সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:১৩ অপরাহ্ন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলাসহ সারাদেশে শিক্ষকদেরকে জোরপূর্বক পদত্যাগ করানোর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষকেরা। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নবীনগর প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি, নবীনগন শাখার উদ্যোগে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন শেষে নবীনগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
জানা গেছে, নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর আব্দুল জব্বার স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফেরদাউসুর রহমানকে গত ১ সেপ্টেম্বর এলাকার জাহাঙ্গীর আলম খানের নেতৃত্বে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। এ ঘটনার পরই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষকে পুনর্বহালের দাবিতে স্কুলের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে।
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নেতারা গত ৩ সেপ্টেম্বর ইউএনও তানভীর ফরহাদ শামীমের সঙ্গে দেখা করে এর তীব্র নিন্দা জানায় এবং বৃহস্পতিবার মানবন্ধনের ঘোষনা দেয়।
পূর্ব ঘোষিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন নবীনগর ইচ্ছাময়ী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাউছার বেগম। এতে উপজেলার বিভিন্ন স্কুলের বিক্ষুব্ধ শিক্ষকেরা অংশ নেন।
বেগম বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে গত ২৭ আগস্ট প্রজ্ঞাপন জারি করার পরারও শিক্ষকদেরকে জোরপূর্বক পদত্যাগ করানো বন্ধ হচ্ছেনা। অবিলম্বে বল প্রয়োগে পদত্যাগ বন্ধ না হলে, প্রয়োজনে কর্মবিরতি পালন করতে বাধ্য হবো।
এর আগে কৃষ্ণনগর স্কুল প্রাঙ্গণে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাদের প্রিন্সিপাল স্যারকে নিয়মবহির্ভূতভাবে জোরপূর্বক পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। আমরা স্যারকে দ্রুত স্বপদে বহাল দেখতে চাই।
এ বিষয়ে ফেরদাউসুর রহমান বলেন, এলাকার জাহাঙ্গীর আলম খানের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন বহিরাগত ওইদিন আমার কক্ষে ঢুকে আমাকে পদত্যাগের জন্য ধমকাচ্ছিলেন। এদের মারমুখী আচরণে আমি এক পর্যায়ে প্রাণ বাঁচাতে বাধ্য হয়ে সাদা কাগজে পদত্যাগপত্র লিখে দেই। বিষয়টি ইউএনও মহোদয়কে লিখিতভাবে জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে পদত্যাগে বাধ্য করানো নেতৃত্ব দেয়া জাহাঙ্গীর আলম খানের সঙ্গে একাধিকবার চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি।
নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তানভীর ফরহাদ শামীম বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে তাকে এই পদত্যাগ করানো হয়েছে বলে শুনেছি। তবে সরকারি পরিপত্র জারির পর জোরপূর্বকভাবে এ ধরণের পদত্যাগ মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।