শনিবার (১৯ আগস্ট) সকাল সোয়া ৮টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক কাজী মহুয়া মমতাজের তত্ত্বাবধানে দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছে। এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ উপস্থিত ছিলেন।
পরে তা মসজিদের দোতলায় গণনার জন্য নেয়া হয়। প্রায় সাড়ে ১৩ ঘণ্টায় ২০০ জনে এ টাকা গণনার কাজ করেন।
টাকা গণনা শেষে শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ৯টার দিকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এটিএম ফরহাদ চৌধুরী সংবাদ মাধ্যম কে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দানবাক্সগুলো থেকে প্রথমে টাকা বের করে বস্তায় ভরা হয়। আটটি দানবাক্সে এবার ২৩ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। পরে মসজিদের দ্বিতীয় তলার মেঝেতে ঢেলে শুরু হয় গণনা। টাকা গণনার কাজে মসজিদ-মাদ্রাসার ১৩৮ শিক্ষার্থী, রূপালী ব্যাংকের ৬০ কর্মকর্তা-কর্মচারী সহ ২০০ জন অংশ নেয়। টাকা গননা করতে ১৩ ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে। গণনা শেষে পাওয়া গেছে মোট ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫ টাকা।
এছাড়াও পাওয়া গেছে বৈদেশিক মুদ্রা, স্বর্ণ ও রুপা। তখন অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ৩ মাসে এই পরিমাণ টাকা জমা পড়েছিল মসজিদের দানবাক্সগুলোতে। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা অসংখ্য মানুষ মসজিদে নিয়মিত হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন।
দানবাক্স খোলার পর থেকেই গণনা দেখতে মসজিদের আশপাশে ভিড় জমান উৎসুক মানুষ। গণনায় অংশ নেয়া হেফজখানা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আবদুর রহিম ও মো. সাজিদ হোসাইন বলেন, দানবাক্স খোলার পর থেকে গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত মাদ্রাসার সব শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান করেছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ৬ মে মসজিদের দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন ১৯ বস্তায় ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৬৮৯ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও হীরা পাওয়া গিয়েছিল। এদিকে কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মাত্র ১০ শতাংশ ভূমির ওপর এই মসজিদটি গড়ে উঠেছিল। সময়ের বিবর্তনে আজ এ মসজিদের পরিধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে এর খ্যাতি ও ঐতিহাসিক মূল্যও। মসজিদকে কেন্দ্র করে একটি অত্যাধুনিক ধর্মীয় কমপ্লেক্স এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রসারিত হয়েছে মূল মসজিদ ভবন। দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত মসজিদটিকে পাগলা মসজিদ ইসলামী কমপ্লেক্স নামকরণ করা হয়েছে। এ মসজিদের আয় দিয়ে কমপ্লেক্সের বিশাল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া মসজিদের আয় থেকে বিভিন্ন সেবামূলক খাতে অর্থ সাহায্য করা হয়।