বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
কক্সবাজারে স্পা’র আড়ালে অনৈতিক কর্মকাণ্ড। কালের খবর ডেমরায় পরিবহনে চাঁদা আদায়, গ্রেফতার ৩ চাঁদাবাজ। কালের খবর রেলের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান যাত্রী কল্যাণ সমিতি। কালের খবর দিনাজপুরে বাঁশ ফুলের চাল তৈরি করে বিস্ময় সৃষ্টি করেছেন সাঞ্জু রায়। কালের খবর প্রবীণ সাংবাদিক জিয়াউল হক জিয়া আর নেই। কালের খবর ছবি তোলার অপরাধে সাংবাদিক গ্রেফতার, অত:পর মুক্তি। কালের খবর মুরাদনগরে তীব্র গরমে একই বিদ্যালয়ের ৭ শিক্ষার্থী অসুস্থ। কালের খবর ফায়ার ও পরিবেশ ছাড়পত্র জানতে চাওয়াতে ম্যানেজার সাকিল, সাংবাদিকের সাথে অশুভ আচরণ। কালের খবর সাতক্ষীরার আলীপুরে বিএনপির বহিস্কৃত নেতা আব্দুর রউফ বিজয়ী। কালের খবর মুরাদনগরে বাস-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে ১জন নিহত। কালের খবর
মির্জাপুরে মেধাবী ছাত্র মনিরুলের মৃত্যুটি হত্যা না আত্মহত্যা ?। কালের খবর

মির্জাপুরে মেধাবী ছাত্র মনিরুলের মৃত্যুটি হত্যা না আত্মহত্যা ?। কালের খবর

কালের খবর  ডেস্ক৷ :

বংশাই রোডের কয়েত আলীর এই বাসাতে মারা গেছেন মনিরুল (বর্তমানে তালাবদ্ধ) এবং মেধাবী ছাত্র মনিরুল ইসলাম

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র মনিরুল ইসলামের (৩০) মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। এটি কি আত্মহত্যা না পরিকল্পিতভাবে হত্যা এ নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।

মনিরুলের পরিবারের দাবী তার স্ত্রী আইভি আক্তার ও তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

ঘটনার তিন দিন পরও পুলিশ হত্যার রহস্য উৎঘাটন করতে পারেনি। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বংশাই রোডের আসিফ ক্লিনিক সংলগ্ন মনিরুল ইসলামের শ্বশুর মো. কয়েত আলীর (৫৬) বাসায় গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

বৃহস্পতিবার মনিরুলের বড় ভাই ইব্রাহিম খলিল এবং মনিরুলের স্ত্রী আইভির সঙ্গে কথা বলে মনিরুলের মৃত্যু নিয়ে উভয়ের মধ্যে পরষ্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, মনিরুলের পিতার নামে মো. আনোয়ার গাজী। গ্রামের বাড়ি ষশোর জেরার মনিরুমপুর উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রামে। অপর দিকে মনিরুলের স্ত্রীর নাম আইভি আক্তার, পিতার নাম মো. কয়েত আলী।

গ্রামের বাড়ি ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার বাংগলা চৌহাট গ্রামে। ২০০৭ সালে মনিরুল ও আইভি আক্তার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে অনার্সে ভর্তি হন।

দীর্ঘ দিন একই বিভাগে পড়াশোনার এক পর্যাযে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরিবারের কাছে প্রেমের সম্পর্ক গোপন রেখে ২০০৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তারা বিয়ে করেন।

মনিরুলের পরিবাবার এক পর্যায়ে বিয়ে মেনে নিলেও আইভির পরিবার প্রথমে তা মেনে নেয়নি। ২০১২ সালে তারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে চাকরির সন্ধানে ছোটে বেড়াতে থাকেন।

পরে আত্বীয় স্বজনদের অনুরোধে অবশেষে ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি উভয়ের পরিবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে মেনে নেন। তাদের সংসারে মুসা ইসলাম (৫ বছর) এক পুত্র ও আরশি (৫ মাস) নামে এক কন্যা রয়েছে।

৩২তম বিসিএসে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে আইভির চাকরি হয়। যোগদান করেন টাঙ্গাইলের সরকারী সাদত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে। মনিরুলও কয়েকবার বিসিএস পরীক্ষা দিয়েছে। কিন্ত সফল হতে পারেনি।

তার ইচ্ছে ছিল স্ত্রীর চেয়ে আরও বড় কিছু হওয়ার। একের পর এক চেষ্টা করেছেন ভাল একটি চাকরির জন্য। তারপরও তিনি হাল ছাড়েনি বলে পরিবারের লোকজন জানায়।

এদিকে স্ত্রী শিক্ষকতা করলেও মনিরুল ভাল মানের কোন চাকরি না পাওয়ায় স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে নানাভাবে হেয় করে আসছিল বলে তার পরিবারের লোকজন অভিযোগ করেন।

মনিরুলের বড় ভাই ইব্রাহিম খলিল অভিযোগ করেন, স্ত্রী আইভি, শ্বশুর-শ্বাশুরি এবং আইভির ভাই সাহেদ ও হাসান তাকে মানসিকভাবে চাপ ও নির্যাতন করে আসছিল।

ঘটনার দিন সকালে মনিরুল তার মাকে ফোন করে বলেছিলেন মা তুমি অপেক্ষা করো-আমি মুসাকে নিয়ে (পুত্রকে) বাড়ি আসছি। এরপর আর কোন কথা হয়নি।

সকালে স্ত্রী, শ্বশুর ও শ্বাশুরিসহ পরিবারের লোকজনের সঙ্গে মনিরুলের কথাকাটি হয়। তারপরই মনিরুলের লাশ কক্ষের একটি ভিতর পাওয়া যায়।

আইভির পরিবার প্রথমে ফোন করে ইব্রাহিমকে জানায়, আপনারা তারাতারি চলে আসেন, মনিরুল দুর্ঘটনায় মারা গেছে। কিভাবে মারা গেছে তারা তা জানাননি বলে অভিযোগ করেন।

পরে জানতে পারেন বাসার একটি কক্ষে তার ঝুলন্ত লাশ রয়েছে। মনিরুলের মৃত্যু নিয়ে তাদের নানা সন্দেহ হয়। মনিরুলের ভাই ইব্রাহিম ও পতার পরিবার অভিযোগ করেন, মনিরুল একজন সৎ দক্ষ ও মেধাবী ছাত্র ছিল।

তার কোন অভিমান ছিল না। মনিরুলকে পরিকল্পিতভাবে মারা হয়েছে। তারা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে মনিরুলের স্ত্রী আইভি আক্তার ও শ্বশুর মো. কয়েত আলীর বাসায় বিস্তারিত জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে বাসায় তালা ঝুঁলতে দেখা গেছে।

মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে আইভি আক্তার ও তার বাবা মো. কয়েত আলী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মনিরুল কেন ও কি ভাবে আত্মহত্যা করেছে তারা কেউ সঠিকভাবে কিছু বলতে পারছেন না।

তাদের ধারনা অভিমান করেই মনিরুল নিজেই ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মির্জাপুর থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক মো. আসাদ মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ ময়না তদন্ত করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com