মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৬ পূর্বাহ্ন
অনুমোদিত প্রকল্পের স্কীম কোড: ৩৮২৭৭-২২-১০০৭২ রোড কোর্ড: ৩৮২৭৭, অর্থ বছর: ২০২০-২০২১,
স্কীমের নাম: প্রাক্কালন মেরামত পঁাচটিকরী সরকারী স্কুল, কালুখালী, রাজবাড়ী এই মেরামত প্রকল্পের ১নং
খাতে শহীদ মিনার মেরামত বাবদ ৩৬,৯৫১ টাকা ২নং খাতে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে মাটি ভরাট সহ
স্কুলের বাউন্ডারীর ভিতরের উচু নিচু স্থান ভরাট করে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ৮৫,৫৪৮/-টাকা। ৩নং খাতে
চেয়ার টেবিল মেরামত বাবদ ২৫,০০০/- টাকা, ৪নং খাতে হাই-লো বেঞ্চ মেরামত বাবদ ৫২,৫০০/-
মোট দুই লাখ টাকা মেরামত বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে কোন শহীদ
মিনার নেই, বিদ্যালয়ের মাঠে কোন মাটি ভরাট করা হয়নি। চেয়ার টেবিল ও বাচ্চাদের বসার কোন হাই
লো বেঞ্চ মেরামত করা হয়নি। স্থানীয়রা জানান, বাচ্চাদের তিনটি ক্লাস রুমে হাই লো যে বেঞ্চ রয়েছে
সংখ্যায় খুবই সীমিত এবং বহু বছরের পুরানো লোহার ফ্রেমে, চেয়ার টেবিল, আগের কমিটির আমলে,
শহীদ মিনার তো নাই-ই। বিগত ২ বছরের স্লিপ ফান্ডের ১লাখ টাকা ও করোনাকালীন বরাদ্দে টাকারও
কোন হদিস নেই বলে সূত্রটি নিশ্চিত করেছে। প্রায় ৫বছর আগে নতুন ভবন নির্মাণ করার আগে হেলে
পড়া অরক্ষিত শহীদ মিনারটি ঠিকাদারের কাজের সময় পরে গেলে তা সরিয়ে কাজ করা হয়। তারা আরো
বলেন, শুনেছি বর্তমান কমিটির সভাপতি ফেরদৌস আহমেদ। তিনি স্থায়ীভাবে ঢাকায় বসবাস করেন।
তিনি তো কোনদিনই এলাকায় আসেন না। তার স্ত্রী সন্তানদেরকে আমরা কোন দিনই দেখি নাই। তিনি
এই ইউনিয়নের একজন ভোটার ও নন। তার কোন অস্তিত্ব নেই এলাকায়। জানিনা কিভাবে কি হচ্ছে?
একটা টিনের ছাপরা থেকে একতলা ভবন তার পর বিগত কমিটির সভাপতি এমপি সাহেবের সহযোগীতায়
এই দ্বিতল ভবন এবং মাঠ সংস্কার, গোলপোস্ট, শেখ রাসেল ক্রিড়া চক্র ভবন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
বিগত কমিটির সময় বিশাল প্যান্ডেল করে জেলা উপজেলার কর্মকর্তা ও স্থানীয়দের অংশগ্রহণে উৎসব
মুখর পরিবেশে ক্রীড়াপ্রতিযোগীতা, জাতীয় দিবস, জাতীয় শোক দিবস সহ সকল প্রকার অনুষ্ঠান হয়েছে।
রাজবাড়ী-২ আসনের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুল হাকিম ৪ বার এই স্কুলের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি
হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। বিগত কমিটির মিটিং হলে জানাযেত আজ স্কুলের অনুষ্ঠান আছে। সে সময়
বিদ্যালয়ের মাঠে ফুটবল, ভলিবল ও ক্রিকেট খেলা হত। এলাকার হাজার হাজার মানুষ এসব অনুষ্ঠান
উপভোগ করত। সব যেন হারিয়ে গেল এই বর্তমান কমিটির কারণে। বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট এলাকার
একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান এই কমিটি দায়িত্ব নেয়ার পর বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একজন
সুজন মাস্টার স্কুলেই আসেন না। নতুন বিয়ে করে ৩০ কিলোমিটার দূরে রাজবাড়ীতে বাসা ভাড়া করে
থাকেন। হেড মাস্টারের বাসাও রাজবাড়ী জেলা শহরে। এখানের মাষ্টাররাতো সবাই ৩০/৪০ কিলোমিটার
দূর থেকে পয়সা খরচ করে স্কুলে যাওয়া আসা করতে হয়, আর সে কারণে তারা স্কুলে অনুপস্থিত থাকেন।কোমলমতি শিশুরা ও অভিভাবকরা আজ অসহায়। বিগত ২ বছরের ১লাখ টাকা স্লিপ ফান্ডের ও
করোনাকালীন বরাদ্দের টাকাও গায়েব বলে সূত্র মতে জানাগেছে। তারপর বিদ্যালয়ের ২লক্ষ টাকা বর্তমান
কমিটি গায়েব করে দিয়েছে। কোন কাজই তারা করেন নাই। স্কুলে কোন অনুশাসন নেই। যেন একটা
রাজার রাজত্ব। এ বিষয়ে কমিটির সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এসব অর্থের খরচের
জন্য প্রধান শিক্ষক ইতি রানী সরকার ও শিক্ষক সুজন হোসেন কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। তারা কি করেছে
আমি জানিনা। শহীদ মিনার তো স্কুলেই নাই এ প্রশ্নের জবাবে সভাপতি বলেন, এটা আমার জানার বিষয়
না। তা হলে শহীদ মিনারটি সংস্কার হলো কিভাবে? উত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দেন। প্রধান শিক্ষক
বলেন সভাপতি ঢাকায় বসবাস করেন। তার কাছে ফোনে বললে তিনি বিরক্ত হন ও ফোন ধরেন না।
শহীদ মিনার নেই তা তো দৃশ্যমান। মাঠে মাটি দেয়া হবে, চাষ করা হয়েছে মাত্র। চেয়ার টেবিল নতুন
বানানো হয়েছে স্লিপ এর টাকায়। বাচ্চাদের বসার বেঞ্চ তো দেখতেই পাচ্ছেন। টাকা ব্যাংকে আছে
সভাপতির হিসাবে। সুজন মাস্টার কে সভাপতি দায়িত্ব দিয়েছিল এটা সত্য। তিনি রাজবাড়ীতে স্থায়ীভাবে
বসবাস করেন। ফলে স্কুলের প্রতি তার কোন আগ্রহ নেই। সুজন মাষ্টারের বাড়ী যদিও এই স্কুলের পাশের
গ্রামে। এখনতো আর থাকেন না তিনি। শিক্ষক ৪ জন। ৩ জন মহিলা ১জন পুরুষ। অন্য ২জনের একজন
মাঝবাড়ী, অন্যজন শিকজান এলাকার। কমিটির সদস্যরা সভাপতির সাথে পরিচিত নন। আমি ডেকে
ডেকে তাদের স্কুলে আনি। বিষয়গুলো উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সুজন মাষ্টার সম্পর্কে অপর
একজন বলেন তিনি বিদ্যালয়ে জয়েন্ট করার পর থেকে বছরের পর বছর তিনি প্রশিক্ষণ নিয়ে বেড়াচ্ছেন
বলে শুনেছি। গত অর্থ বছরে ৩০শে জুন ২০২১ তারিখের মধ্যে উক্ত ২লক্ষ টাকা কমিটির সভাপতি ব্যাংক
থেকে তুলে নিয়েছেন। চেক দিয়েছেন সুজন মাষ্টারের নামে। টাকা কোথায় গেলো আমরা এলাকাবাসী
জানতে চাই। স্লিপ ফান্ডের ২০ হাজার টাকা ডিজিটাল শিক্ষক হাজিরা মেশিন ক্রয়ের কথা থাকলেও এখনো
স্কুলে সেই মেশিন পৌছেনি।