বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি, কালের খবর
দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে একাত্তরের রণাঙ্গনে যিনি ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, ছিনিয়ে এনেছিলেন স্বাধীনতা, আজ বৃদ্ধ বয়সে তাঁর ঠাঁই হয়েছে হাঁস-মোরগের ঘরে। কষ্টের জীবন যাপন করছেন তিনি।
কেউ খবর রাখছে না তাঁর!
তিনি হলেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার সদর ইউনিয়নের তাতিকোনা গ্রামের ইছব আলীর (মৃত) ছেলে মুক্তিযোদ্ধা তালেব আলী।
জানা গেছে, তালেব আলীর জন্ম ১৯৩২ সালের ১২ মে তাতিকোনা গ্রামে। ১৯৭১ সালে মীর শওকত আলীর নেতৃত্বাধীন ৫ নম্বর সেক্টরের ভোলাগঞ্জ থেকে ছাতক পর্যন্ত অঞ্চলে যুদ্ধ করে দেশকে হানাদারমুক্ত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন সাহসী সন্তান তালেব আলী। তাঁর মুক্তিবার্তা নম্বর ০৫০১০৯০০৩২, গেজেট নম্বর ১৪৬৩। স্ত্রী-সন্তানহীন তালেব আলী বর্তমানে বড় ভাই তৈয়ব আলীর পরিবারের সঙ্গে বাস করছেন।
তাতিকোনা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, তৈয়ব আলীর পাকা বসতঘরের একটি নোংরা ও দুর্গন্ধময় কক্ষে ময়লা বিছানায় শুয়ে আছেন তালেব আলী। কক্ষটি হাঁস-মোরগের বাসস্থান হিসেবে ব্যবহার হয়। সালাম দিতেই বহু কষ্টে উঠে বসলেন। জাতির এই সূর্যসন্তান বললেন, ‘আগে বাড়ির পূর্ব দিকের একটি ঘরে বসবাস করতাম।
একবার ডাকাতের কবলে পড়ে ভয়ে বড় ভাইয়ের বসতঘরে চলে আসি। আর কোনো কক্ষ খালি না থাকায় আমিই স্বেচ্ছায় এই ঘরটি বেছে নিই। নিজের একটি ঘরের জন্য অনেকের কাছে ছুটে গিয়েছি। কোনো সাড়া পাইনি। আমার নিজস্ব জায়গা আছে। সরকার যদি সেখানে একটি ঘর নির্মাণ করে দিত, তাহলে শেষ বয়সে অন্তত নিজের ঘরে বাস করতে পারতাম। ’
তৈয়ব আলী বলেন, ‘সে (তালেব আলী) জোর করেই ওই ঘরে থাকছে। তবে আমরা তাকে ঠিকমতোই দেখাশোনা করছি। ’
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ওয়াহিদ আলী বলেন, ‘বড় ভাইয়ের পাকা বসতঘরে তো তালেব আলীর জায়গা পাওয়ার অধিকার আছে। একটি ভালো কক্ষে অথবা যে কক্ষে বর্তমানে আছেন, সেটাকে বাস উপযোগী করে তাঁকে ভালোভাবে জীবন যাপন করতে দেওয়া তাঁর পরিবারের দায়িত্ব। সরকারেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। ’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিতাভ পরাগ তালুকদার বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা তালেব আলীর বাড়ি পরিদর্শন করে এ বিষয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
অফিস : ৪৪-ক, অতিশ দীপঙ্কর রোড, মুগদা, ঢাকা । সম্পাদকীয় কার্যালয় : আরএস ভবন, ১২০/এ মতিঝিল, ঢাকা
মোবাইল : ০১৭৫৩-৫২৬৩৩৩ ই-মেইল : dainikkalerkhobor5@gmail.com
কারিগরি সহযোগিতায় ফ্লাস টেকনোলজি