মোঃ মুন্না হুসাইন তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি, কালের খবর : দেশের আম উৎপাদনে শীর্ষে থাকা সব উপজেলার মধ্যে তাড়াশ চলন বিল একটি সব ধরনের অধ্যায় সম্প্রতি প্রচণ্ড তাপদাহ ও খরার কারণে পানি শূন্যতায় ব্যাপক হারে মাটিতে ঝরে পড়ছে কৃষকের স্বপ্নের আমের গুটি। তীব্র খরা আর টানা বৃষ্টিহীনতায় শুকিয়ে গেছে পুকুর খাল ও ডোবাগুলো।
সারাদেশের ন্যায় এই উপজেলায় স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। তাপদাহে সাধারণ খেটে খাওয়া নিম্ন্নআয়ের মানুষদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
এলাকার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে পূরনো পুকুর খাল ও ডোবাগুলো দীর্ঘদিন খনন ও সংস্কারের অভাবে পানির ধারণ ক্ষমতা কম হওয়ায় প্রচণ্ড রোদ ও গরমের কারণে আগে থেকেই সেচের কারণে পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় অধিকাংশ বাগানে গাছের গোড়ায় পানি সেচ ব্যবস্থা না থাকায় ঝরে পড়েছে গাছের আম।
উপজেলা বিভিন্ন এলাকার বাগান ঘুরে দেখা গেছে, তুলনামূলকভাবে এবার আম গাছে কম এসেছে। চলতি মৌসুমে শীতের তীব্রতায় মুকুল দেরিতে আসা এবং কিছু এলাকায় অসময়ে বজ্র বৃষ্টি হওয়ায় আমের মুকুল ও গুটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসব প্রতিকূলতা থেকে বাঁচতে আম চাষিরা বিশেষভাবে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে পানি সেচ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। তবে সূর্যের তাপের আধিক্য বেশি হওয়ায় আম ঝরে পড়া রোধ করতে না পারায় হতাশা ও শঙ্কায় দিন পার করছেন আম বাগান মালিকরা।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যানুযায়ী, এবার তাড়াশ উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমের চাষ হচ্ছে। গত কিছুদিন ধরে প্রচণ্ড রোদ ও খরার কারণে গাছের আম ঝরে পড়া থেকে রক্ষার জন্য বাগানীদের প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শের পাশাপাশি গাছের গোড়ায় পানি সেচ দিতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে বিভিন্ন জায়গায় পানির সুব্যবস্থা না থাকায় আমের ফলনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই বৃষ্টি হলে অনেকাংশে ক্ষতি কম হবে।
উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের আম চাষি মোখলেছুর রহমান বলেন, গতবছরের থেকে এবার আমের মুকুল অনেক কম। তারপরও মোটামুটি আমের গুটি ভালো এসেছে কিন্তু প্রচণ্ড খরার কারণে আমের গুটিগুলো এখন ঝরে পড়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে বাগানে এবার অনেক টাকা লোকসানের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
তাড়াশ সদর ইউনিয়ন তাড়াশ গ্রামের আমচাষী তাইবুর হক জানান, মুকুল আসার পূর্বে বাগান পরিচর্যা করাই মোটামুটি ভালো মুকুল এসেছিল। পরবর্তী সময়ে আমের গুটিও ভালোই ছিল কিন্তু বর্তমানে খরায় গুটি ঝরে পড়ছে ।
এলাকার অনেক আম বাগানীরা জানান, প্রচণ্ড রোদের কারণে গাছের গোড়ায় পানি ও ওষুধ স্প্রে করে গাছের আম রক্ষার চেষ্টা করেও গাছে আম আটকাতে পারছেন না। তাছাড়া সেচের জন্য প্রয়োজনীয় পানির ব্যবস্থা না থাকায় বাগানে সেচ দেওয়া যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মামুনুর রশিদ জানান, তীব্র তাপদাহের কবল থেকে রক্ষা পেতে আম চাষিদের আম গাছের গোড়ায় বেশি করে পানি দিতে নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রোদের তীব্রতা বাড়ার আগেই ছত্রাকনাশক ও বোরর স্প্রে করতে বলা হচ্ছে।
নওগাঁ বাজার আমচাষী বলেন, বর্তমানে কিছু কিছু এলাকায় বাগানে সেচ ব্যবস্থা থাকায় সেচ দেয়া হচ্ছে যার ফলে আমের ফলন ভালো হয়েছে। তাপমাত্রা অনেক বেশি হওয়ায় এই মুহূর্তে গাছের গোড়ায় পানি সেচ এর বিকল্প নেই ।
আশা করছি আল্লাহর রহমতে বৃষ্টি হলেই তাপমাত্রা অনেক কমবে, গুটি ঝরা বন্ধ হবে এবং বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আমের বাম্পার ফলন আশা করা যায়।
অফিস : ৪৪-ক, অতিশ দীপঙ্কর রোড, মুগদা, ঢাকা । সম্পাদকীয় কার্যালয় : আরএস ভবন, ১২০/এ মতিঝিল, ঢাকা
মোবাইল : ০১৭৫৩-৫২৬৩৩৩ ই-মেইল : dainikkalerkhobor5@gmail.com
কারিগরি সহযোগিতায় ফ্লাস টেকনোলজি