সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৬ অপরাহ্ন
আবেদ হোসাইন, যশোর প্রতিনিধি, কালের খবর :
ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সাংস্কৃতিক উর্বর ভূমি ও দেশের প্রথম শত্রু মুক্ত এবং স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জনসভার জেলা যশোর। যশোর জেলা ভাষা আন্দোলন থেকে মহান স্বাধীনতার ঐতিহ্য-স্মৃতি বহন করছে স্বগৌরবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উজ্জীবিত রাখতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভিত্তিক নানা ভাস্কর্য ও ম্যুরাল দিয়ে সাজানো হয়েছে শহরের বিভিন্ন চত্বর, দেয়াল, স্কুল-কলেজের ক্যাম্পাসগুলো।
যশোর শহরের প্রাণ কেন্দ্র দড়াটানায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল। দাঁড়িয়ে থাকা এই ম্যুরালটি বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে উচ্চারিত হয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা।
পালবাড়ি মোড় এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে যশোরের সবচেয়ে বড় ভাস্কর্যটি। এই পথেই যৌথ বাহিনী যশোর শহরে প্রবেশ করেছিল হানাদার বাহিনীর পরাজয়ের পর। দৃষ্টিনন্দন বিজয় ৭১’ নামে ভাস্কর্যটি নির্মাণ করে যশোর এস এ সুলতান আর্ট কলেজের অধ্যক্ষ ভাস্কর খন্দকার বদরুল ইসলাম।
যশোর শহরের প্রবেশদ্বার পার হলেই মনিহার সিনেমা হলের ঠিক সামনেই যশোরের বিজয় স্তম্ভ । বঙ্গবন্ধু নিজ হাতে ১৯৭২ সালের ২৬ ডিসেম্বর এর ভিত্তি স্থাপন করেন।
যশোর শহরের পুরাতন কসবায় গেলে দেখা মিলবে জাগ্রত বাঙালি’নামের এই ভাস্কর্যটি।একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের। কাঁধে রাইফেল, আর স্বপরিবারে শান্তির পায়রা উড়িয়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে আছে স্বগৌরবে।
সরকারি মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয় কলেজে স্থাপিত হয়েছে ‘চেতনায় চিরঞ্জীব’। ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে কলেজ থেকে অংশ নেওয়া শিক্ষক, শিক্ষার্থীর যারা যুদ্ধে শহীদ হয় তাদের স্মৃতিতে নির্মাণ হয় এই ভাস্কর্যটি।
শহরের পাশেই টাউন হল ময়দান। ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর এই ময়দানে স্বাধীন বাংলার প্রথম জনসভায় উপস্থিত ছিলেন মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ। তিনি যে মঞ্চে ভাষণ দিয়েছিলেন সেই মঞ্চের নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্বাধীনতার উন্মুক্ত মঞ্চ’ ।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-ঐতিহ্য সর্ম্পকে জানতে চাইলে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার রাজেক আহমেদ জানান, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি উৎসাহী হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ও মোড়ে এই ভাস্কর্যগুলো স্থাপন করেন। যাতে আগামী প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে পারে ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে জীবন ধারণ করতে পারে।