শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪২ পূর্বাহ্ন
এম আই ফারুক আহমেদ,কালের খবর :
সরকার নির্ধারিত ডিক্রিরচর ঘাঁটের ট্রলার ভাড়া নির্ধারিত ৩টাকা হলেও ৫টাকা করে আদায় করা হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে। শুধু তাই নয় একজন প্রবাসী এ ঘাট দিয়ে তার মালামাল নিয়ে পার হতে গেলেই গুনতে হয় ২শ টাকা। অনিয়মের শেষ নেই সদর উপজেলার ডিক্রিরচর গুদারাঘাটের। বাড়তি টোল আদায়, যাত্রীদের সাথে দূর্ব্যবহার ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে ঘাট পরিচালনার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অভিযোগ রয়েছে, ৮ লক্ষ টাকা দিয়ে ঘাঁট এনে ৩২ লক্ষ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।
এ কারনেই বাড়তি টোল আদায় করে পুষিয়ে নিতে চাইছে। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এই এলাকাটির জনগণ নিজেদের বঞ্চিত মনে করেন। কারণ হিসেবে তারা বলেন, একই আসনের এমপি বন্দর খেয়াঘাটের টোল ফ্রি করে দিলেও আলীরটেকের দিকে ফিরেও তাকান না।
যাত্রীদের অভিযোগ, রাত হলেই যাত্রী দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে। রাতে ঘাঁটে একদিকে ট্রলার কমিয়ে দেয়া হয়, অন্যদিকে যাত্রীদের জিম্মি করে ট্রলার ভাড়া ৩ টাকার পরিবর্তে ৫ টাকা আদায়ের মহোৎসবে মেতে উঠে পরিচালনায় থাকা জামাল বেপারী ওরফে কসাই জামাল। রাত ৯টার পরই বদলে যায় নিয়ম। জানা গেছে, সদর উপজেলা ঘাটের ইজারা এনেছেন আলীরটেক ইউনিয়ন ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার আওলাদ হোসেন। তিনি নিজে ঘাঁট পরিচালনা না করলেও জামাল বেপারীর কাছে এই ঘাটটি সাব ইজারা দিয়েছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়। আর জামাল বেপারী নিজ ইচ্ছামত আইন বানিয়ে যাত্রীদের পকেট কাটছেন। আর আওলাদ হোসেন স্থানীয় চেয়ারম্যান মতিউর রহমানের আস্থাভাজন হওয়া সত্তেও কেউ কোন অভিযোগ করতে পারে না।
ইজারাদার আওলাদ হোসেনের জানান, রাতে মানুষ কিছু কম হয় যার কারনে ৫টাকা করে নেওয়া হয়। কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আলীরটেক ইউনিয়নের ডিক্রিরচর, গোপচর, ক্রোক্রেরচর, কুঁড়েরপাড়, বক্তাবলী ইউনিয়নে মুক্তারকান্দি, বিসমিল্লা মার্কেট সহ আশেপাশের প্রায় ১০হাজার মানুষ প্রতিদিন এই ঘাঁট দিয়ে আসা-যাওয়া করেন। দিনের বেলায় ৩টাকা ভাড়া আদায় করলেও রাতে ভাড়া বেড়ে যায় দেড় গুন। কর্মব্যস্ত যাত্রীরা তাদের কর্মস্থল ছেড়ে বাড়ি ফিরতে গেলেই ৩ টাকার পরিবর্তে ভাড়া হয়ে যায় ৫টাকা। বাধা দিতে গেলে নানা হেনস্থা শিকার হতে হয় যাত্রীদের। স্থানীয়রা জানান, কোন প্রবাস ফেরত যাত্রী এ ঘাঁট দিয়ে পারাপার হলে তাদের গুনতে হয় ২শ’ থেকে ৪শ’ টাকা।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। জনি হোসেন নামে একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেন, কিছু দিন আগে আমার মামা বিদেশ থেকে এসেছে। তখন ঘাটে ২শ’ টাকা না দেয়ায় আমাদের ২ টা ব্যাগ আনতে দেয়নি ঘাটে বসে থাকা লোকজন।
আব্দুল আজিজ নামে এক ব্যাক্তি ফেসবুক পোষ্টে মন্তব্য করে জানান, ভাড়াতো বেশী নিবেই। কেননা ৮ লাখ টাকা দিয়ে ঘাট এনে ৩২ লাখ টাকায় বিক্রি করে। যার জন্য এই ঘাটে জনগণের হয়রানীর শিকার হওয়াটাই স্বাভাবিক।
এ বিষয়ে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায় করতে হবে। এর বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠলে আমরা ব্যবস্থা নিবো।