সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২৬ পূর্বাহ্ন
মনোহরদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি, কালের খবর : নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার প্রায় সবকয়টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে। ফরম পূরণের সময় অন্য কোন ফি আদায় করা যাবেনা সরকারী এমন নির্দেশনা থাকলেও তা অমান্য করে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ক্ষেত্রে তারা শিক্ষাবোর্ডের নিয়মনীতির কোন তোয়াক্কাই করছেনা। ফলে অতিরিক্ত ফি আদায় নিয়ে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবক মহলে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। হাইকোর্টের আদেশ, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ২০১৯ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য কেন্দ্র ও ব্যবহারিক ফিসহ মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ১৬৮০ টাকা টাকা, বিজ্ঞান শাখায় ১৮০০ টাকা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু বিদ্যালয়গুলো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে যে যার মতো হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। শিক্ষার্থী ও অভিভাববকদের তথ্যানুযায়ী, উপজেলার মনোহরদী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে দুই হাজার ৫শ, চন্দনবাড়ী এসএ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে দুই হাজার ৮শ, শুকুন্দী নাজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে তিন হাজার ৫শ, মাধুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে তিন হাজার, চালাকচর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে দুই হাজার ৬শ, চালাকচর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২ হাজার ৭শ, পাঁচকান্দী উচ্চ বিদ্যালয়ে দুই হাজার ৭শ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ফরম ফিলাপের নামে অর্থ আদায়ের কোন রশিদ দিচ্ছেনা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষকদের অতিরিক্ত এই টাকা আদায়ের ধরণে দেখে মনে হচ্ছে অসাধু শিক্ষকদের কাছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি যেন ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। মাধুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ফরম ফিলাপের নির্ধারিত ফি ছাড়া অতিরিক্ত আরো এক থেকে দেড় হাজার টাকা দিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এসএসসির ফরম পূরণ করছেন। তারা জানিয়েছেন, এই ফি শুধুমাত্র ফরম পূরণের জন্য। কোচিং বা অতিরিক্ত ক্লাসের জন্য আলাদা ফি দিতে হবে। গরীব ছাত্রছাত্রীরা অতিরিক্ত এ ফি দিতে হিমশিম খাচ্ছে। আবার অনেক অভিভাবক ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যত শিক্ষা জীবনের কথা চিন্তা করে ঋণ বা সুদে টাকা নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের চাহিদা মেটাচ্ছেন। এতে তাদের মধ্যে ক্ষোভ ও হাতাশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, পরের ক্ষেতে কামলা খেটে অথবা রিকশা চালিয়ে ছেলে মেয়েদের স্কুলে পাঠাই অথচ শিক্ষকরা টাকা ছাড়া কিছুই বুঝেনা। মাধুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম বকুল বলেন, ফরম ফিলাপের সময় শিক্ষার্থীরা টাকা কম দেয় বিধায় তিন হাজার ২শ টাকা বলা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আমরা আরো কম টাকা নেই। পাঁচকান্দী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হযরত আলী ফরম পূরণের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২ হাজার ৭শ টাকা আদায়ের কথা স্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তারিক হাসান বলেন, ফরম পূরণের সময় সরকার নির্ধারিত ফি ছাড়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় না করতে উপজেলার প্রত্যেক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে চিঠি দেয়া হয়েছে। তারপরও যদি কেউ অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। : :