বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০১ অপরাহ্ন
### মাদকের টাকায় ওমরা হজ্বে জসিম, ##৷ একাদিকের অধিক মামলার ওয়ারেন্ট থাকার পরেও প্রশাসনের কোন নজরদারি নেই।
নুরুল আবছার, কক্সবাজার, কালের খবর :
জায়গা সংক্রান্ত বিষয় প্রতিদিন কথা কাটাকাটি হয় ভাবীর সঙ্গে। দুই দেবর মিলেই আপন বড় ভাইয়ের বউকে প্রতিনিয়ত হুমকি ধমকি দিতে থাকতো। দুজনেই ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে। একজন বহনকারী অন্যজন মাদকের গড ফাদার। দুইজনেই বেপরোয়া হয়ে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদর বিরুদ্ধে কেউ মূখ খুলতে পারেন না। পুরো এলাকা জুড়ে তারা দুই ভাইয়ের আতঙ্কে দিন কাটে। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে নিরুপায় হয়ে পড়ছে আত্মীয় স্বজনরা সবাই। পাঠক এসব বলেছিলাম নুনিয়ার ছড়া ফিশারীঘাট এলাকার কুখ্যাত সন্ত্রাস ইয়াবা মাফিয়া জসিম ও কলিম উল্লাহ’র কথা। তারা স্বঃ পরিবার মিলেই ইয়াবা ব্যবসা করে এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। সম্পত্তি ভাগিয়ে নিতে দফায় দফায় হামলা চালানোসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। এবিষয়ে একাদিক অভিযোগসহ তাদের বিরুদ্ধে মাদকের মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। তবে ইতিমধ্যে এবিষয়ে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনার সুত্রপাত ধরে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে লোমুহর্ষক তথ্য উঠে এসেছে। তারা দুইজনেই মিলে প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। বেপরোয়া মাদকের টাকায় এখন তারা রামরাজত্ব কায়েম করে পুরো এলাকা জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এদিকে অনুসন্ধানে জানা যায় যে, গত ৬ ফেব্রুয়ারী আপন বড় ভাইয়ের বউ ছাইরা খাতুন বাড়িতে একা থাকা অবস্থায় জসিম ও কলিম উল্লাহর নেতৃত্বে একদল মহিলাসহ সন্ত্রাসী মিলে উপর্যুপরি হামলা চালায়। এইসময় সন্ত্রাসীদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র সশস্ত্র নিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে । এতে এলাকাবাসী কেউ উদ্ধার তৎপরতা চালাননি। একপর্যায়ে রক্তাক্ত অবস্থায় অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটে পড়ে। পরিশেষে নিজের সন্তান এবং স্বামী নজরুল এসে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে তৎক্ষনাৎ হাসপাতালে নিয়ে যায়। তার হাতের কনোইসহ শরীরের একাধিক জায়গা থেঁতলে দিয়েছে এবং একটি হাতের ভিতরের হাড্ডি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বর্তমানে নিরুপায় হয়ে দিনযাপন করেছে ছায়েরা খাতুন। পাশাপাশি তার স্বামী অর্থাৎ জসিম ও কলিম উল্লাহ’র ভাই নজরুল ইসলাম এখন হত্যা হওয়ার আশংকা প্রকাশ করেছেন। এবিষয়ে দু’ ভায়ের বিরুদ্ধে এলাকা বাসী একাধিক বর্ণনা দিয়েছে। তারা নানা জায়গায় মহিলাদের দিয়ে ইয়াবা ব্যবসা করিয়ে আসছে। তবে তারা এখনোও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আসছেনা।
এদিকে স্ত্রীর উপর হামলার ঘটনায় স্বামী নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে আপন দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং২২/৮৮/ মামলার ধারা ৪৪৭/৪৪৮/৪২৭/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৫৪/৩৭৯/৩৮০/ ৫০৬(২) পেনাল কোড ১৮৬০ মতে মামলাটি রুজু হয়। মামলায় আসামীদের মধ্যে রয়েছে, কলিম উল্লাহ, (৩৬) জসিম উদদীন (৪৩)রাফিয়া আক্তার (৩৮) ইয়াছমিন আক্তার নুরা (২৯) কিন্তু এর আগেও কলিম উল্লাহ ও জসিম উদ্দিন তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। এবিষয়ে স্বামী নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমি আমার ভাইদেরকে ছোটকাল থেকে নিজের মতো করে বড় করিয়েছি। তাদের জন্য কত সংগ্রাম করেছি মানুষ করতে। কিন্তু বড় হয়ে আমার সাথে তারা মোনাফেকি করবে তা কখনো কল্পনাও করতে পারিনি। এখন তারা ইয়াবা ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা হওয়াতেই এলাকায় অপরাধ করতে করতে এখন আমার পরিবারে উপরেও দফায় দফায় হামলা চালাচ্ছে। এতে পুরো পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছি। তারা কাউকে পাত্তাই দিচ্ছেনা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ একাধিক সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি তাদের বিরুদ্ধে অতীশিগ্রিই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার। তিনি আরও দাবি জানিয়ে বলেন, না হয় আমার পরিবার বাঁচান,না হয় মেরে ফেলুন।
এদিকে একই এলাকার একজন মাছ ব্যবসায়ী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, জসিম এবং কলিম উল্লাহ এখন ইয়াবা সম্রাট, তারা একসময় দিনে এনে দিনে খাইলেও এখন ইয়াবা ব্যবসা করে টাকা হয়ে নিজের ভাইয়ের সম্পত্তি ভাগিয়ে নিতে বারবার হামলা চালাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে যদি সাক্ষী দিয় তাহলে আমাদের জানমালেরও নিরাপত্তা নিয়ে অনিশ্চিত। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে তাহলে আরও বড় ধরনের আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটার আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
ঘটনার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী আয়েশা বেগম জানান, আমরা তাদের অত্যচারের জন্য এলাকায় থাকতে পারচিনা। তারা এতই বেপরোয়া যে, যা বললেই নিমিষেই মেরে ফেলার ভয় রয়েছে। তারা একজন ইয়াবা বহনকারী আরেকজন ইয়াবা গড ফাদার। তারা খুচরা থেকে পাইকারি সবই করে। প্রচুর টাকা হওয়ায় কাউকে পাত্তা দেয়না তারা। তারা প্রতিনিয়ত নিজের ভাইয়ের সম্পত্তির দিকে লোভ লালসায় ধাবিত হয়েছে। আপন বড় ভাইয়ের বউকেও দা, চুরি,লাটি, নিয়ে হামলা চালানোর সময় ভিডিও ধারনকালেও হেনস্তা সহ আমার উপরও হামলা চালানো হয়েছে। এতে তাদের পাশ্ববর্তী লোকজন পুরোপুরি তাদের আতঙ্কে দিন কাটছে।
ঘটনায় জড়িত একজন কলিম উল্লাহ বলেন,আমি কখনো কোন অপরাধের সাথে জড়িত ছিলামনা। আমাকে অহেতুক মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আমি মাদক ব্যবসা করিনা। আমি এমন জগন্য কাজ করতে পারিনা। এলাকায় আমার বিরুদ্ধে কেউ সাক্ষী দিবেনা। কারণ আমার একটি সুনাম রয়েছে। প্রয়োজন হলে আমার বিরুদ্ধে নিউজ করেন তাতে আমার কিছু আসে যায়না। এই বলে প্রতিবেদককে নিউজ করতে হবেনা বলে দেখা করার কথা বলে কল কেটে দেন।
কাউন্সিলর ইয়াসমিন আক্তার পাখী ঘঠনার সত্যতা জানার পর সাংবাদিকদের বলেন,এলাকায় জসিম ও কলিম এলাকায় এখন ত্রাস হিসেবে পরিচিত। তারা অসহায় একটি পরিবারের উপর উপর্যোপরি হামলা হামলা চালায়। এই ঘটনায় মামলা হলেও পুলিশ সবসময় মাদক ব্যবসায়ীর পক্ষে কাজ করার গুঞ্জন শুনা যাচ্ছে। ইতিমধ্যে একজন পলাতক হলেও অপরজন জামিন নিয়ে অসহায় পরিবারকে বারবার হামলা চালানোর খবর শোনা যাচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠিন পদক্ষেপ আশা করছি।
এইবিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সেলিম সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ কখনোও অপরাধীর পক্ষে অবস্থান করেনা। অপরাধী যেই হোক তাকে সর্বোচ্চ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ছায়েরা খাতুন একটি মামলা করেছে। মামলার সঠিক বিচার না হওয়া পর্যন্ত যদি ফের কোন ঘটনা ঘটায় তাহলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।