রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১৭ পূর্বাহ্ন
কালের খবর ডেস্ক :
জামিআ রশিদিয়া মাদ্রাসার উদ্যোগে সুবর্ণ গ্রামে বর্ণাঢ্য
আয়োজনে শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষা সফর অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকালে মাদ্রাসার ক্যাম্পাস থেকে গাড়িতে চড়ে অভিভাবক, শিক্ষক, ছাত্রদের জিকিরে জিকিরে এক আনন্দ মুখোর পরিবেশে ছুটে চলে গাড়ি নারায়ণগঞ্জের সুর্বণ গ্রামে।
এ আনন্দ আয়োজনে ঐ মাদ্রাসার প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এমন আনন্দ আয়োজন প্রতি বছরই এই প্রতিষ্ঠানটি করে থাকে।
জামিআ রশিদিয়া মাদ্রাসার কর্ণধার ও মুহতামিম মুফতি মুহাম্মদ কিফায়তুল্লার নেতৃত্বে অত্র মাদ্রাসার সম্মানিত শিক্ষক মন্ডলিদের পরিচালনায় ছাত্ররা প্রফুল্লচিত্তে শিক্ষা সফরে আনন্দ উপভোগ করেন। সেই সাথে অভিভাবকরা ছিলেন চনমনে। অভিভাবকদের অভিমত জানতে চাইলে তারা বলেন, আমাদের সন্তানদের প্রতি শিক্ষকদের যে,আন্তরিকতা, মহানুভবতা ও দায়িত্বশীলতা সত্যিই প্রসংশনীয়। এ মাদ্রাসায় আমাদের সন্তানদের লেখা-পড়ার করার জন্য দিয়ে আমরা গর্বিত।
স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা সফর কেনো প্রয়োজন, এবিষয়ে জামিআ রশিদিয়া মাদ্রাসার ছাত্র সালমান যায়েদ ও মাহ্দী জারিফ এর বাবা বলেন, শিক্ষা সফর শিক্ষার এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা পুঁথির ক্ষুদ্র গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ; বইয়ের বিদ্যার বাইরেও আরো অনেক কিছু দেখার ও শেখার আছে। অর্থাৎ, বইয়ের জ্ঞানের পাশাপাশি বাস্তব জ্ঞানও দরকার।
তাই জামিআ রশিদিয়া মাদ্রাসার প্রতি বছরের শিক্ষা সফর ছাত্র-ছাত্রীদের বাস্তব জ্ঞান অর্জনে সহায়ক হবে নিশ্চিত।
তিনি আরো বলেন, বইয়ের শিক্ষার সঙ্গে বাস্তব শিক্ষার সম্পর্ক আছে। সে ক্ষেত্রে শিক্ষা সফরের কোনো বিকল্প নেই। শিক্ষার প্রতিটি ক্ষেত্রেই সফরের গুরুত্ব রয়েছে। শ্রেণিকক্ষের শিক্ষার পূর্ণতা আনার জন্যই শিক্ষা সফর। দেশভ্রমণের সঙ্গে এর কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। দেশভ্রমণের মূল উদ্দেশ্য আনন্দ। তার পাশাপাশি জ্ঞানার্জন; কিন্তু শিক্ষা সফরের মূল উদ্দেশ্য শিক্ষা গ্রহণ। পৃথিবীর বিচিত্র স্থানগুলো চাক্ষুষ অভিজ্ঞতার দ্বারা সম্পূর্ণ নতুনভাবে আমাদের সামনে উদ্ভাসিত হয়ে উঠে। বস্তুত শিক্ষা সফর না করলে অনেক শিক্ষাই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। ঘরের বাইরে জীবনের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার মাধ্যমে যে শিক্ষা লাভ হয়, তা হয় বাস্তবধর্মী। তাই বলা হয়, জ্ঞান লাভের উপায় হলো দুটি। একটি হলো বই পড়া, অন্যটি শিক্ষা সফর। প্রাচীনকালে যখন বই সহজ লভ্য ছিল না, তখন জ্ঞানপিপাসু মানুষ শিক্ষা সফরে বেরিয়ে পড়তেন। তাঁদের অভিজ্ঞতা আজ আমাদের জন্য অতীতকে জানার সূত্র হয়ে গেছে।
ঐতিহাসিকরা একের পর এক দেশ সফর করে মানবসভ্যতার ইতিহাস রচনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন। এ সফর বিশ্ব-ইতিহাস রচনায় যেমন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে, তেমনি বিশ্বসাহিত্যকেও সমৃদ্ধ করেছে। শিক্ষা সফরের উদ্দেশ্য হলো-বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা, বাইরের পরিবেশ থেকে বাস্তব জ্ঞান অর্জন করা। স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা-বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিষয়েই পাঠদান করা হয়। এসব বিষয়ের প্রায় প্রতিটিই আমাদের জীবন ও জীবনব্যবস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই পুঁথিগত বিদ্যার বাইরে সেসব বিষয়ের সঙ্গে চাক্ষুষ পরিচয়ের গুরুত্ব অস্বীকার করা যায় না। তাই শিক্ষার জন্যই শিক্ষা সফরের আবশ্যকতা অপরিহার্য্য। আর এই শিক্ষা সফরকে শিক্ষারই একটি অনিবার্য অঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। তবেই শিক্ষা বাস্তবধর্মী ও অধিক কার্যকরী হবে।
তবে জামিআ রশিদিয়া মাদ্রাসার প্রতি বছরের শিক্ষা সফর হোক শিক্ষার জন্য, জ্ঞান অর্জনের জন্য, এই প্রত্যাশাই করে প্রতিটি অভিভাবক।