শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৪ অপরাহ্ন
প্রান্তিক চাষীদের গমের টাকা বিতরণে অনিয়মের তথ্য চাইতে গেলে এক কর্মকর্তার কাছে হেনস্থার শিকার হয়েছেন সাংবাদিকরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে পঞ্চগড়ের রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনই হাট শাখার ব্যাংক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের নানাভাবে হেনস্থা ও হুমকি প্রদান করেছেন। এ ঘটনায় সাংবাদিকরা ওই কর্মকর্তার শাস্তি দাবি করে ব্যবস্থাপক বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ প্রতিদিন ও সংবাদভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল নিউজ ২৪ এর পঞ্চগড় প্রতিনিধি সরকার হায়দার, বাংলাভিশনের পঞ্চগড় প্রতিনিধি মোশারফ হোসেন, ভোরের দর্পন ও দীপ্ত টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি গোফরান বিপ্লব, আমাদের সময় ও ডেইলি অবজারভার প্রতিনিধি এস কে দোয়েল, সকালের সময়ের তেঁতুলিয়া প্রতিনিধি আতিকুজ্জামান শাকিল ওই ব্যাংকে দুর্নীতি ও অনিয়মের তথ্য চাইতে ম্যানেজারের ধীমান রায়ের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় ব্যাংক কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান ম্যানেজারের কক্ষে প্রবেশ করে ইংরেজীতে ‘হু আর ইউ’ বলে সম্বোধন শুরু করেন।
পরে তিনি নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র নেতা দাবি করে বলেন, ‘তথ্য চাওয়ার আপনারা কে? আপনারা তো কার্ড দেখিয়ে সাংবাদিকতা করেন। বেতন পান না। আপনারা এখানে প্রবেশ করার আগে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েছেন?’ এক পর্যায়ে তিনি উত্তেজিত হয়ে টেবিল থাপরিয়ে আশালীন ভাষায় কথা বলেন। তাকে ম্যানেজার বার বার থামাতে চাইলেও তিনি চিৎকার করতে থাকেন।
এ সময় সাংবাদিকরা বলেন, আমরা নির্দিষ্ট একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তথ্য চাইতে এসেছি। তথ্য না দিলে আমরা তথ্য ফরমে আবেদন করতে পারি। কিন্তু আমাদের সঙ্গে আপনারা বিরুপ ব্যবহার করতে পারেন না।
এ কথার প্রতি উত্তরে ওই কমকর্তা বলেন, ‘আপনারা তো ১৫ শ টাকাও বেতন পান না। অনেক সাংবাদিক গ্রাজুয়েটও করেনি। আামি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ বছর সাংবাদিকতা করেছি। আমাকে সাংবাদিকতা শেখাবেন না। এক পর্যায়ে তিনি আরও উত্তেজিত হয়ে উঠেন। পরে ব্যাংকের ম্যানেজার তাকে কক্ষ ত্যাগ করতে বললে তিনি কক্ষ ত্যাগ করে চলে যান।’
বাংলাভিশনের সাংবাদিক মোশারফ হোসেন বলেন, ‘ওই কর্মকর্তার আচরণে আমরা হতভম্ব। দীর্ঘ দিনের সাংবাদিকতার জীবনে এরকম আচরণ দেখিনি।’
ড্রাগ ফ্রি বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আতিকুজ্জামান শাকিল বলেন, ‘ওই কর্মকর্তার আচরন সন্দেহজনক। তার আচরণ সুস্থ মস্তিস্কের নয়।’
এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তেতুলিয়া জর্নালিষ্ট ক্লাবসহ সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বেশ কয়েকটি সংগঠন। তেতুলিয়া জর্নালিষ্ট ক্লাবের আহ্বায়ক আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক। আমরা ওই কর্মকর্তার দ্রত অপসারনসহ বিচার দাবি করছি।’
এ বিষয়ে কৃষি উন্নয়ন তেঁতুলিয়া শাখার ব্যবস্থাপক দিদারুল আলম বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি, এটার সত্যতা রয়েছে। তবে আমি ওখান থেকে আসার পর ঘটনাটি ঘটেছে। যা আমার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই।’
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক পঞ্চগড় জেলার প্রধান শাখার ব্যবস্থাপক শফিউল হক বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। আগামী রোববার এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থাপক নেওয়া হবে।