সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০৭ পূর্বাহ্ন
কালের খবর প্রতিবেদক : মাদক কারবার করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন—এমন ব্যক্তিদের সম্পদ বাজেয়াপ্তসহ আইনগত ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তারা কাজ শুরু করেছেন। এরই অংশ হিসেবে
কক্সবাজার-৪ (টেকনাফ-উখিয়া) আসনের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির ভাই, ভাগ্নে, ভগ্নিপতিসহ তাঁর ১৩ স্বজনকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য নোটিশ জারি করা হয়েছে।
দুই বছর আগে বদির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা ও অভিযোগপত্র দেওয়ার পর দুদক এবার তাঁর স্বজনদের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করল।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, তাঁরা তিন শতাধিক মাদক কারবারির বিষয়ে অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছেন। দুদকের একজন মহাপরিচালক, ১০ জন পরিচালক ও উপপরিচালক, সহকারী পরিচালকসহ অর্ধশত কর্মকর্তা এ নিয়ে কাজ করছেন। দুদকের সমন্বিত বিভাগীয় জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ থেকে ৮১ জন মাদক কারবারির অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে মাঠে কাজ করছে।
দুদকের উপপরিচালক মাহাবুবুল আলম স্বাক্ষরিত সম্পদ বিবরণী নোটিশ পাঠানো হয়েছে কক্সবাজারের সংসদ সদস্য বদির ভাই মৌলভী মুজিবুর রহমান, মো. শফিক, মো. ফয়সাল, আব্দুল আমিন, আব্দুস শুক্কুর, ভগ্নিপতি সাবেক ওসি আব্দুর রহমান, ভাগ্নে শাহেদুর রহমান নিপু, চাচা টেকনাফ পৌরসভার মেয়র হাজি মোহাম্মদ ইসলাম, মামা মো. হায়দার আলী, মামাতো ভাই কামরুল আহসান রাসেলসহ ১৩ জনকে। বাকি তিনজনও বদির স্বজন বলে জানা গেলেও পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে দুদকে পাঠানো তালিকা ধরে এসব নোটিশ জারি করা হয়েছে বলে দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কক্সবাজারের পাশাপাশি সারা দেশের মাদক কারবারিদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে সংস্থাটি তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের কাজ করছে।
দুদক কর্মকর্তারা বলছেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে পাঠানো তালিকার প্রায় অর্ধেক মাদক কারবারিই খুচরা বিক্রেতা কিংবা বাহক।
তাদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য-প্রমাণাদি তেমন একটা মিলছে না। তবে তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে যাঁরা মাদক কারবার করে বিপুল অর্থের মালিক হয়েছেন, তাঁদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তাতে দেখা যায়, সংসদ সদস্য বদির আত্মীয়-স্বজনরাই সবচেয়ে বেশি সম্পদের মালিক। সে অনুযায়ী এমপি বদির ভাই-ভাগ্নে, চাচা-মামা, ভগ্নিপতিসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারি করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে আরো ১০ জনের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি হবে। কক্সবাজারের ৮১ মাদক কারবারির মধ্যে অর্ধেকই খুচররা বিক্রেতা এবং বাহক। অনুসন্ধানে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, মাদক সেবনকারীকেও ওই তালিকায় স্থান দেওয়া হয়েছে।
দুদকের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা কালের খবরকে বলেন, ‘কক্সবাজারের এমপি বদি ও তাঁর স্বজনরা মাদক কারবার করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। বিলাসবহুল বাড়ি-গাড়িসহ বিলাসী জীবন যাপন করছেন। এসব মাদক কারবারির বিরুদ্ধ অনুসন্ধান এবং তদন্তে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে। আশা করছি সেই সময়টা খুব দূরে নয়। ’
দুদকের উপপরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য কালের খবরকে বলেন, ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকা অনুযায়ী তিন শতাধিক মাদক কারবারির অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মাঠে কাজ করেছে দুদক। ১০ জনের বেশি পরিচালক, উপপরিচালকসহ অর্ধশত দুদক কর্মকর্তা এই মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে কাজ করেছেন। ’
দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন ।