রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৫ অপরাহ্ন
মিরপুর প্রতিনিধি, কালের খবর :
নগরীর মিরপুর ১১ নম্বর সবুজ বাংলা আবাসিক এলাকায় মাদকসেবীদের উৎপাত বেড়েছে। ক্যাম্পের বখাটে ও আশপাশ এলাকার উঠতি বয়সের তরুণ-যুবকরা সবুজ বাংলার ৫/১নং লেনে (বরিশাইল্লা মোচড়) দল বেঁধে মাদক সেবন করে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাদকসেবীদের জটলা থাকে ওই স্থানে। স্থানীয় বাসিন্দরা এ নিয়ে প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, কেউ প্রতিবাদ করলে মাদকসেবীরা একত্রিত হয়ে হামলা চালায়। আবার তাদের বেশির ভাগই ক্যাম্পের বখাটে যুবক। তাই স্থানীয়রা দিনের পর দিন নীরবে তাদের উৎপাত সহ্য করে।
সরেজমিন মিরপুর ১১ নম্বর ৩নং ওয়ার্ডের সবুজ বাংলা আবাসিক এলাকায় দেখা যায়, ৫/১নং লেনের পাশে এভিনিউ ফাইভের ৫নং লেন। পাশাপাশি দুটি লেনের শেষ মাথায় খোলা ড্রেন রয়েছে। ড্রেনের জায়গাটি ঢালু ও নোংরা আবর্জনায় ভরা। নিরাপদ স্পট হিসেবে মাদকসেবীরা এ স্থানটিকে বেঁচে নিয়েছে।
তারা নিয়মিত বসে আড্ডা দেয়। চলাচলের রাস্তা সরু থাকায় কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে পারে না। পুলিশের গাড়ি মাঝে মাঝে অভিযানে এলেও স্পট পর্যন্ত ঢুকতে পারে না। এ সুযোগে মাদকসেবীরা সটকে পড়ে। ড্রেনের জায়গায় নিয়মিত মাদকসেবীদের জটলা থাকে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ৫৪ প্লট, তালতলা বস্তি, সবুজ বাংলাসংলগ্ন বস্তি ও এভিনিউ ফাইভের উঠতি বয়সের বখাটে যুবকরা এ স্থানে মাদক সেবন করে। আশপাশের বস্তি থেকে এ স্পটে মাদক বেচাকেনা হয়।
ড্রেনসংলগ্ন সিদ্দিক ও মোক্তারের বাড়ির ছাদে সন্ধ্যার পর তাদের উৎপাত বেড়ে যায়। মোক্তার ও সিদ্দিকের এক তলাবিশিষ্ট বাড়ির ছাদে বিশাল অংশ খালি থাকায় মাদকসেবীরা ওই স্থানে গভীর রাত পর্যন্ত মাদক সেবন করে। বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়ারা ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহস পায় না।
স্থানীয় বাসিন্দা মাসুম বলেন, কয়দিন আগে ৭-৮ জন মাদকসেবীকে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাতেনাতে আটক করে। তাদেরকে কান ধরে উঠ-বস ও মাথার চুল কেটে সতর্ক করে ছেড়ে দেয়া হয়। কিছুদিন পর আগের মতোই অবস্থা। স্থানীয় বাসিন্দা ও ড্রেনসংলগ্ন এক বাড়ির মালিক বলেন, পল্লবী থানায় কয়েকবার অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ এলেও তাদের ধরতে পারে না। পুলিশের গাড়ি দূরে দেখলেই তারা পালিয়ে যায়। তিনি বলেন, যদি পুলিশ ওৎপেতে থাকে তাহলে অনেক মাদকসেবী এখান থেকে আটক করতে পারবে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী জহিরুল ইসলাম মানিক বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েকবার সবুজ বাংলা থেকে মাদকসেবীদের হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। যাদের ধরেছি ওই সময় তাদের অনেককে মসজিদে নিয়ে কাউন্সিলিং করা হয়েছে। এর মধ্যে দু’জন পুরোপুরি ভালো হয়ে গেছে। বাড়ির মলিকদের বলেছি সাহসী হতে। কেউ ওই জায়গায় মাদক সেবন করলে থানায় যেন সঙ্গে সঙ্গে ফোন দেয়া হয়। পুলিশ এসে ধরে নিয়ে যাবে। আমি থানায় তা জানিয়েছি।
পল্লবী জোনের এসি এসএম শামীম বলেন, সবুজ বাংলায় মাদকসেবীদের আটক করতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। হয়তো পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে গেছে। ওতপেতে থেকে এদের আটক করতে হবে। এ জন্য নিয়মিত ফলোআপ করা হবে।