া এই ছাত্রলীগ নেতার দাপটে জিম্মি হয়ে পড়েছে নিরহ অসংখ্য মানুষ। তার নেতৃত্বে নানা ধরনের মাস্তানি, চাঁদাবাজী,টেক্সসহ বহু অপকর্ম চলে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে সরাসরি অনুসন্ধানী টিম তার দাম্ভিকতা দেখে ধারণা করতে পারে যে জামাল আসলেই একজন বেপরোয়া অপরাধী ছাত্রলীগ নেতা।

অনুসন্ধানে জানা যায় যে, রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের প্রতিবন্ধী বেলাল একজন স্থানীয় গরু ব্যবসায়ী। তার সাথে একই এলাকার আমিন নামের আরও একজন গরু ব্যবসা করতেন। কিন্তু দু’জনের একই ব্যবসার সুবাধে একটি দীর্ঘদিনের লেনদেন ছিল। ঐ লেনদেনের বিষয়ে আমিন দীর্ঘদিন পলাতক থাকলে সমাধান করতে ব্যর্থ ছিলেন বেলাল। পরিশেষে আমিনের অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারলে বেলাল ও তার ছোট ভাই মিলে দেখা করতে উখিয়ার কোটবাজারে যায়। তখন সময় ছিল ঠিক রাত আটটা। কিন্তু বেলাল এবং আমিন দূজনের মধ্যে চলছিল কথা কাটাকাটি। একপর্যায়ে বিষয় লক্ষ্য করে ফেলেন বাজারস্থ এলাকায় অবস্থান থাকা সন্ত্রাস জামাল বাহিনী ও তার পালিত গুন্ডা বাহিনীরা। ঐসময় প্রতিবন্ধী বেলাল ও আমিন দুইজনই সন্ত্রাস জামাল বাহিনীর লালসার শিকার হন। দুজনকে মিমাংসার কথা বলে সিএনজি যোগে তুলে নিয়ে যায় গহীন পাহাড়ে। নেওয়ার পর পুরো ঘটনা উল্টো। চলে অমানুষিক অমানবিক নির্যাতন। দাবি করেন চার লাখ। না হয় হত্যা করা হবে অস্ত্রের মুখে ভয়ভীতি প্রদর্শন। মাঝে মাঝে গুলির ফায়ার চালায় জামাল বাহিনীর প্রধান জামাল। ঘটনা চলতে চলতে ঠিক রাত আড়াইটা বেজা ৪০ মিনিট। প্রতিবন্ধী বেলালের ঘরে থাকা গরু বন্ধক রেখে চার লাখ টাকা মেনেজ করে দিয়ে অবশেষে। ঘটনা এখানেই শেষ না, রাতে ঘটনা ফ্লাস না করতেই নেওয়া হয় জোরপূর্বক স্টাম্পে সই। ঐসময় তাদেরকে নানা আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে নেন ছাত্রলীগের দায়িত্বরত উখিয়া উপজেলার যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল। তাদেরকে মাদক দিয়ে ফাঁসানো ও মাদক ব্যবসায়ীর তকমা লাগিয়ে ভিডিও ধারণ করে হাতিয়ে নেন চার লাখ টাকা। টাকা দিয়ে মুক্তি পেয়েই সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী যুবক বেলাল। চাই প্রশাসনের হস্তক্ষেপ।

এদিকে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাদী হয়ে প্রতিবন্ধী বেলাল ১৮ ই মার্চ (মঙ্গলবার) কক্সবাজার আদালত চত্বরে হাজির হয়ে উখিয়া ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঁচজনকে মূল আসামি ও অজ্ঞাত তিন থেকে চারজনকে বিবাদী করে ফৌজদারী মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে উখিয়া থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে রয়েছে, জামাল (৩৫), পিতা – শফিকুর রহমান, ইউনুস (৩০) পিতা- রশিদ আহমেদ, আনোয়ার (৩০), পিতা – অজ্ঞাত,আবদুল খালেক (৩৮) পিতা – আবদুল আল আমিন চৌং, আমিন (২৭) পিতা – হাবিব উল্লাহ সহ অজ্ঞাত আরোও তিন থেকে চারজন।

উল্লেখ্য গত ৭ মার্চ রাতে ব্যবসায়ীকে গহীন পাহাড়ে তুলে নিয়ে গিয়ে অমানুষিক নির্যাতন ও জিম্মি করে রেখে চার লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করেন উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল ও তার বাহিনীর সদস্যরা।

এর আগে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেন ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান বলেন, ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে কেউ অপকর্ম করলে তার অপকর্মের দায়ভার সংগঠন নিবেনা। অতএব তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি জড়িত প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথাও জানান।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com