নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের খবর :
'স্কুলের উদ্দেশ্যে রাস্তায় বের হলে বাস ড্রাইভাররা আমাদের চাপা দিয়ে মারে। এর বিচার চাইতে গেলে আমাদের পিটিয়ে মারে পুলিশ।
তারপরেও আমরা রাস্তায় নামব। আমরা এর বিচার চাই। '
রাজধানীর ইসিবি চত্ত্বর এলাকায় কয়েকজন স্কুল শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হচ্ছিল। তাদেরই একজন খুব গুছিয়ে বলছিল ওপরের কথাগুলো। ছবি তুলতে চাইলে ওরা নিষেধ করে। বলে, মঙ্গলবার শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনায় অভিভাবকেরা সন্তানদের রাস্তায় পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন।
গতকাল মঙ্গলবার এই স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ওপর হামলে পড়েছিল পুলিশ। পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে বেশ কয়েকজন ছেলে-মেয়েকে। কলার চেপে ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেছে।
ওরা সন্ত্রাসী নয়; চাঁদাবাজ নয়; জঙ্গি নয়; কোনো রাজনৈতিক সমাবেশ করছে না- তারপরেও সেই পরিচিত পুলিশী আচরণ! ওইটুকু বাচ্চাদেরকে লাঠি দিয়ে গায়ের জোরে পেটানোর ঘটনায় দেশজুড়ে ক্ষোভের উদগীরণ হচ্ছে। ছেলেমেয়েগুলো দমে যায়নি; ভয় পায়নি আবারও রাস্তায় নামছে।
একাদশ শ্রেণিতে পড়া লিকলিকে চেহারার একটি কিশোরী বলছিল, 'গতকাল লাঠির বাড়ি খেয়েছি। আজও মারুক; কিন্তু আমরা বিচার চাই। ' অবাক হয়ে তাকিয়েছিলামে মেয়েটির দিকে। এত ছোট ওরা, তবুও কত সাহস! ওই ছোট কাঁধে কত বড় ভার নিয়েছে তারা! দেশের সড়ককে নিরাপদ করার ভার। বন্ধু হত্যার বিচার দাবির ভার!
এই দস্যি কিশোরদের নিয়েই আমরা স্বপ্নে দেখতে পারি। আজ ওরা বন্ধু হত্যার দাবিতে দলে দলে পথে নেমেছে, আগামীকাল পথে নামবে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে; ধর্ষণের বিরুদ্ধে; ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে। ওদের ছোট্ট বুকে লুকিয়ে থাকা হিমালয়সম দুঃসাহস এই নষ্ট হয়ে যাওয়া দেশকে আবারও সুন্দর করে তুলবে।
রাস্তায় পায়ে হেঁটে অফিস কিংবা গন্তব্যে চলা শত শত মানুষ ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। কারও মুখে বিরক্তি নেই; সবাই চায় সন্তানরা যেন নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারে।
অফিস : ৪৪-ক, অতিশ দীপঙ্কর রোড, মুগদা, ঢাকা । সম্পাদকীয় কার্যালয় : আরএস ভবন, ১২০/এ মতিঝিল, ঢাকা
মোবাইল : ০১৭৫৩-৫২৬৩৩৩ ই-মেইল : dainikkalerkhobor5@gmail.com
কারিগরি সহযোগিতায় ফ্লাস টেকনোলজি